মাসুদ রানা সিরিজ কার জানা যাবে ১৩ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

পাঠ্যবই নিয়ে এনসিটিবির ঢিলেমি : যথাসময়ে ছাপার কাজ শুরু হয়নি > ১ জানুয়ারি আংশিক বই পাবে শিক্ষার্থীরা > মাঠে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

পরের সংবাদ

অনুপ্রেরণা জোগানো মুক্তির গান

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিজয়ের ৫০ বছরে বাংলাদেশ। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম আর ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল বীর বাঙালিরা। এসব আন্দোলনের পেছনে সংগীতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শিল্পীদের গান মুক্তিসেনাদের উৎসাহিত করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগানো সেসব গান নিয়ে লিখেছেন রেজা শাহীন

সালাম সালাম হাজার সালাম
একাত্তরে স্বাধীনতাকামী বাংলার মানুষকে উজ্জীবিত করা গানগুলোর মধ্যে অন্যতম শিল্পী আবদুল জব্বারের গাওয়া গান ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’। এটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে রচিত হয়। ১৯৬৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি গানটি লিখেন ফজল-এ-খোদা। ১৯৭১ সালের ১৪ মার্চ গানটি প্রথম বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হয়। প্রচারের পরপরই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে গানটি পৌঁছে যায় বাংলার আপামর জনসাধারণে কাছে।

জয় বাংলা, বাংলার জয়
গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৭০ সালের মার্চে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি রচনা করেন। সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ এবং আবদুল জব্বার গানটিতে কণ্ঠ দেন। সুর করেন আনোয়ার পারভেজ। কালজয়ী এই গানটি মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রণসংগীত হিসেবে বিবেচনা করা হয় গানটিকে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সূচনা সংগীত হিসেবে নিয়মিত প্রচার হতো এটি।

জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো
গীতিকবি নয়ীম গহর ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ গানটি রচনা করেন। এটির সুরকার ছিলেন আজাদ রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ গানটি স্বাধীনতাপ্রেমী জনগণকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। ১৯৭০ সালে এই গানটি রেকর্ড করা হয় করাচিতে। করাচিতে গানটিতে প্রথম ফিরোজা বেগম, সাবিনা ইয়াসমিন এবং কয়েকজন কোরাস শিল্পী কণ্ঠ দেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে এই গানটিতে এককভাবে কণ্ঠ দেন জনপ্রিয় সাবিনা ইয়াসমিন।
শোন একটি মুজিবরের থেকে
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ গানটি। এটি রচনা করেন গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার। সুরারোপের পাশাপাশি গানটিতে কণ্ঠ দেন অংশুমান রায়। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্য নতুন করে গানটি গেয়েছিলেন শিল্পী আব্দুল জব্বার। মুক্তিযোদ্ধাদের এ গান প্রবল সাহস জুগিয়েছে।

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনুপ্রেরণা জোগাতে ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ গানটি রচিত হয়। এটি রচনা করেন গোবিন্দ হালদার। সুর করেন আপেল মাহমুদ। আপেল মাহমুদ ১৯৭১ সালে গানটি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে খালি গলায় পরিবেশন করেন। পরবর্তীতে তিনি গানটি স্টুডিওতে রেকর্ড করেন। বিবিসি কর্তৃক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গান হিসেবে দর্শক জরিপে ২০ সেরা গানের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এই গান।

তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে
বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্রে প্রচার হওয়া গানের মধ্যে ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ গানটি অন্যতম। ১৯৭১ সালের জুনের শেষের দিকে এ গানটি রচিত হয়। গানটি গেয়েছেন আপেল মাহমুদ, রথীন্দ্রনাথ রায় এবং সহশিল্পীরা। আপেল মাহমুদ নিজেই গানটির কথা লিখেন এবং সুর করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ চালকালীন সময়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে এই গান।

পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে রচিত হয়। এটি রচনা করেন গোবিন্দ হালদার। গানটি কয়েকজন শিল্পীর সমবেত কণ্ঠে প্রচার করা হয়। সুর করেন সমর দাস। এই গানটি লাখো মুক্তিযোদ্ধাকে অনুপ্রাণিত করে তুলেছিল অস্ত্র হাতে যুদ্ধে যাওয়ার। এত বছরে পেরিয়ে গেলেও গানটির আবেদন এতটুকু কমেনি।
এছাড়া ‘কারার ঐ লৌহকপাট’, ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’, ‘সোনা সোনা সোনা লোকে বলে সোনা’, ‘জনতার সংগ্রাম চলবেই’, ‘নোঙর তোলো তোলো’, ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’সহ অনেক দেশাত্মবোধক গান রচিত হয়েছে সে সময়ে। সেসব সংগ্রামী সংগীত যুদ্ধের মন্ত্র হিসেবে কাজ করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়