বন্ডে অনুমোদন দিল বিএসইসি

আগের সংবাদ

ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল সড়ক : ২০১৮ সালের আন্দোলনের রেশ > ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত টাইগাররা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত। তাই গতকাল চট্টগ্রামে অনুশীলন করেছেন মুমিনুল হকরা। এদিন বাংলাদেশ দল দুপুর দেড়টায় অনুশীলন শুরু করে। তবে এর ঘণ্টাখানেক আগেই অনুশীলনে হাজির হন মুশফিকুর রহিম। অন্য দিনের মতোই সবার আগে ব্যাট-গøাভস পরে নেমে পড়েন মাঠের ডান দিকের নেটে, সঙ্গে তিনজন থ্রোয়ার। আধঘণ্টা ব্যাটিং করেন তিনি। টেস্টের আগে নিজের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর মিশনে কঠোর পরিশ্রম করছেন মুশফিক। বেশ ফুরফুরে মেজাজে অনুশীলন করেছে মুমিনুল বাহিনী। চট্টগ্রামে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত হচ্ছে টাইগাররা।
এছাড়া ঢাকায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে শুধু শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের বুথে। তবে চট্টগ্রামে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের টিকেট কাউন্টার এবং সাগরিকার বিটাক মোড়ে, সিটি করপোরেশন অফিসের কাছে পাওয়া যাবে টেস্ট ম্যাচের টিকেট। আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাওয়া যাবে প্রথম দিনের টিকেট। টিকেটের মূল্য ১০০ থেকে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইস্টার্ন স্ট্যান্ড ১০০, পূর্ব দিকের ক্লাব হাউজ ২০০, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ড ৩০০ এবং রুফটপ (ছাদের ওপর) হসপিটালিটি টিকিট কিনতে হবে ৫০০ টাকা দিয়ে। তাছাড়া ঢাকার মতো চট্টগ্রামের ১৮ বা তার ঊর্ধ্ব বয়স্ক দর্শকদের জন্য করোনা ভাইরাসের দুই ডোজ টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাঠে প্রবেশের সময় গেটে টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট দেখা হবে বলে জানিয়েছে বিসিবি।
এদিকে চট্টগ্রামের উইকেট মিরপুরের মতো এত স্লো নাকি লো হবে না, তা ক্রিকেটপ্রেমীদের অজানা নয়। তাই ভেন্যু পরিবর্তনের সঙ্গে টাইগারদের ভাবতে হচ্ছে বাউন্স নিয়ে।
সফরকারীদের দুর্দান্ত বাউন্স সামলাতে টাইগার কোচরা ব্যাটারদের অনুশীলনে ব্যবহার করেন গ্রানাইট স্ল্যাব। এখানে বল স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি লাফিয়ে ওঠে। এতে বাউন্সের বিপক্ষে খেলার অনুশীলন করা যায় ভালোভাবে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দেখানো সেই পথেই গতকাল হাঁটলেন অ্যাশওয়েল প্রিন্সরা। নাসিম শাহ-শাহীন শাহ আফ্রিদিরা যেন হুমকি হয়ে উঠতে না পারেন, অনুশীলনে ব্যাটিং নিয়ে সেই কাজ করছে টাইগাররা। শুধু ব্যাটিংই নয়, বোলিং-ফিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট নিয়েও এদিন অনুশীলনে ঘাম ঝরায় বাংলাদেশ দল। নতুনদের নিয়েও কোচ ব্যস্ত ছিলেন অনুশীলনের পুরোটা সময়। ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি ও মাহমুদুল হাসান জয় পেয়েছেন বাড়তি গুরুত্ব।
তাছাড়া জয় এবারই সুযোগ পেলেন জাতীয় দলে। ইয়াসির তিন বছর ধরে আছেন দলের সঙ্গে, যদিও ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি।
জয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরের সেমিফাইনালে দুর্দান্ত এক শতক হাঁকিয়ে হারিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডকে। ২১ বছর বয়সী এই ব্যাটার চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন। একাদশে তার সুযোগ পাওয়াও প্রায় নিশ্চিত। কারণ টেস্টে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল নেই। টিম ম্যানেজমেন্ট তাই ফর্মে থাকা জয়ের ওপর ভরসা রাখতে পারে। এমনকি গতকাল অনুশীলন শেষে সুযোগ পেলে ভালোই করবেন এমনটা জানিয়েছেন জয়। তিনি বলেন, সত্যি বলতে এই অনুভূতিটা প্রকাশ করার মতো না। সবারই স্বপ্ন থাকে টেস্ট স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়ার। প্রথমবারের মতো টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছি। আমি অনেক খুশি। জাতীয় লিগে কয়েকটি ভালো ইনিংস খেলেছি। আত্মবিশ্বাস এখন ভালো আছে। তার আগে এইচপি ও এ দলের খেলায়ও একটা ভালো ইনিংস খেলেছি। সামনে খেলায় ভালো করার জন্য আমি প্রস্তুত আছি। টেস্টে অভিষেক হলে নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিংটাই করে যেতে চান। আমার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। সুযোগ পেলে নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিং করার চেষ্টা করব। তাছাড়া সিনিয়র সবাই অনেক সাহায্য করছে। সবাই এক সঙ্গে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছি। সবাই আমাকে অনেক সহায়তা করেন।
এছাড়া জাতীয় দলের হয়ে টেস্টে সুযোগ পেয়েছে সিলেটের তরুণ পেসার রেজাউর রহমান রাজা। তিনিও জয়ের মতোই অপেক্ষায় রয়েছেন মর্যাদার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের। চলতি জাতীয় ক্রিকেট লিগে ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এ বিষয় রাজা বলেছেন, এলাকায় টেপ টেনিস দিয়ে খেলতাম। তখন একটা ক্রিকেট বলের টুর্নামেন্ট হয়েছিল। আমি সেখানে খেলতে যাই। বড় ভাইরা আমার বোলিং দেখে বলছিলেন, তোর বোলিং ভালো হচ্ছে, চাইলে স্টেডিয়ামে গিয়ে ক্রিকেট অনুশীলন করতে পারিস। আমি বড় ভাইদের কথা শুনে অনুশীলনে গেলাম। সেখানে গিয়ে আমার মনে হলো ইনশাআল্লাহ্ আমি পারব। তো এভাবেই আমার ক্রিকেটে আসা। তাছাড়া জাতীয় দলের পেসারদের দেখেই উৎসাহ পেয়েছি। আমাদের সিলেটে যেমন রাহি ভাই, এবাদত ভাই, খালেদ ভাইদের কাছ থেকে আমি খেলার অনুপ্রেরণা পেয়েছি। টেস্ট খেলা আমি উপভোগ করি। চারদিনের খেলায় ডে বাই ডে কয়েকটা স্পেলে বোলিং করতে পারি। আমার শক্তির জায়গাটা ধরে রাখতে পারি। আমার নিজের যেটা মনে হয় যে, এক জায়গায় টানা বল করতে পারি। বলে কিছু মুভমেন্ট করাইতে পারি। এক রিদমে টানা বল করতে পারি। দিনের শুরুতে যেই পেসে বোলিং করি, দিনের শেষে তার চেয়ে একটু বেশি পেসে বল করতে পারি।
এছাড়া কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে ক্রিকেটারদের মধ্যে বেশ পরিচিতি আছে মুশফিকের। তিনি দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিনগুলোতে অন্যরা দূরে থাকলেও ঘাম ঝরাতে ব্যস্ত থাকেন। গতকালও একই রূপে দেখা গেল তাকে। মূল অনুশীলন শুরুর আগে নেটে ব্যাটিং করেছেন আধঘণ্টা। পরে মূল অনুশীলনে স্পিনার-পেসারদের বিপক্ষেও ব্যাটিং করেছেন। এদিন তার ট্রেড মার্ক শর্টগুলোতেও ব্যাট চালাতে দেখা গেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেই সুইপ, স্লগ সুইপ, রিভার্স সুইপের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। এদিন অনুশীলনেও দেখা গেছে শটগুলো নিখুঁত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশ দল যখন পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ব্যস্ত, মুশফিক তখন একা একা অনুশীলন করেছন। ডানহাতি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুরের ইনডোরে অনুশীলন চালিয়ে গেছেন টানা। টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়ায় দলের সঙ্গে একটি দিনের জন্যও অনুশীলন করেননি। টেস্ট শুরুর আগে অবশ্য দলের সঙ্গেই মিশে গেছেন এই ক্রিকেটার।
সম্প্রতি মুশফিকের টি-টোয়োন্টি পারফরম্যান্স ভালো না হলেও টেস্টের অবস্থা অতটা নাজুক নয়। শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ দুই টেস্টের দুই ইনিংসে দুটি ৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন। বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর সমালোচনায় বিধ্বস্ত টাইগারদের ড্রেসিংরুম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে মরিয়া হয়ে আছে। তবে পুরনো ব্যর্থতা ভুলে নতুন ফরম্যাটে ভালো করার তাগিদ অনুভব করছেন মুশফিক। চট্টগ্রামে টেস্ট মিশনে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও তিনি। মুমিনুল,সাদমান,লিটন,মিরাজ ও তাইজুলদের সঙ্গে নিয়ে মুশফিককেই লড়াই করতে হবে। তবে যাইহোক চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগাররা কেমন খেলবে তা সময় বলে দেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়