চকবাজারে প্লাস্টিক গোডাউনে আগুন

আগের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফ্রিল্যান্সার দেশ

পরের সংবাদ

জলবায়ু সম্মেলনে প্রতিবাদী তারুণ্য : ‘আর নয় ব্লা-ব্লা-ব্লা!’

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : গ্রেটা থুনবার্গ গত সেপ্টেম্বরে ইতালির মিলানে এক সমাবেশে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ভারতের নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যকে ফাঁকা বুলির সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে বলেছিলেন ‘ব্লা-ব্লা-ব্লা!’ সেই থেকে ক্ষুদ্র এই শব্দটি জলবায়ু আন্দোলনের একটি জনপ্রিয় স্লোগান হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহেও গøাসগোতেও তরুণদের বিক্ষোভ-সমাবেশে শব্দটি পুনরাবৃত্তি করেন জলবায়ু আন্দোলনের সুইডিশ তারকা থুনবার্গ। তিনি যখন বলেন, ‘কপ-২৬ ব্লা-ব্লা-ব্লা’ রাজনীতিকদের দুই সপ্তাহের একটি উৎসব, এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক নেই; তখন করতালি আর স্লোগানে ফেটে পড়ে সমাবেশ। নতুন প্রজন্মের এই পরিবেশ সচেতন ছেলেমেয়েরা পত্রপত্রিকার খবরে দেখেছে পরিবেশ বাঁচানোর সম্মেলনে যোগ দিতে নেতা-কর্মকর্তা-ব্যবসায়ীরা জীবাশ্ম জ¦ালানি পুড়িয়ে ব্যক্তিগত এবং ভাড়া করা জেট বিমানে একের পর এক গøাসগো ও এডিনবরা বিমানবন্দরে এসে নামছেন। তারা এটাকে ‘প্রবঞ্চনা’ বলে বিবেচনা করছেন। গøাসগো ও বিশ্বের নানা শহরে পরিবেশবাদীদের বিক্ষোভ শোভাযাত্রায় বহু প্ল্যাকার্ডে এ শব্দটি দেখা গেছে। জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে আরো একটি শব্দ ও স্লোগান উচ্চারিত হচ্ছে, তা হলো ‘গ্রিনওয়াশ’। এর অর্থ করলে দাঁড়ায়, মূল সত্য চাপা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। গøাসগোর কপ-২৬ ভেন্যুর বাইরে দিনভর যেসব আন্দোলনকারী দাঁড়িয়ে থেকে স্লোগান দিচ্ছেন আর গান-বাজনা করছেন, তাদের প্ল্যাকার্ডে দেখা যাচ্ছে এবং মুখেও শোনা যাচ্ছে এই দুই শব্দ- ব্লা-ব্লা-ব্লা আর গ্রিনওয়াশ! এর অর্থ এই যে সম্মেলনের ভেতরের আলোচনায় বিভিন্ন দেশের নেতারা বিশ্বের তাপমাত্রা কমানোর জন্য যে বড় বড় প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন, তার প্রতি বহু মানুষ আস্থা রাখতে পারছেন না। জলবায়ু বিজ্ঞানী ড. সালিমুল হক এ বিষয়ে বলেন, রাজনীতিকদের এ দুর্নাম সহ্য করতে হবে, কারণ তারা প্রতিশ্রæতি ভঙ্গ করেই চলেছেন। তাদের একটা অভ্যাস রয়েছে কথা দিয়ে কথা না রাখা। তারা যে ব্লা-ব্লা-ব্লা করেন, এটা শতভাগ সঠিক।
জলবায়ু সম্মেলনের ঠিক আগে জাতিসংঘের দুটো সংস্থা থেকে কার্বন নিঃসরণ নিয়ে বড় দুটি গবেষণা প্রতিবেদন ছাপা হয়, যেখানে পরিষ্কার বলা হয় এই শতাব্দীতে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার যে বোঝাপড়া ছয় বছর আগে প্যারিসে হয়েছিল, সিংহভাগ দেশ সে অনুযায়ী কাজ করছে না। ২০৩০ সাল পর্যন্ত কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে লক্ষ্যমাত্রা লিখিতভাবে এ বছর দেশগুলো দিয়েছে, তাতে নিঃসরণ তো কমবেই না বরঞ্চ ২০৩০ সাল পর্যন্ত তা বাড়তেই থাকবে। খোদ জাতিসংঘ একের পর এক রিপোর্ট বের করে পরোক্ষভাবে সদস্য দেশগুলোকে বলছে, তোমরা কথা রাখছো না! তরুণদের কথা, দীর্ঘদিন ধরে যথেচ্ছ কয়লা-তেল-গ্যাস পুড়িয়ে গুটিকতক ধনী দেশ বাকি বিশ্বকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এখন সাহায্যের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রæতি দিয়েও টালবাহানা করছে। সরকার ও নেতাদের ওপর এই সন্দেহ-অবিশ্বাস সহজে ঘুচবে বলে মনে হয় না। সুতরাং কাল শুক্রবার গøাসগো সম্মেলনের ঘোষণায় যত প্রতিশ্রæতি থাকুক না কেন, তার ভেতর যত সারবত্তাই থাকুক না কেন, গ্রেটা থুনবার্গ হয়তো সাথে সাথেই টুইট করবেন, আবারো একটি ব্লা-ব্লা-ব্লা অধিবেশন শেষ হলো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়