কাগজ প্রতিবেদক : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা না আনতে পারলে সব উন্নয়ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। পরিবহন, সড়কে শৃঙ্খলার সংকট রয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা আনাই আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। সড়ক শুধু একদিন নয়, প্রতিদিন নিরাপদ হতে হবে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সড়ক ভবন অডিটোরিয়ামে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত ‘গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সড়কে শৃঙ্খলার বড় ধরনের সংকট রয়েছে। শৃঙ্খলা ফেরাতে সারাদেশে রাস্তা, ব্রিজ, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, মেরিন ড্রাইভ, টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এমনকি সীমান্ত এলাকায় সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও আমরা সড়কে শৃঙ্খলা আনতে পারছি না। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে আমরা যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের সব উন্নয়ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই সড়কে শৃঙ্খলা আনাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। একদিন সুন্দর ব্যানার, পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড লাগালেই আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে না। এজন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ নিয়ম মানে। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য আমরা দেশের ২২ সড়কে তিন চাকার ছোট যানবাহন ইজিবাইক, নসিমন-করিমন চলাচল নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা অনেক জায়গায় মানা হচ্ছে না।
সম্প্রতি মোটরসাইকেল নতুন উপদ্রুব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা নিয়ম মানছে না। তারা রাজনৈতিক কর্মী ও তরুণ। কিছু রাজনৈতিক কর্মী একসঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নেমে তিনজন বসে, হেলমেটও পড়ে না। এতে বোঝা যায়, তারা দাপট দেখাচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিআরটিএ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া শুরু করেছে। ছুটির দিনে কাজ করে আটকে থাকা লাইসেন্সগুলো দিয়ে দিতে হবে। লাইসেন্সের জট খুলেছে, আগামীতে যেন আর জট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিআরটিএতে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। লেনদেনের মাধ্যমে তদবির বন্ধ করতে হবে। আমি যতদিন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি, ততদিন কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি মেনে নেয়া হবে না। সড়ক নিরাপদ আছে কিনা? সেটাই আমার কাছে বড় বিষয়। সড়কে দুর্ঘটনা কমেছে কিনা, গাড়ির ফিটনেস আছে কিনা, চালকের লাইসেন্স আছে কিনা, চালক গাড়ি চালানোর যোগ্য কিনা? এগুলো আমার দেখার বিষয়। পাখির মতো মানুষ মরার মর্মান্তিক দৃশ্য মানুষ হিসেবে আমি সইতে পারি না।