নৌপুলিশের অভিযান : ৩৫ লাখ মিটার জাল জব্দ

আগের সংবাদ

পঞ্চম দফায়ও সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা > ভোটে ঝরল আরো ১১ প্রাণ : পুলিশের গাড়িতে আগুন, আহত শতাধিক, আটক অর্ধশত

পরের সংবাদ

মিঠুনের ডাবল সেঞ্চুরিতে শক্ত অবস্থানে মধ্যাঞ্চল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিসিএলের ফাইনালে ইনিংস সূচনা করতে নেমে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের হয়ে মাইলফলকে পা রাখেন ডান-হাতি এ ব্যাটার। ১৫ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এর আগে ১৩ শতক আছে, ১৫০ পেরিয়েছিলেন দুবার। তবে মোহাম্মদ মিঠুনের সর্বোচ্চ ছিল ১৮৬ রান। বিসিএলের এ মৌসুমেই ছিল ১৭৬ রানের ইনিংসও। অবশেষে গতকাল প্রথম দ্বিশতকটা পেয়ে গেলেন এই ডান-হাতি ব্যাটার। বিসিএল ফাইনালে গতকাল দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে ২০৬ রান করেন মধ্যাঞ্চলের মিঠুন। শতক পেয়েছেন শুভাগত হোমও। দ্বিতীয় দিনে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমেছিলেন, তবে ১৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল মধ্যাঞ্চল। মিঠুন প্রতি আক্রমণ শুরু করেছিলেন এর পরপরই। অধিনায়ক শুভাগত হোম দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। দ্বিতীয় দিনেই দারুণ এক শতক পেয়ে যান মিঠুন, দিন শেষে অপরাজিত থাকেন ১০২ রানে। বিসিএলের এ মৌসুমেই ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেন মিঠুন। গতকাল মিঠুন এবং শুভাগত হোমের ব্যাটিং দৃঢ়তায় মধ্যাঞ্চলের ইনিংস ৪৩৮ রানে থামে। এর আগে দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংসে ৩৮৭ রান সংগ্রহ করে। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণাঞ্চল। তৃতীয় দিন শেষে এখনো ৮ রানে পিছিয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চল।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিএল ফাইনালের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান করে দক্ষিণাঞ্চল। ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংসে লিড পায় ৫১ রানে। দক্ষিণাঞ্চলের দুই ব্যাটার অমিত হাসান ২০ ও ২২ রানে পিনাক ঘোষ ক্রিজে আছেন। ওপেনার এনামুল হক বিজয়কে শূন্য রানে ফিরিয়েছেন হাসান মুরাদ।
হাতে এখনো দুই দিন বাকি। দক্ষিণাঞ্চলকে যত কম রানে আটকে দেয়া যাবে, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ তত বাড়বে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের। আর যদি ড্র হয় তাহলে ট্রফি ভাগাভাগি হবে।
এর আগে ৬৭ রানে দিন শুরু করে সেঞ্চুরি তুলে নেন শুভাগত, আর মিঠুন ১০২ রান নিয়ে দিন শুরু করে পেরিয়ে যান দুইশর ঘর। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশি দূর এগোতে পারেননি শুভাগত। ২১৯ বলে ১১৬ রান করে ফেরেন সাজঘরে। সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন তিনি ১৮৬ বলে ১৬টি চারে। এটি চলতি বিসিএলে শুভাগতের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। প্রথম সেশনের শেষ দিকে তিনি ফিরলেও মিঠুন ছিলেন অবিচল। ১৬ রানে চার উইকেট হারানোর পর তাদের ২৮৩ রানের জুটি ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে ম্যাচে ফেরায়।
মধ্যাহ্নবিরতির পর এসে মিঠুন ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ওপেনিংয়ে নেমে ২৮৭ বলে ২৭ চার ও তিনটি ছক্কায় এই কীর্তি গড়েন তিনি। এর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মিঠুনের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৮৬। চলতি বিসিএলের প্রথম ম্যাচেই ১৭৬ রান করেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত মিঠুন আউট হয়েছেন ৩০৬ বলে ২০৬ রান করে। বিসিএলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকায় তিনি আবার ডাক পেতে পারেন জাতীয় দলে। গতকাল এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন, ‘মিঠুন ক্যারিয়ার শুরু করেছে ওপেনার হিসেবে। পরে একটা লম্বা সময় ধরে মাঝখানে ব্যাটিং করেছে। ও আবার ওপেনিংয়ে ফিরে এসেছে। আমার মনে হয় এটা ওকে সাহায্য করছে, ও পরবর্তীতে যখন জাতীয় দলে… যদি ডাক পায় তখন ওপেনিং করবে নাকি মাঝে ব্যাটিং করবে সেটা তো আমাদের চিন্তা-ভাবনায় আছে। কিন্তু এখন দুটি রাস্তা খোলা আছে- হয় মিডল অর্ডার নয়তো ওপেনিং। সে এখন খুব ভালো ব্যাটিং করছে। আমাদের একটা জায়গা খুলে দিয়েছে, যেখানে আমরা ওকে যে কোনো পজিশনে খেলাতে পারব।
শুভাগত-মিঠুন ফিরলেও দক্ষিণাঞ্চলের ৩৮৭ রান টপকে লিড পেতে সমস্যা হয়নি। জাকের আলী অনিক (৫৩) ও রবিউল হকের (৩৪) ব্যাটে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৪৩৮ রানে থামে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। দক্ষিণের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট করে নেন ফরহাদ রেজা ও কামরুল ইসলাম রাব্বি।
এবার বিসিএলের প্রথম ম্যাচেই ১৭৬ রান করেছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন।
২০৯ বলে গতকাল নাসুম আহমেদকে চার মেরে দেড়শ পূর্ণ করেন মিঠুন। ততক্ষণে শতক হয়ে গেছে শুভাগতরও। তিন অঙ্কে যেতে তার সময় লেগেছে ১৮৬ বল। দুজনের ২৮৩ রানের জুটি ভেঙেছেন মেহেদী হাসান। তার বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে শুভাগত ১১৬ রান করেছেন ২১৯ বলে, মেরেছেন ১২টি চার। শুভাগত-মিঠুনের জুটি এ মৌসুমে বিসিএলে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ।
শুভাগত ফিরলেও মিঠুন থামেননি দ্রুতই। জাকের আলীকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তিনি যোগ করেন আরো ৭৫ রান। মেহেদী হাসানকে চার মেরে ১৯০ পেরিয়েছেন, মেহেদী হাসান রানাকে আরেকটি চার মেরে গেছেন ১৯৬-এ। সেই মেহেদীর বলেই সিঙ্গেল নিয়ে ২০০ পূর্ণ করেছেন তিনি, ২৮৭ বল খেলে।
জাকের আলীকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মিঠুন যোগ করেন আরও ৭৫ রান। অবশ্য দ্বিশতকের পরপরই থামতে হয়েছে মিঠুনকে। রিশাদ হোসেনের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ২০৬ রানের ইনিংসে ২৭টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৩টি ছয়। জাকের আলী এরপর ফিরেছেন ৫৩ রান করে। মিঠুন ও শুভাগত হোম পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২৮৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেন। মাত্র ১৬ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর তারা দলকে নিয়ে গেছেন ২৯৯ রান পর্যন্ত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়