ইজিবাইকচালককে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬ : মাদকের টাকা জোগাতে ছিনতাই

আগের সংবাদ

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে ডিজিটাল ছোঁয়া

পরের সংবাদ

প্রোটিয়া বধের মিশনে মাঠে নামছে ক্যারিবীয়রা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ যাত্রা হোঁচট দিয়ে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন ৫৫ রানের লজ্জায় ডুবেছে ক্যারিবীয় দানবরা। নিজেদের ফিরে পাওয়ার মিশনে গেইল, পোলার্ডরা আজ মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকার। অন্যদিকে সুপার টুয়েলভের শুরুটা ভালো হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই তারা হেরেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেমিফাইনাল দৌড়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে তাই আজ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জ¦লে উঠতে হবে ডি ককদের।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে তিন বার। সে পরিসংখ্যানে অবশ্য এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন বারের দেখায় দুই বারই জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। একবার জয় পেয়েছে ক্যারিবীয়রা। বিশ্বকাপে দুই দলের প্রথম দেখা ২০০৭ সালে জোহানেসবার্গে। সেদিন টি-টোয়েন্টিতে প্রথম গেইল ঝড় দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তার ৫৭ বলে ১১৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে প্রোটিয়াদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৬। তবে নিজেদের ঘরের মাঠ, আবহাওয়া ভালোই জানাশোনা আফ্রিকানদের। ১৭.৪ ওভারেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ক্যারিবীয় বোলারদের তুলাধুনা করে ২০৬ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য টপকে যায় প্রোটিয়ারা। পরের আসর, ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ফের দেখা হয় দুই দলের। সেদিন গেইল তার তাণ্ডব চালাতে পারেনি। ফলাফল ১৮৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৬৩ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বশেষ তাদের দেখা হয় ২০১৬ সালে ভারতের মাটিতে। নাগপুরে এদিন দুই আসরে হারের প্রতিশোধ তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা। ১২৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৪ ওভারে ৩ উইকেটের জয় তুলে নেন গেইলরা।
বিশ্বকাপে বাইরে দুই দলের মধ্য মোট দেখা হয়েছে ১২ বার। সেখানেও অবশ্য এগিয়ে প্রোটিয়ারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচ জয়ের বিপরীতে সাত জয় তুলে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দুই দলের দেখা হয়েছে পাঁচবার। পাঁচটি ম্যাচই হয়েছে চলতি বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরের মাটিতে। সেখানেও এগিয়ে প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকার তিন জয়ের বিপরীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় দুই ম্যাচে।
এদিকে র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের ব্যবধান চার। দক্ষিণ আফ্রিকার আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান করছে পাঁচে, অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়ে। তবে র‌্যাঙ্কিং কিংবা পরিসংখ্যান যাই থাকুক টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো দলকে কাবু করার ক্ষমতা রাখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশেষ করে গেইল, পোলার্ড, ব্রাভো, রাসেল, হেটমায়াররা যেদিন জ¦লে ওঠেন, সেদিন রীতিমতো ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায় প্রতিপক্ষের বোলিং শিবিরে। তবে ঝড় থামানোর ভালো মন্ত্র জানেন প্রোটিয়া বোলাররাও। তাবরিজ শামসি, রাবাডাদের বোলিং তোপে ভেস্তে যেতে পারে ক্যারিবীয় ব্যাটিং দুর্গ। তারপরও প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান রাসি ভ্যান ডার ডাসেনের রোষানলে পড়তে পারেন ক্যারিবীয়রা বোলার শিবির। সব মিলিয়ে কেউ কারো থেকে কম নয়। বলা যায় লড়াইটা হবে শেয়ানে শেয়ানে।
ক্রিকেটের তিন সংস্করণের মধ্যে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ সংস্করণ টি-টোয়েন্টি। সারা দুনিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টিতে আলো ছড়ান ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররা। সব সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলা না হলেও বিশ্বকাপ আসরে ঠিকই দেশের জার্সি গায়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেন গেইল, ব্রাভো, পোলার্ডরা। চার ছয়ে বিশ্বের প্রতিটি টি-টোয়েন্টি লিগ ধাপিয়ে বেড়ানো ক্যারিবীয়রাই যদি মাত্র ৫৫ রানে গুঁড়িয়ে যায়, তাহলে এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে? সেটিও কিনা বিশ্বকাপ ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন রানের স্কোর। বিশ্বকাপে আগের পাঁচ বারের দেখায় ইংল্যান্ডকে প্রত্যেক ম্যাচে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে হারের মধুর প্রতিশোধ গত শনিবার দুবাইয়ের মাঠে কিনা এভাবেই নিল ইংলিশরা! প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইংলিশ বোলিং তোপে দিশাহারা হয়ে পড়ে গেইলরা। ১৪.২ ওভারে শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস থামে ৫৫ রানে। ২.২ ওভার বল করে ২ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। তাইমল মিলস ও মইন আলী তুলে নেন ২টি করে উইকেট। জবাবে ব্যাট করতে ৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। তবে সে বিষাদের স্মৃতি ভুলে আবার চার ছয়ে আসর মাতাবেন ক্যারিবীয়রা সে প্রত্যাশা সমর্থকদের।
এইদিকে বিশ্বকাপ যাত্রার প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেয়িার বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে গত শনিবার আবুধাবির মাঠে হারলেও লড়াইটা দারুণ চালিয়েছে প্রোটিয়ারা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৮ রানে থামে ডি ককদের ইনিংস। স্বল্প লক্ষ্যে ব্যাট করতে থেমে কম বেগ পায়নি অজিরা। জয় তুলে নিতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ১৯.৪ ওভার পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। সেদিন হয়তো জ¦লে উঠতে পারেনি প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮৭ রানের লক্ষ্য মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে যেভাবে জয় তুলে নিয়েছে, একইভাবে খেলতে থাকলে বিশ্বকাপে তাদের প্রতিরোধ করা দুরূহ হবে প্রতিপক্ষদের জন্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়