বাংলাদেশকে জমি লিজ দিতে চায় আফ্রিকা

আগের সংবাদ

যে কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শেষ হয় না

পরের সংবাদ

১৭ বছর ধরে একই উপজেলায় কর্মরত : বেপরোয়া শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীরা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে একই উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ১৯৯৩-২০০৪ সাল এবং ২০১৫-২০২১ দুই মেয়াদে এ উপজেলায় একই পদে চাকরি করছেন। তার বাড়ি জেলার সরাইলের পার্শ্ববর্তী আশুগঞ্জে। একই উপজেলায় চাকরির সুবাদে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। তার ভয়ে সর্বদা তটস্থ থাকেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। অবৈধভাবে ভাতা গ্রহণ, ঘুষ বাণিজ্য, স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষককে এমপিও করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি এ শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যক্তিগত কাজ করে না দেয়ায় চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীকে অত্যাচার ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। সেপ্টেম্বর মাসে সরাইল উপজেলার ইউআইটিআরসিই সেন্টারের (শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) পরিচ্ছন্নকর্মী নাছির উদ্দিন খান তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, নাছির উদ্দিন খান ২০১৯ সালের ২৩ জুন সরাইলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যোগ দেন। কিছুদিন পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান তাকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার, রান্না-বান্না, কাপড় ধোয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে থাকেন। এতে তার ব্যাঘাত ঘটে নিয়মিত কাজে। শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যক্তিগত কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধরসহ অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এমনকি ওই শিক্ষা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের সঙ্গেও নানা অজুহাতে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। বেপরোয়া আচরণের বিষয়ে ইউআইটিআরসিইর সহকারী প্রোগ্রামারকে অবগত করলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, ইউআইটিআরসিই সেন্টার পরিচালনাকালে প্রশিক্ষণার্থীদের নাস্তার ৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও দিতেন ১০-১৫ টাকার নাস্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনটিআরসি কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা এবং শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির জন্য ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি নির্বাচনের সময় ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। প্রতি বছর মেয়াদোত্তীর্ণ বই দরপত্র ছাড়াই বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সরাইল উপজেলায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (ইউআইটিআরসিই) ট্রেইনার হিসেবে তার কোনো ট্রেনিং না থাকলেও রুটিনে নাম ঢুকিয়ে অন্যকে দিয়ে ক্লাস নিয়ে ভাতা নিচ্ছেন।
এছাড়া ২০১৯ সালে সরাইলের দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে তার আত্মীয় মো. আমিনুল ইসলামকে চাকরি দিতে গিয়ে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক মো. মনিজুর রহমানকে অতিরিক্ত কোটার শিক্ষক দেখিয়ে এবং শিক্ষক বিবরণীতে মনিজুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে ডিজিতে আমিনুল ইসলামের কাগজপত্র পাঠিয়ে এমপিও করেন। এ ঘটনায় মনিজুর ইসলাম ছয়জনকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার ৬ নম্বর আসামি সহিদ খালিদ জামিল খান। এ বিষয়ে সরাইল উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ জামিল খান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, একটি চক্র তার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা চালাচ্ছে।
এ ঘটনায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফি উদ্দিনের কাছে জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়