মো. শাহ আলম রুবেল, বেতাগী (বরগুনা) থেকে : বরগুনার বেতাগী উপজেলাজুড়ে সোমবার রাতে হঠাৎ ডাকাতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে সারা রাত উপজেলার মানুষের নির্ঘুম রাত কাটান। গভীর রাতে হঠাৎ করেই ‘ডাকাত ঢুকেছে’ গুজব ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং ও প্রচারণা চালানো হয়। বিশেষ করে উপজেলার বিষখালী নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর মানুষের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক ছিল সীমাহীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী কাঁঠালিয়া উপজেলার কচুয়া ফেরিঘাট এলাকায় লোকজনসহ একটি ট্রলার আসে। স্থানীয়ভাবে তখন নদীতে ডাকাত এসেছে মর্মে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। ডাকাত ঢুকেছে এমন সন্দেহে শৌলজলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে পার্শ্ববর্তী পুরো বেতাগী উপজেলাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এ সময় এলাকার মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়। গ্রামে ডাকাত ঢোকার খবরে এলাকার মানুষ লাঠি নিয়ে জড়ো হয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়। ডাকাত আতঙ্কে তারা সারা রাত এলাকা পাহারায় থাকেন।
উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, রাতে এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে বলে বিভিন্ন স্থান থেকে খবর পাওয়ার পর আমরা স্থানীয়দের সজাগ থাকতে এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে থাকি। মোকামিয়া ইউনিয়নের ছোট মোকামিয়া এলাকার রাজিব হাওলাদার বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়, ‘ডাকাত ঢুকেছে’ বলে। ভয়ে সারা রাত আতঙ্কিত অবস্থায় থাকি।
উপজেলার কেওড়্যাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও বেতাগী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে। সবাই যেন সতর্ক থাকি। পরে নিশ্চিত হই যে এটা গুজব ছিল।
জানা গেছে, সোমবার রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত উপজেলার পৌরসভা, সদর, মোকামিয়া এবং হোসনাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ডাকাতের খবর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিতে শুনেছেন। অনেকে সেটা বিশ্বাস করে মধ্যরাতে স্বজনদের ফোন দিয়ে সতর্ক করেন। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে পোস্ট দেন।
বেতাগী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, রাতে কোথাও কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। এটা গুজব। তবে এই গুজবের কারণে রাতে পুলিশ বাড়তি টহলের ব্যবস্থা করেছিল।