পাসপোর্ট জটিলতায় আটকে আছেন অর্ধলাখ প্রবাসী

আগের সংবাদ

পোশাক খাতে ক্রয়াদেশ বাড়ছে

পরের সংবাদ

সুদানে ক্যু-বিরোধী বিক্ষোভ : সেনাদের গুলিতে নিহত ৭

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : সুদানে সেনাবাহিনীর ক্যু বা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভরত জনতার ওপর সৈন্যরা গুলি চালিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। গত সোমবার রাতের এই ঘটনায় সাত জন নিহত ও ১৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এদিন দেশটির সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার ও দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির পর প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। রাজধানী খার্তুমে সৈন্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয় বিক্ষোভ আয়োজকদের গ্রেপ্তার করছে বলে জানায় বিবিসি।
এই অভ্যুত্থান বিশ্বব্যাপী নিন্দা কুড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ৭০ কোটি ডলারের একটি ত্রাণ সহায়তা স্থগিত করেছে। অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান দেশের ক্ষমতা দখলের জন্য রাজনৈতিক কোন্দলকে দায়ী করেছেন। ক্ষমতা নেয়ার পর জেনারেল বুরহান ২০২৩ সালের জুলাইয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। ‘সুরক্ষা ও নিরাপত্তা রক্ষায়’ সশস্ত্র বাহিনীর এ পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল বলে দাবি করেন তিনি। খার্তুম থেকে বিবিসি প্রতিনিধি মোহামেদ ওসমান জানান, সোমবার রাতে খার্তুমে ও অন্যান্য শহরে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে বেসামরিক শাসন পুনর্বহালের দাবি জানায়। আহত এক বিক্ষোভকারী সাংবাদিকদের জানান, সামরিক সদর দপ্তরের সামনে সেনাবাহিনী তার পায়ে গুলি করেছে।

অপর এক বিক্ষোভকারী জানান, সৈন্যরা প্রথমে স্টান গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায়; তারপর গুলি ছোড়ে। আল-তায়েব মোহাম্মদ আহমেদ নামে এক বিক্ষোভকারী জানান, দুই জন মারা গেছেন। আমি স্বচক্ষে তাদের দেখেছি।
সুদানের চিকিৎসক ইউনিয়ন ও তথ্য মন্ত্রণালয়ও সামরিক কম্পাউন্ডের সামনে গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে ফেসবুকে জানায়। খার্তুমের একটি হাসপাতাল থেকে আসা ছবিতে রক্তাক্ত কাপড়ে থাকা লোকজন ও বহু আহতকে দেখা গেছে বলে জানায় বিবিসি। সুদানের প্রধান বিরোধীদলীয় জোট ‘ফোর্সেস অব ফ্রিডম এন্ড চেঞ্জ’ টুইটারে জানায়, সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে রাস্তায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তারা। বিবিসির প্রতিনিধি জানান, সহিংসতা সত্ত্বেও প্রতিবাদ হ্রাস পাওয়ার লক্ষণ কমই দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীরা ইট স্তূপ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। বিক্ষোভে অনেক নারীও অংশ নিচ্ছে; ‘সামরিক শাসন চাই না’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন তারা। খার্তুমের বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো স্থগিত রাখা হয়েছে। ইন্টারনেট এবং অধিকাংশ ফোন লাইনও বন্ধ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মীরা দেশজুড়ে ধর্মঘট শুরু করেছে। চিকিৎসকরা সামরিক হাসপাতালগুলোতে কাজ করতে অস্বীকার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সবখানে শুধু জরুরি বিভাগ খোলা আছে।
সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা নেয়ার পর বিশ্ব নেতারা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), আফ্রিকান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অজ্ঞাত স্থানে বন্দি রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেছে। যাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদক ও তার স্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যরা ও অন্যান্য বেসামরিক নেতারা রয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়