নজরুল ইসলাম খান : খালেদা জিয়ার কিছু হলে রেহাই পাবেন না

আগের সংবাদ

নতুন বছরে সরকারের ১০ চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

বাঘায় এসএসসি পরীক্ষায় তিন ভাইবোনের চমক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি : নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল একই পরিবারের যমজ দুই ভাই আর এক বোন। পণ ছিল, যে করেই হোক এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করার। অভাব-অনটনের সংসারে সব বাধা পেরিয়ে সফলতাও পেয়েছে তারা। সবাইকে তাক লাগিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে যমজ ভাইয়ের একজন গোলাম রাব্বানী রাজন (বড়) আরেক ভাই গোলাম সাকলায়েন সাজন (ছোট)। বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে যমজ দুই ভাই। জিপিএ ৫ এর ভাগ্যের দুয়ার থেকে ফিরে গেছে বয়সে তাদের ১ বছরের বড় বোন উম্মে কুলসুম সিনথিয়া। মনিগ্রাম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল উম্মে কুলসুম সিনথিয়া। সে পেয়েছে ৪ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট। গোলাম রাব্বানী রাজন ও গোলাম সাকলায়েন সাজনের মামা হুমায়ন কবীর জানান, যমজ দুই ভাই পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর থেকেই বাড়িতে টিউশনি করে তাদের ও তার বোনের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছে। পাঁচ সদস্যের সংসার চলত দিনমজুর বাবার উপার্জনের টাকা দিয়ে। এর মধ্যে দুবার স্টোক করে তাদের বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। উপায়ান্তর না পেয়ে পার্ট টাইম আমার ফার্নিচারের দোকানে কাজে লাগিয়ে দেই। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালাত আর বাড়িতে টিউশনি করে তিন ভাইবোনের লেখাপড়া খরচ জোগাত। বাড়তি প্রয়োজনে আমি ও আমার বাবা আবু রায়হান (গোলাম রাব্বানী রাজন ও গোলাম সাকলায়েন সাজনের নানা) দেখভাল করি। গোলাম রাব্বানী রাজন ও গোলাম সাকলায়েন সাজন জানায়, তাদের স্বপ্ন বিসিএস ক্যাডারে ইনকাম ট্যাক্স অফিসার হওয়ার। তাদের বোন উম্মে কুলসুম সিনথিয়া জানায়, যদি কোনো বাধা না আসে তাহলে স্বপ্ন পূরণে এইচএসসিতে ভালো ফলাফল অর্জন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার। গৃহিণী মা রুনা লাইলা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানান, কোনো কোনো দিন সকালে নাস্তা করার মতো খাবার ঘরে থাকেনি। বহুবার খেয়ে না খেয়ে তাদের স্কুলে যেতে হয়েছে।

দুর্ভোগের মধ্যেও পড়াশোনা থেকে পিছপা হয়নি তারা।
উপজেলার মনিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু মনোয়ার হোসেন জানান, তার প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৩৬ জন। গোল্ডেন এ প্লাসসহ জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৭ জন। তাদের মধ্যে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া দরিদ্র পরিবারের যমজ ভাই।
শাহদৌলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিঞা বলেন, ফলাফল ভালো করে শুধু মা-বাবারই নয়, প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তবে প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলেও ভবিষ্যতে অর্থের কাছে হার মানতে পারে হতদরিদ্র মেধাবীরা। তাদের মেধাকে কাজে লাগাতে সুহৃদয় ব্যক্তিকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়