ইজিবাইকচালককে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬ : মাদকের টাকা জোগাতে ছিনতাই

আগের সংবাদ

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে ডিজিটাল ছোঁয়া

পরের সংবাদ

রূপপুর যেন একখণ্ড রাশিয়া!

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আবুল কালাম আজাদ, পাবনা ও মোস্তাক আহমেদ কিরন, ঈশ্বরদী থেকে : ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরুর পর গত কয়েক বছরে সেখানে গড়ে উঠেছে নানা অবকাঠামো। পাশাপাশি রুশ ভাষাভাষি কয়েক হাজার বিদেশি কর্মীদের অবস্থানে সেখানকার অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে রাশিয়ার ভাষা ও সংস্কৃতির।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কল্যাণে এলাকার দৃশ্যপট পুরোটাই পাল্টে গেছে। এলাকার বিপণিবিতান, বিদ্যালয়, সুউচ্চ ভবন, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল-রেস্টুরেস্ট, রিসোর্ট এখন মুখরিত। এখানকার কাঁচাবাজারগুলোতেও যেন রাশিয়ানদের ছোঁয়া লেগেছে। এখানকার বাজারঘাট, দোকানপাট রেস্তোরাঁয় বাংলা ভাষার পাশাপাশি চলছে রাশিয়ান ভাষার প্রচলন। সাইনবোর্ডগুলোতে বাংলা ইংরেজির পাশাপাশি রাশিয়ান ভাষাও লেখা আছে।
এর বাইরে চারপাশে গড়ে ওঠা হোটেল, রিসোর্ট, বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো কর্মহীন মানুষের। বিদেশি নাগরিকদের কেনাকাটাসহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজন মেটাতে পাকশী, সাহাপুর, রূপপুর ও ঈশ্বরদী শহরে গড়ে উঠেছে একাধিক বিপণিবিতান, আধুনিক শপিংমল, সুপার শপ, রিসোর্ট ও তারকা হোটেল। উন্নতমানের হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে।
রূপপুর প্রকল্পে কাজের সুযোগ পেয়েছেন কয়েক হাজার বেকার যুবক। তাদের ভাগ্য যেমন বদলে গেছে, তেমনি বদলে গেছে সামাজিক চিত্রও। বেড়েছে জমির দাম।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের পরিচালক সৈকত আকবর জানান, এই প্রকল্পে দেশি-বিদেশি ২৫ হাজার প্রকৌশলী-শ্রমিক সর্বদা কাজ করছেন। রাশিয়া, বেলারুশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৫ হাজার বিদেশি শ্রমিক ও কর্মকর্তারা দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। বাকিরা দেশের।
ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসহাক আলী মালিথা বলেন, হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না, এখানে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

রূপপুরের নাম এখন আন্তর্জাতিক মহলে। রাশিয়ানদের পদচারণায় রূপুপর যেন একখণ্ড রাশিয়া পল্লীতে পরিণত হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ কিরণ বলেন, অভাব-অনটনের কারণে আগে এসব গ্রামে প্রায়ই পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ, দেনা-পাওনার নালিশসহ নানা ধরনের কলহ নিরসন করতে বিচার সালিশ করতে হতো। বেকারত্ব দূর হওয়ায় গ্রামে এখন আর সে পরিবেশ নেই। পারিবারিক, সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরেছে। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের পদচারণা রয়েছে এখানে। সব মিলে রূপপুর এখন যেন রুশ নগরীতে পরিণত হয়েছে।
পশ্চিম রেল পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহিদুল ইসলাম জানান, রূপপুর প্রকল্পের ভারী যন্ত্রপাতি রেলপথে আনা-নেয়ার জন্য ৩৩৫ কোটি টাকা খরচে ২৬ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পার হলেও সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে উদ্যোগটিতে গতি আসে। চুক্তি হয় রাশিয়ার সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পুরোদমে কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়