চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা : চালকের সহকারী শাহীরুল এখন কোটিপতি

আগের সংবাদ

তিস্তার তাণ্ডবে লালমনিরহাটে পথে বসেছে হাজারো পরিবার

পরের সংবাদ

সিলেটে ইউপি নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র’ মোড়কে বিএনপি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবার এমন কথা বললেও সিলেটের আসন্ন ইউপি নির্বাচনে এর উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রায় সবকটি ইউনিয়নেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতারা। তবে দলীয় ব্যানারের পরিবর্তে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন তারা।
সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে অংশ না নেয়া প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুদিন আগেই বলেছিলেন ‘বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে দলীয়ভাবে কোনো নির্বাচনেই অংশ নিবে না। কারণ বর্তমান সরকার জবরদস্তিমূলক দখলদার সরকার। এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’ সে সময় দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে বহিষ্কারও করা হয় সাবেক সাংসদ শফি চৌধুরীকে। তবে দলটির এমন সিদ্ধান্ত তৃণমূলে মেনে নিতে রাজি নন অনেক নেতাকর্মী।
দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সিলেট জেলার তিনটি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার কথা। এর মধ্যে দশটি ইউনিয়নে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মনোনয়নপত্রও বৈধ বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
জানা গেছে, আগামী ১১ নভেম্বর সিলেট সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ভোট হবে। এর মধ্যে তিনটিতে বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। হাটখোলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। জালালাবাদ ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী আশিক আলী, মুজিবুর রহমান ও ইসলাম উদ্দিন এবং মোগলগাঁও ইউনিয়নে দলটির কর্মী ফজলু মিয়া প্রার্থী হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের চারটিতে বিএনপির সাতজন কর্মী প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ইসলামপুর পূর্ব ইউনিয়নে আলমগীর আলম, ইছাকলস ইউনিয়নে মকবুল আলী, আবুছাদ আবদুল্লাহ ও বর্তমান চেয়ারম্যান কুটি মিয়া, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নে গিয়াস উদ্দিন এবং দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নে শামস উদ্দিন শাহীন ও শাহাব উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
একই দিন নির্বাচন হবে বালাগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে। এর মধ্যে তিনটিতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন বিএনপির তিন নেতা। এ তিনজনই উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল আলম, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মুনিম এবং পূর্ব গৌরিপুর ইউনিয়নে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করা একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে মূলত স্থানীয় জনগণের চাওয়া পূরণেই প্রার্থী হয়েছেন তারা। এক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনার চেয়ে জনগণের চাওয়াকেই বেশি গুরুত্বপূূর্ণ মনে করছেন নেতারা। এ ব্যাপারে হাটখোলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়নে দলীয় ইমেজের বাইরেও আমার একটি নিজস্ব ইমেজ রয়েছে। তাই এলাকাবাসীর প্রত্যাশা আমি যেন প্রার্থী হই। দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। তিনি বলেন, নিজ এলাকার জনসাধারণের কথা ভেবেই এ নির্বাচনে অংশ নেয়া, তবে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান রয়েছে আমার।
তবে বিএনপির এসব নেতাকর্মীকে নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন জেলা বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন, যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কেন্দ্রই সিদ্ধান্ত নেবে।
সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয়, স্থানীয় কোনো নির্বাচনেই যাবে না বিএনপি। কেন্দ্র থেকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কোনো নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে তাই প্রার্থী দেয়া হচ্ছে না। এখন যারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, সেটা তারা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তে করছেন। এখানে দলের কোনো সমর্থন নেই। তিনি বলেন, যারা প্রার্থী হয়েছেন, হচ্ছেন, তাদের ব্যাপারে কেন্দ্র থেকেই সিদ্ধান্ত নেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়