তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন : পূর্ণ প্যানেলে জয়ী কাজিম-আয়েজ পরিষদ

আগের সংবাদ

যুদ্ধাপরাধ বিচারে স্থবিরতা ; বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এগিয়ে নিতে সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয়! ট্রাইব্যুনালেও জনবল সংকট

পরের সংবাদ

হোতাসহ গ্রেপ্তার ৫ : শতাধিক মানুষের কিডনি বিক্রি করেছে চক্রটি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কিডনি কেনাবেচা চক্রের অন্যতম হোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চক্রের হোতা মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আব্দুল মান্নান (৪৫), ও মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)। গত সোমবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জয়পুরহাট ও রাজধানীর নর্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীদের ৪টি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশ কিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, চক্রটি প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য রোগীদের কাছ থেকে নিত ১৫-২০ লাখ টাকা। তবে কিডনি দাতাদের ৩-৪ লাখ টাকা দেয়ার কথা বললেও তারা পেতো ২ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক মানুষ এ চক্রের মাধ্যমে কিডনি বিক্রির জন্য পার্শ্ববর্তী দেশে গেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবী মানুষরাই তাদের টার্গেট। তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য প্রলুব্ধ করা হতো।
এ চক্রকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল দুপুরে কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সদস্যরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাহক ও ডোনারদের আকৃষ্ট করছে। একই সঙ্গে অপরাধের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করছে। ফলশ্রæতিতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি আরো জানান, চক্রের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। তারা ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবৈধ কিডনি কেনাবেচার সম্পূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে। চক্রের প্রথম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
চক্রের ২য় দলটি ১ম দলের চাহিদা মোতাবেক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবি মানুষ চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে ৩য় গ্রুপ প্রলোভনের শিকার ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হওয়ার পর তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ভুক্তভোগী ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে।
তিনি বলেন, এই চক্রের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারকে বিদেশের এয়ারপোর্ট অথবা স্থলবন্দরে রিসিভ করা থেকে শুরু করে হাসপাতালের ডকুমেন্টেশন, অস্ত্রোপচারসহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষে ভিকটিমদের বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে বিমান ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত এলাকার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠায়।
চক্রের মূলহোতা শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত কিডনি কেনাবেচা চক্রের সঙ্গে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। ফেসবুকে বাংলাদেশ কিডনি ও লিভার পেশেন্ট চিকিৎসা সেবা এবং কিডনি লিভার চিকিৎসা সেবা নামে দুটি পেজের এডমিন সে। চক্রের অন্যতম সদস্য আব্দুল মান্নান মূলত ভুক্তভোগী কিডনি ডোনারদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এই কাজে প্রলুব্ধ করত। এর আগেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার হন তিনি। তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ৬টির বেশি মামলা রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, দেশের কোনো হাসপাতালের তথ্য আমরা পাইনি। তবে তারা পার্শ্ববর্তী দেশে কোনো হাসপাতাল-ক্লিনিকে কিডনি প্রতিস্থাপন করতেন সে বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে আসামিদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়