পুলিশের স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা : আসামি অজ্ঞাত কয়েক হাজার

আগের সংবাদ

‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক সরকার

পরের সংবাদ

রেকর্ড গড়ার দ্বারপ্রান্তে মুশফিক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই তামিমকে ছাড়িয়ে দেশের মাটিতে এই সংস্করণে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন মুশফিকুর রহিম। ওয়ানডে অধিনায়কের আরো একটি রেকর্ড ভাঙার দ্বারপ্রান্তে মুশফিক। ৪৭৮৮ রান নিয়ে টেস্টে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের মালিক তামিম। তার থেকে মাত্র ১০ রান পেছনে মিস্টার ডিফেন্ডেবল। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামে গতকাল প্রথম ইনিংসে ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক।
আঙুলের চোটে তামিম ইকবাল নেই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। তবে চট্টগ্রামে তামিমকে মনে করালেন মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে মুশফিক ছাড়িয়ে গেলেন তামিমের একটি কীর্তি। অপেক্ষায় আছেন আরেকটি বড় রেকর্ড ভাঙার। এর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ধরা দেয়নি প্রত্যাশা অনুযায়ী সাফল্য। বারবার একই ভুলে আউট হয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সদ্য সমাপ্ত তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাকে দলে রাখেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে টেস্ট সিরিজে সুযোগ পেয়েই দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলে তিনি গড়েছেন রেকর্ড। সবকিছু ঠিক থাকলে আজই সাগরিকা পাড়ে টেস্টে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের মালিক হবেন মুশফিক।
এর আগে ঘরের মাঠে লংগার সংস্করণে তামিমকে ছাড়িয়ে যেতে মুশফিকের প্রয়োজন ছিল ৩৮ রান। প্রথম দিনের চা-বিরতির আগে মুশফিক ছাড়িয়ে যান দেশসেরা ওপেনারকে। ৪৪ ম্যাচে ৭৮ ইনিংসে মুশফিকের রান ২ হাজার ৬৬৪*। তামিম ৩৭ ম্যাচে ৭০ ইনিংসে করেছেন ২ হাজার ৬২০ রান। এ তালিকায় তিনে আছেন সাকিব। ঘরের মাঠে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ৩৮ ম্যাচে ৬৮ ইনিংসে করেছেন ২ হাজার ৫৪৫ রান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের স্কোয়াডে থাকলেও পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় তিনি নেই প্রথম টেস্টের একাদশে। এদিকে দেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তামিম। ৬৪ ম্যাচে তার রান ৪ হাজার ৭৮৮। চট্টগ্রাম টেস্টের আগে মুশফিকের রান ছিল ৪ হাজার ৬৯৬।
৯২ রানে পিছিয়ে থেকে সাগর পাড়ের স্টেডিয়ামে মাঠে নেমেছেন তিনি। ৮২ রান তুলে বেশ ছন্দে আছেন মুশফিক। ৯২ রান করতে পারলে তামিমের সিংহাসন নিজের করে নেবেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সাকিবের। ৫৮ ম্যাচে ১০৭ ইনিংসে সাকিব করেছেন ৩ হাজার ৯৩৩ রান।
টেস্টে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ডের ছড়াছড়ি আগে থেকেই। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম লংগার সংস্করণটিতে পেয়েছেন ডাবল শতকের দেখা। মুশফিক ছাড়াও টেস্টে টাইগার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ডাবল শতকের দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ২০১৩ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার গলেতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ম্যাচটিতে মুশফিক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।
৩২১ বল খেলে ২০০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার ওই ইনিংসে ২২টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কার মার ছিল। এছাড়া একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক টেস্টে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক।
এর পাঁচ বছর পর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ২০১৮ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি।
৪২১ বল মোকাবিলা করে ওই ম্যাচে তিনি ১৮টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান। তার এই ইনিংসটি বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। তার পরে ২১৭ রান করে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস সাকিব আল হাসানের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৭ সালে নিজের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেন টাইগার অলরাউন্ডার। আর তামিমের টেস্টে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ২০৬ পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালে।
মুশফিকের তৃতীয় ও শেষ ডাবল সেঞ্চুরিটি আসে গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একই মাঠ শেরেবাংলায় দ্বিতীয় বার ডাবল শতক তুলে নেন তিনি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই ম্যাচে ২০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মিস্টার ডিফেন্ডেবল। ইনিংসে ৩১৮ বল মোকাবিলা করে ২৮টি বাউন্ডারি হাঁকান মুশফিক।
টেস্টে তিনটি ডাবল শতক ছাড়াও মুশফিকের চারটি শত রানের ইনিংস রয়েছে। এর মধ্যে আবার একটি দেড় শতকের ইনিংস রয়েছে দেশের অন্যতম সেরা এই তারকা ক্রিকেটারের।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ১৫৯ রানের ইনিংসটি খেলেন। টেস্টে মুশফিক প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে।
চট্টগ্রাম টেস্টের ওই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১০১ রান। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মিস্টার ডিফেন্ডেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস খেলেন। ভারতের বিপক্ষে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১২৭ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক।
টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকুর রহিমের অভিষেক ২০০৫ সালের মে মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ঐতিহাসিক লর্ডসে তিনি অভিষেকের প্রথম ইনিংসে ১৯ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করেন মাত্র ৩ রান।
প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হয় ৫ বছর। তবে ৭৫ টেস্ট খেলা মুশফিক বর্তমানে অনেক পরিণত। নিজের ৭৬তম টেস্টেই তিনি টাইগার ব্যাটসম্যানদের মধ্য সর্বোচ্চ রানের মালিক হতে যাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়