দেশে ২ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৮৪৬

আগের সংবাদ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

পরের সংবাদ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা : টিকাদানে শ্লথগতি, ফের কোভিডের উপকেন্দ্র হয়ে উঠছে ইউরোপ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইউরোপ আবারো কোভিড মহামারির ‘উপকেন্দ্র’ হয়ে উঠতে পারে। বিবিসি বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মহাদেশটিতে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে দেখা গেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপপ্রধান হানস ক্লুগ বলেন, ইউরোপ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে মহামারিতে আরো ৫ লাখ মৃত্যু দেখতে পারে। সংক্রমণের এই নতুন ঊর্ধ্বগতির জন্য মূলত অপর্যাপ্ত টিকাদানকেই দায়ী করেন তিনি।
ক্লুগ বলেন, আমাদের কৌশল বদলাতে হবে। কোভিড-১৯ এর ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলার বদলে এমনটা যেন না হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। ইউরোপে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে টিকাদানের হার ক্রমাগত শ্লথ হয়েছে। স্পেনে টিকা পাওয়ার উপযুক্তদের ৮০ শতাংশ এরই মধ্যে দুই ডোজ পেয়ে গেলেও ফ্রান্স ও জার্মানিতে এই হার তুলনামূলক কম, যথাক্রমে ৬৮ ও ৬৬ শতাংশ। মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশে এই হার আরো কম। গত মাস পর্যন্ত রাশিয়া মাত্র ৩২ শতাংশকে টিকার সব ডোজ দিতে পেরেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ অঞ্চলের আওতায় যে ৫৩টি দেশ রয়েছে, তার মধ্যে মধ্য এশিয়ার একাংশও পড়ে, এই অঞ্চলটি এখন পর্যন্ত মহামারিতে প্রায় ১৪ লাখ মৃত্যু ঘটেছে। সংস্থার কোভিড-১৯ বিষয়ক কর্মকর্তা মারিয়া ভ্যান কেরখোভে বলেন, টিকা ও সরঞ্জামের যথেষ্ট সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও ইউরোপে গত ৪ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। মারিয়ার সহকর্মী ড. মাইক রায়ান বলছেন, ইউরোপের অভিজ্ঞতা বিশ্বের জন্য ‘সতর্ক সংকেত’।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে রেকর্ড প্রায় ৩৪ হাজার নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়। যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবারও ৩৭ হাজারের বেশি মানুষের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। জার্মানিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখনো যুক্তরাজ্যের চেয়ে কম হলেও সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউয়ের কারণে সামনের দিনগুলোতে বিপুলসংখ্যক মৃত্যু দেখা যেতে পারে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভয়াবহ চাপ পড়তে পারে। জার্মানিতে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে ১৬৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়। এর আগের সপ্তাহেও দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ ১২৬ জনের মৃত্যু ঘটে।
জার্মানির আরকেআই ইনস্টিটিউটের লোথার ভিইলার বলেন, এখনই যদি পাল্টা ব্যবস্থা না নিতে পারি, তাহলে চতুর্থ ঢেউ আরো ভোগান্তি নিয়ে আসবে। জার্মানিতে টিকা না পাওয়াদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যাই এখনো ৩০ লাখের বেশি। তারাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। গত সপ্তাহে কেবল রাশিয়াই মহামারিতে ৮ হাজারের বেশি মৃত্যু ঘটেছে। ইউক্রেনে প্রাণ গেছে ৩ হাজার ৮০০ মানুষের। দুটো দেশেই টিকাদানের গতি শ্লথ। রোমানিয়ায় চলতি সপ্তাহে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৯১ জনের মৃত্যু ঘটতে দেখা গেছে। হাঙ্গেরিতেও শনাক্ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তা সত্ত্বেও দেশটিতে কেবল গণপরিবহন ও হাসপাতালেই মাস্ক পরতে হচ্ছে। ডা. রায়ান বলেন, এই মুহূর্তে আমরা এমন একটা ভাবে রয়েছি, যেন মহামারি শেষ, আমাদের খালি আর কিছু লোককে টিকা দিলেই হবে। ব্যাপারটা মোটেও সে রকম নয়। পর্তুগালে শনাক্ত নতুন রোগীর সংখ্যা সেপ্টেম্বরের পর প্রথম হাজারের উপরে উঠেছে। ইউরোপের যে অল্প কয়েকটি দেশে এখনো সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে না, তার অন্যতম স্পেনে গত বুধবার নতুন ২ হাজার ২৮৭ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়