রকি আহমেদ : প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ¯œাতক ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের (মানবিক বিভাগ) ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫টার সময় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ফল নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা অভিযোগ করেন, তাদের দেয়া উত্তরের সঙ্গে ফলাফলের মিল নেই। কেউ প্রশ্নের উত্তরের থেকে বেশি নম্বরও পেয়েছেন।
ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা মুবাশ্বির আহমেদ বলেন, আমি বাংলায় ৪০টি প্রশ্নের উত্তর করেছিলাম। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফলে বাংলা অংশে ২৮টি পূরণ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এমনটা কীভাবে হলো? বাংলায় কম হওয়ায় আমি ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪৬ পেয়েছি। এদিকে নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আবির বলেন, আমি ইংরেজিতে একটি প্রশ্নেরও উত্তর না দিয়ে ২২ পেয়েছি। অথচ বাংলায় সঠিকভাবে ৩১টি উত্তর দিলেও চারটি উত্তর দিয়েছি বলে দেখাচ্ছে। ফলাফলের এমন গোঁজামিলে সব মিলিয়ে আমার রেজাল্ট খারাপ দেখাচ্ছে।
রাজধানীর দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আবু নোমান সালমান বলেন, আমি বাংলায় ৪০টির মধ্যে ৩৫টির বেশি উত্তর দিয়েছি। কিন্তু রেজাল্টে দেখাচ্ছে বাংলায় নাকি আমি ২০টির উত্তর দিয়েছি। আবার ইংরেজিতে উত্তর দিয়েছি ১৭/১৮টি। কিন্তু দেখাচ্ছে ইংরেজিতে নাকি ৩০টির উত্তর দিয়েছি। আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়েই উত্তর করেছিলাম। ৪৩/৪৪ মার্কস পাওয়ার কথা। ফলাফলের এমন গোঁজামিলে পেয়েছি ২২ দশমিক ৫০। একসঙ্গে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় হারালাম।
ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের তরিকুল ইসলাম সৈকত, মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের সজিব হাসানও একই অভিযোগ করেন। এছাড়া ফেসবুকে গুচ্ছ ভর্তির বিভিন্ন গ্রুপে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে ফলাফল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, অনেক শিক্ষার্থী ওএমআর পূরণ করতে ভুল করেছে। অর্ধেক ভরাট বা অস্পষ্ট হলে কম্পিউটারে সেটা রিড করে না। এখানে ওএমআর সম্পূর্ণ কম্পিউটারের মাধ্যমে রিড হয়। তাই ফলাফল ভুল হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এরপরও যারা চ্যালেঞ্জ করতে চায়, আমাদের সর্বশেষ বাণিজ্য অনুষদের পরীক্ষার পর একটা নোটিস দেব। নির্ধারিত ফি দিয়ে শিক্ষার্থীরা আবার ফলাফল চেক করতে পারবে। অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, কম্পিউটারে রেজাল্ট কাউন্ট হয়েছে। ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ‘বি’ ইউনিটের সর্বোচ্চ মার্কস ৯৩ দশমিক ৭৫। তবে কোনো শিক্ষার্থী যদি অভিযোগের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে পরীক্ষা শেষে তাদের পুনঃনিরীক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।