ধর্ষণের মামলা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগ নেতার বিয়ে

আগের সংবাদ

বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : খাদ্যের অপচয় কমাতে হবে

পরের সংবাদ

নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন : ৫ বছরেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ৫ বছরেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এই সময়ের মধ্যে মোট উৎপাদন ক্ষমতার ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ¦ালানি থেকে যুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মাত্র ৩ শতাংশ লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়া ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে পিএসএমপি গঠন করা হয়। এরপর গত ৫ থেকে ৬ বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে থাকা মোট ৩৬টি গ্রিড সংযুক্ত করে সরকার সোলার পার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এই প্রকল্প থেকে মোট ২ হাজার ১১০ দশমিক ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০১৬ সালে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যানেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়টি যুক্ত করা হয়। ২০২১ সালের মধ্যে মোট উৎপাদন ক্ষমতার ১০ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার ৪৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ৫ বছরে মাত্র ৩ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) সূত্র জানায়, বতর্মানে দেশে মোট সাড়ে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে এখন ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়া কথা। কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে মাত্র ৩ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে। অর্থাৎ সৌরশক্তি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ ৭১৬ দশমিক ৭৩ মেগাওয়াট। স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দীন জানান, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা খুঁজে বের করে তা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে কাজ করছি। ২০২১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা আমাদের লক্ষ্য। নবায়নযোগ্য জ্বালানি এখন টেকঅফ পর্যায়ে আছে। এখন শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয়ের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। ২০১৩ সালের তুলনায় ২০৩০ সালে ২০ শতাংশের বেশি জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে চাই।
জানা গেছে, নবায়নযোগ্য জ¦ালানি খাতে ২৬টি প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ মেগাওয়াটের ময়মনসিংহ, ৭ দশমিক ৫ মেগাওয়াট কাপ্তাই, পঞ্চগড়ে ৮ মেগাওয়াট, ২০ মেগাওয়াট টেকনাফ এবং ৩ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সরিষাবাড়ি সৌর পার্ক রয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রথমত জমির সংকট রয়েছে। এ ধরনের প্রকল্প করতে প্যানেল স্থাপনের জন্য অনেক জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৩ একরের বেশি জমির প্রয়োজন হবে। দ্বিতীয়ত মূলধন প্রয়োজন। যন্ত্রাংশ কিনতে অর্থের দরকার যা প্রয়োজন অনুসারে পাওয়া যাচ্ছে না। তৃতীয়ত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, ২০১৫ সাল থেকে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। কাজও শুরু হয়েছে। প্রথমে ৫ শতাংশ, পরে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু জমির সংকট, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
প্রসঙ্গত, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রধান উৎস হচ্ছে সৌরশক্তি, হাইড্রো, বায়োগ্যাস, বায়োমাসকে, জিয়োথারমাল, ওয়োভ ও টাইডাল এনার্জি। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সবচেয়ে সম্ভাবনাময় উৎস হচ্ছে সৌরশক্তি।
সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে যার সিংহভাগই এসেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অফগ্রিড এলাকায় স্ট্যান্ড এলোন হিসেবে স্থাপিত সোলার হোম সিস্টেম থেকে। স্রেডার তথ্য অনুযায়ী, সোলার হোম সিস্টেম এরই মধ্যে প্রায় ৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়