মিয়ানমার ছায়া সরকার ও মার্কিন প্রতিনিধির বৈঠক

আগের সংবাদ

ইএফডির দাম নিয়ে জটিলতা : দোকান নির্ধারণ করবেন ভ্যাট কর্মকর্তারা, বিপাকে পড়বেন ছোট ব্যবসায়ীরা

পরের সংবাদ

কপ-২৬ : জলবায়ু সম্মেলন : বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ হচ্ছে গø্যাসগো শহরে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : স্কটল্যান্ডের গø্যাসগো শহরে পহেলা নভেম্বর থেকে যে জলবায়ু সম্মেলন শুরু হচ্ছে তার সাফল্যের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে বিশ্বের ভবিষ্যৎ। সম্মেলনে কী হয় তার ওপর আগামী দিনগুলোতে আমাদের জীবনযাপনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। কিন্তু কপ-২৬ কী? কেন এই সম্মেলন? দীর্ঘদিন ধরে ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম জ¦ালানি পোড়ানের ফলে যে ক্ষতিকারক গ্যাস পরিবেশে ছড়িয়েছে তার প্রভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়েই চলেছে। পরিণতিতে আবহাওয়া দিনকে দিন চরম ভাবাপন্ন হয়ে উঠছে। তাপমাত্রা বাড়ছে, জঙ্গলে আগুন ধরছে, বন্যা এবং সাইক্লোনের প্রকোপ বাড়ছে।
এসব ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ প্রয়োজন। বিশ্বের ২০০টি দেশকে বলা হচ্ছে পরিবেশে কার্বন নিঃসরণ কমাতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত তাদের কর্মপরিকল্পনা কী, তা গø্যাসগোর সম্মেলনে জানাতে হবে। ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে এসব দেশ রাজি হয়, শিল্প-বিপ্লব পূর্ববর্তী যে তাপমাত্রা পৃথিবীতে ছিল তার চেয়ে দেড় ডিগ্রি, বড়জোর দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে মেনে নেয়া চলে, কোনোক্রমেই তার বেশি বাড়তে দেয়া যাবে না। এটি নিশ্চিত করতে সবাই চেষ্টা করবে। সব দেশই মেনে নেয় যে এটা না করতে পারলে পৃথিবী এবং মানব সভ্যতা মহাবিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যাবে। এই বোঝাপড়াটাই প্যারিস চুক্তি নামে পরিচিত। এতে অঙ্গীকার করা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে হবে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা সম্মেলনে যেসব ঘোষণা আসতে পারে, সে বিষয়ে বিবিসি যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, তা হচ্ছে- ১. ইলেকট্রিক কার বা ব্যাটারি চালিত গাড়ির ব্যবহার দ্রুত বাড়ানো, ২. কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথ থেকে সরে আসা ও গাছকাটা বন্ধ করা, ও ৩. জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করা। এ লক্ষ্যে উপকূলীয় বাঁধ ও অন্যান্য প্রতিরক্ষা জোরালো করা। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ সম্মেলন ঘিরে হাজির হবেন গø্যাসগো শহরে। ব্রিটেনের রানি হাজির থাকতে পারবেন না; তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ থাকবেন বিশ্ব নেতারা। এদের মধ্যে থাকবেন মীমাংসাকারী এবং সাংবাদিকরা। থাকবেন হাজার হাজার অ্যাক্টিভিস্ট এবং বহু ব্যবসায়ী। জীবাশ্ম জ¦ালানি পোড়ানো বন্ধ করার দাবি নিয়ে হাজির থাকবে রেবেলিয়ন এক্সটিংশনের মতো কট্টর পরিবেশবাদী গোষ্ঠী।
বিবিসি জানায়, নিশ্চিতভাবে ধরে নিতে পারেন যে টাকা-পয়সা এবং ন্যায়বিচার নিয়ে অনেক কথা হবে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর টাকা-পয়সা দরকার। কয়লার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সোলার বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে তাদের পুঁজি প্রয়োজন। আবহাওয়ার নেতিবাচক আচরণের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তাদের টাকা-পয়সা দরকার। উপকূলীয় বাঁধ শক্ত করতে বিনিয়োগ প্রয়োজন। আরো কথা আছে। উন্নয়নশীল দেশের জন্য ক্ষতিপূরণ নিয়েও বাকযুদ্ধ হবে সম্মেলনে। ধনী দেশগুলো বলেছিল, ২০২০ সালের মধ্যে দেশগুলোকে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেবে। কিন্তু এই প্রতিশ্রæতি রক্ষা হয়নি। কপ-২৬ সম্মেলনে চীন কী কী প্রতিশ্রæতি দেয়, তা অতি জরুরি। কারণ এ মুহূর্তে চীনই এক নম্বর কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। অথচ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না বলে জানা গেছে। দুজন চীনা বিশেষজ্ঞ থাকবেন তার প্রতিনিধি হিসেবে। তবে সম্প্রতি চীনা প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন, চীন আর দেশের বাইরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বানাবে না।
গø্যাসগোর সম্মেলন আমাদের নিত্যদিনের জীবনযাপনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। যেমন, এখানে নির্ধারিত হতে পারে, আর কতদিন পেট্রল বা ডিজেল চালিত গাড়ি চালানো যাবে; শীতে ঘর গরম করতে গ্যাস ব্যবহার করা চলবে কিনা একং ঘন ঘন বিমান ভ্রমণের সুবিধা থাকবে কিনা ইত্যাদি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়