জাবির ভর্তি পরীক্ষা : প্রক্সি দিতে গিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থী কারাগারে

আগের সংবাদ

এশিয়ান আর্চারিতে পদক খরা ঘোচাল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

‘অহন কইতে পারমু আমরা ভূমিহীন না’

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহাঙ্গীর আলম, মাদারীপুর থেকে : সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে দীর্ঘ লাইনে সারি সারি ঘর। সুন্দর এবং মজবুত এসব ঘরের পেছনে-সামনে নানা জাতের সবুজ বনানীর শীতল ছায়া। প্রতিটি ঘরের সামনে যার যার সীমানার খোলা জায়গা। কেউ বাগান করেছে, কেউ করেছে সবজি চাষ, কেউ আবার নিজের ঘরটির সামনে রঙিন তোরণ নির্মাণ করে আরো দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। সীমানার সামনে রাস্তা এবং রাস্তার পাশে সারি সারি গাছ। সবুজ পল্লবী পরিবেশ যেন অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি। রয়েছে সার্বক্ষণিক ফ্রি বিদ্যুৎ সুবিধা। প্রকল্পের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে লোয়ার কুমার নদী।
সাংসারিক কাজের জন্য নদীটি সুবিধাভোগীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। বিশুদ্ধ পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে প্রতি ১০ পরিবারের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি করে ডিপটিউবওয়েল। প্রতিটি ঘর সাজানো-গোছানো বেশ পরিপাটি। অনেকের ঘরে নিজেরাই টাইলস বসিয়ে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কেউ কেউ ঘরের ভেতর দেয়ালে রং এবং ডিসটেম্পার ও প্লাস্টিক পেইন্ট করেছে।
এমন দৃশ্যপট মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পে। এসব পরিবারের অভিভাবকরা কেউ ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ঠেলাগাড়িচালক, ইজিবাইকচালক, কৃষি শ্রমিক, দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক। করোনা মহামারিতে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অভাবে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লেও বাসস্থান থাকায় তারাও খুশি। জমিসহ প্রাপ্ত ঘর এখন অসহায় মানুষগুলোর নিজস্ব সম্পত্তি।
সুবিধাভোগী আবদুল ওয়াহেদ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের এখানকার ঘরগুলো বেশ টেকসই। অন্যান্য জেলার যেসব কথা শুনেছি তাতে আমরা চিন্তায় ছিলাম। সে তুলনায় আমাদের সব ঘর সুন্দর এবং ভালোমানের।’
অন্য এক সুবিধাভোগী গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘আমি নামাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি। তার দানে আল্লাহর রহমতে আজ আমরা সুখে আছি। আল্লাহ যেন ওনাকে দীর্ঘজীবী করেন।’
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আমরা দুই দফায় ১৭৫টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। এর মধ্যে ১০০ ঘর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে প্রতি পরিবারে ২ শতাংশ জমিসহ ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৭৫টি ঘরের নির্মাণ প্রক্রিয়া চলমান আছে। কাজ শেষ হলেই তা হস্তান্তর করা হবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, ‘আমরা নিজেদের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করেছি। আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার (বাসস্থান) শতভাগ ত্রæটিমুক্ত করার। আমাদের আরো পরিকল্পনা আছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে সুবিধাভোগী পরিবারগুলোর সন্তানরা যাতে লেখাপড়া শিখতে পারে সে জন্য প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা। এ জন্য স্থান নির্ধারণ করে মাটি দিয়ে জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘বরাদ্দ অনুযায়ী আমাদের জেলার ঘরগুলো উন্নতমানের। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করায় এর গুণগতমান ভালো হয়েছে। দেশের কয়েকটি জেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর নির্মাণে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এরপরে সরকার কিছুটা বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে আশা করি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ঘরগুলো আরো উন্নমানের হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়