হাসেম ফুডে অগ্নিকাণ্ড : ৩ মাস পর দগ্ধ ছেলের মরদেহ পেলেন বাবা

আগের সংবাদ

রোহিঙ্গাদের অস্ত্র-অর্থের উৎস কী

পরের সংবাদ

জন্মদিন : প্রিয় রাজকুমার কথন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় প্রবাদপ্রতিম কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালে। সত্তর বছরের তরুণ এই কবির গ্রন্থাকারে প্রকাশিত কবিতার সংখ্যাও তাঁর বয়সের কাছাকাছি। সম্ভবত একাত্তর। সংখ্যায় সামান্য হলেও অসামান্য এই কবিতাগুলি তাঁকে জনপ্রিয়তার এমন এক শিখরে পৌঁছে দিয়েছে, যা যে কোনো কবির কাছে প্রায় স্বপ্নের মতো। তাঁর অগণিত ভক্তদের চোখে তিনি বাংলা কবিতাজগতের প্রিয় রাজকুমার।
তাঁর কাব্যজীবন নিয়ে কিছু লেখার আগে চোখ ফেরাই তাঁর জীবনের শুরুর দিনগুলোয়। শৈশবে মাতৃহারা এই কবির জন্ম নেত্রকোনার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তাঁর শৈশব-কৈশোর এবং প্রথম যৌবন কাটে এই শহরের প্রাকৃতিক পরিবেশে। নেত্রকোনার দত্ত হাই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ভর্তি হন নেত্রকোনা কলেজে। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েও তিনি পারিবারিক মান অভিমানের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন মুন্সীগঞ্জ হাই স্কুলে। ১৯৬৮তে আবার ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কবিতার আগুন বুকে নিয়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন সৃষ্টিশীলতায়। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময়ে লেখা তাঁর কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ জনপ্রিয় হয়ে যায় রাতারাতি-
‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’
মিছিলে, স্লোগানে, দেওয়ালে মূর্ত হয়ে ওঠে তাঁর এই দুটি পঙ্ক্তি। এই কবিতাটি তাঁর প্রথম কবিতা নয়। এর আগেও কয়েকটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল কবির। কিন্তু এই সাহসী উচ্চারণের মধ্যেই পাঠকরা খুঁজে পেয়েছিলেন এক স্বদেশপ্রেমী কবিকে, যিনি সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন দ্বিধাহীন সরল ভাষায়। ব্যক্তিজীবন ও মুক্তিযুদ্ধের আবহে উচ্চারিত তাঁর বুকের আগুন তিনি পৌঁছে দেন অগণিত পাঠকের চিন্তায়, মননে
‘যদি কেউ ভালোবেসে খুনি হতে চান
তাই হয়ে যান
উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়’
১৯৭১ সালে তিনি লিখলেন ‘দুঃসময়ে আমার যৌবন’। পুরো কবিতাটি মাত্র পাঁচ পঙ্ক্তির-
মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে
এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই,
উত্তরপুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো
আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ
শুধু যদি নারীকে সাজাই
এমন দুয়েকটি কবিতাই কবি হেলাল হাফিজকে নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা দিয়েছিল সে সময়। পরবর্তীকালে তাঁর কবিতায় প্রেমের অভিব্যক্তি যুবক যুবতীদের আবেগমথিত করে নিঃশব্দ ব্যঞ্জনায় ধিকিধিকি জ্বালিয়ে দেয় স্বপ্নের আগুন। তাঁর কবিতা সম্পর্কে একজন সম্পাদক লিখেছিলেন-
‘বিস্ময়ের বিষয়, হেলাল হাফিজের কবিতা ব্যতীত তরুণ-তরুণীর প্রেমও থেকে যায় অসম্পূর্ণ।’
যথার্থই। অসম্ভব মায়াবী উচ্চারণ। ‘হিরনবালা’ কবিতায় তিনি লিখলেন-
‘আঙুল দিয়ে তোমার আঙুল ছুঁয়েছিলাম বলেই আমার
আঙুলে আজ সুর এসেছে,…’
এমন ছন্দোময় প্রকাশের মধ্যে যে মায়ামাখা স্পর্শ, তা পাঠকদের মুগ্ধ তো করবেই। কবি হেলাল হাফিজ সম্পর্কে কোথাও যেন লিখেছিলাম ‘তিনি বাংলা কবিতার নিঃসঙ্গ রাজকুমার। কবিতা পড়ে তো বটেই, ‘সমধারা’ কবিতা উৎসবে ওঁর সঙ্গে আলাপ হয়েও একই কথা মনে হয়েছে আমার। মনে পড়েছে তাঁর এক পঙ্ক্তির একটি কবিতা ‘তুমি আমার নিঃসঙ্গতার সতীন হয়েছো’।
‘অচল প্রেমের গদ্য’ সিরিজের ১৩নং কবিতাটি এক অনবদ্য সৃষ্টি। এই সভ্য পৃথিবীতে আমরা প্রায় সবাই নিঃসঙ্গ। অসংখ্য মানুষের মধ্যেও একা। সারাদিনের হৈচৈ শেষে প্রত্যেকেই ফিরে যাই সেই নিজস্ব নির্জন পৃথিবীতে। তখন স্বপ্ন কিংবা স্বপ্নহীনতা, বিশ্বাস, অবিশ্বাস, লোভ, ঈর্ষা, নষ্ট প্রেমের যন্ত্রণা, সদ্য প্রেমের আনন্দ, সব কিছুই কেমন যেন অর্থহীন মনে হয়। তখন আমরা কেউই আমাদের ‘নিঃসঙ্গতার সতীন’ চাই না। ব্যক্তিগত আলাপের মুগ্ধতা ছেড়ে তাঁর জীবন ও কবিতায় ফেরা যাক। দেশ স্বাধীন হবার পর, কবি ‘দৈনিক পূর্বদেশ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন ১৯৭২ সালে। সরকারি আদেশে এই পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। তখন তিনি ‘দৈনিক দেশ’-এর সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন ১৯৭৬ সালে। সাংবাদিকের চোখে দেখা সমাজ, রাজনীতি এবং মানুষ তাঁকে কবিতা থেকে দূরে রাখতে পেরেছে বলে মনে হয় না। কবিতা তিনি লিখেছেন। হয়তো প্রকাশ করেননি।
১৯৬৯ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে লেখা ৫৬টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে। যতদূর জানি, প্রায় ১৫০ কবিতার মধ্যে থেকে তিনি বেছে নিয়েছিলেন মাত্র ৫৬টি কবিতা। প্রকৃত কবিকেই মানায় এই সংযম। তাঁর গগনচুম্বী জনপ্রিয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই কাব্যগ্রন্থটির কুড়িটিরও বেশি সংস্করণ হয়েছে বলে শুনেছি। মাত্র একটি কবিতার বই কোনো কবিকে খ্যাতির এমন শিখরে নিয়ে যায়, যেতে পারে, এই অসম্ভব ধারণাকে সত্য করে তুলেছে এই কবির কবিতা। একেবারেই স্বতন্ত্র ধারার কবি হেলাল হাফিজের কবিতা নিয়ে বিভিন্ন আলোচক বিভিন্ন কথা বলেছেন। কেউ বলেছেন তিনি মানুষের কবি, নিসর্গের কবি। তাঁকে তারুণ্যের কবি বলেছেন কেউ কেউ। প্রেম, বেদনা ও প্রতিবাদের বিবৃতিই তাঁর কবিতা এমন সুন্দর মূল্যায়ন করেছেন আমার আর এক প্রিয় কবি। তাঁর কবিতার নান্দনিক উৎকর্ষ, বিরহমাখা উচ্চারণ নিয়েও কিছু লেখা পড়েছি। ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি মূল্যায়ন আমাকে ঋদ্ধ করেছে। কিন্তু আমি কোনো তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মধ্যে না গিয়ে আমার মুগ্ধতার কথাটাই বলার চেষ্টা করবো।
যে কোনো কবির কবিতাই এক পরিশুদ্ধ মগ্ন উচ্চারণ। যা বুদ্ধি নয়, হৃদয় থেকে উৎসারিত শব্দমালা। শব্দের জাদু এই কবির কলমে। সংযম তাঁর মননে, উচ্চারণে। সামান্য দুটি পঙ্ক্তিতে তাই তিনি প্রকাশ করেছেন ‘অশ্লীল সভ্যতা’র ছবি। যে সভ্যতার বিকৃত প্রভাবে শিক্ষিত মানুষেরাও আত্মমুখী রোবট হয়ে পড়ছে ক্রমশ। এই আপাতসভ্য মানুষের প্রতি তাঁর শ্লেষাত্মক চাবুক- নিউট্রন বোমা বোঝো মানুষ বোঝো না। [অশ্লীল সভ্যতা ]
হেলাল হাফিজের কবিতায় আপাতদৃষ্টিতে মিলনের থেকে বিরহের সুরই বেশি বাজে।
প্রকৃত অর্থেই তিনি কষ্ট ফেরি করা একজন কবি। সারাজীবন ধরে জড়ো করা নানান রঙের মালটিকালার কষ্ট, প্রেমের কষ্ট, ঘৃণার কষ্ট, নানারকম হৃষ্টপুষ্ট কষ্ট তিনি ফেরি করতে চেয়েছেন ‘ফেরিওয়ালা’ কবিতায়-

প্রেমের কষ্ট ঘৃণার কষ্ট নদী এবং নারীর কষ্ট
অনাদর ও অবহেলার তুমুল কষ্ট
ভুল রমণী ভালোবাসার
ভুল নেতাদের জনসভার
হাইড্রোজেনে দুইটি জোকার নষ্ট হবার কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট
কেন জানি না আমার মনে হয়, দুঃখী মানুষজনের কাছে কষ্ট ফেরি করতে করতে তিনি নিজের কষ্টগুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে যেন বলতে চেয়েছেন- ‘তোমাদের দুঃখের কথা, বঞ্চনার কথা, অপ্রাপ্তি ও অপূর্ণতার কথা আমি জানি। আমার কষ্টগুলোও তোমাদের মতো। ভালোবাসার, সৎ জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অবহেলার বিবর্ণ মুহূর্তের সব কষ্ট। ‘এভাবেই তিনি যেন নিজেকে একাত্ম করে নেন সকল দুঃখী মানুষের সঙ্গে। তাই কোনো এক আলাপচারিতায় তিনি বলেছিলেন- ‘আলাদা মানুষ কিংবা আলাদা দুঃখবোধ থাকলেও সামগ্রিকভাবে সবটাই এক সূত্রে গাঁথা। ‘শাশ্বত প্রেম ও মানবতায় বিশ্বাসী এই কবিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ১৯৬৯-৮৬ প্রায় ১৭ বছর পর তিনি কবিতার কাছে, পাঠকসমাজের কাছে ফিরে আসার কথা ভাবলেন কেন? উত্তরটা আছে তাঁর ‘যাতায়াত’ কবিতায়- জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো
শুনলো না কেউ ধ্রæপদী ডাক
চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি
বললো না কেউ তরুণ তাপস এই নে চারু শীতল কলস।
…………
কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ‘কবিতাই আমার প্রথম, প্রধান ও শেষ গন্তব্য। কবিতার সঙ্গে আমার প্রেম আমার অস্থিমজ্জায়। অক্সিজেন ও শস্যদানার মতোই কবিতা ও প্রেম আমার কাছে অত্যন্ত জরুরি। সারাজীবন প্রেম ও কবিতার মধ্যেই বসবাস করেছেন তিনি। কখনো লিখেছেন, কখনো লেখেননি। কবিতা কিন্তু সারাক্ষণ ছিল তাঁর হৃদকমলে। ছিল প্রেম, ছিল বিরহ। ছিল যন্ত্রণা। ছিল কষ্টমাখা কলম। যা তাঁকে ভেঙে পড়তে দেয়নি। শিখিয়েছে নির্বিকার জীবনযাপন। যেখানে আর্তি আছে, আর্তনাদ নেই। বেদনা আছে, উন্মত্ত হাহাকার নেই। কালের নিয়ম মেনে সুখদুঃখ, অনুরাগ, বিরাগ সবই তিনি মেনে নিয়েছেন নিঃশব্দে, নির্বিকারে। লিখেছেন-
‘এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে,
এক মানবী কতোটাই বা কষ্ট দেবে।’
কোনো এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি হেসে বলেছিলেন- ‘জীবনে প্রেম এসেছে বহুবার বহুভাবে। কিশোরবেলা থেকেই। সারাক্ষণ প্রেমের মধ্যেই থাকি। এখনো আছি। বহমান এই প্রেম সত্ত্বেও তিনি কি নির্ণয় করতে পেরেছিলেন নারী প্রকৃতি। না বোধহয়। অনির্ণীতই থেকে গিয়েছেন তাঁরা।
‘নারী কি নদীর মতো / নারী কি পুতুল, /নারী কি নীড়ের নাম/
টবে ভুল ফুল।/নারী কি বৃক্ষ কোনো /না কোমল শিলা, /
নারী কি চৈত্রের চিতা /নিমীলিত লীলা।’
এভাবেই অনেক কিছুই অনির্ণীত থেকে যায় জীবনে। সমাজ, রাজনীতি, শাসন, অপশাসন, বন্ধু, শত্রæ, ভালোবাসা, ঘৃণা এবং আরো অনেক কিছুই। স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গের টানাপড়েনে নাগরদোলার মতো ঘুরতে থাকে জীবন। পরিণত মননে নতুন করে দেখতে শিখি সবকিছু। স্বাধীনতার স্বপ্ন তখন বাস্তবায়িত হয়েছে, স্বপ্নের সমাজ গড়ে ওঠার অপেক্ষায় দেশের মানুষ। শত্রæনিধন শেষে নতুন দেশ গড়ার কাজে ব্রতী হয়েছেন সবাই। ১৯৭২ সালে কবি লিখলেন, ‘অস্ত্র সমর্পণ’
‘যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,
যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে
ভেঙে সেই কালো কারাগার
আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।’
সব দেশেই সমাজ, সংস্কৃতি এমনকি রাজনীতিও এগিয়ে যায় নিজস্ব নিয়মে। সভ্যতা মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় ক্রমশ। চেনা মানুষও অচেনা হয়ে যায় রাতারাতি। পরস্পরকে জানার বা বোঝার প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে শুধু। ১৯৮৪ সালে লেখা কবির কবিতা ‘ঘরোয়া রাজনীতি’
‘ব্যর্থ হয়ে থাকে যদি প্রণয়ের এতো আয়োজন,
আগামী মিছিলে এসো
স্লোগানে স্লোগানে হবে কথোপকথন’

দীর্ঘ ২৬ বছর পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। প্রথম গ্রন্থের ৫৬টি কবিতার সঙ্গে ‘অচল প্রেমের পদ্য’ সিরিজের ১৩টি কার্ড ও নতুন দুটি কবিতা যোগ করে, মোট ৭১টি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিভাষিক কাব্যগ্রন্থ। ২৬ বছর পরে তিনি যখন মাত্র ১৫টি নতুন কবিতা উপহার দেন পাঠকদের, প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই দীর্ঘ সময় তিনি কি কবিতা লেখেননি? শুনেছি, তিনি নাকি কোন এক বন্ধুকে বলেছিলেন, ‘লিখেছি, কিন্তু রাখিনি, ছিঁড়ে ফেলেছি।’ মনের মতো হয়নি বলে ‘একজন প্রকৃত কবির পক্ষেই এমন নির্মোহ থাকা সম্ভব। তাঁর কবিতায়, ব্যবহারে, জীবনযাপনে ছড়িয়ে আছে এক উদাসীন নির্লিপ্ততা এবং প্রখর পরিমিতিবোধ। সঠিক শব্দ নির্বাচন, বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যথাযথ প্রকাশভঙ্গিমা, পরিশুদ্ধ আবেগ ও আবেগহীনতা ঋদ্ধ করেছে তাঁর কবিতাকে।
কবি হেলাল হাফিজের কবিতায় জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, প্রতিবাদ, স্বদেশপ্রীতি মানবপ্রেম নিয়ে অনেকে অনেক কথাই হয়তো বলবেন, কিন্তু সব আলোচনার ঊর্ধ্বে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে তাঁর কবিতা। কবিও বোধহয় জানেন তাঁর কবিতা কীভাবে আলোড়িত করে তাঁর তন্নিষ্ঠ পাঠকদের, তাই উৎসর্গ-
‘আমার কবিতা আমি দিয়ে যাবো
আপনাকে, তোমাকে ও তোকে।’
আগুন বা মানুষের সোনালি সন্ত্রাস ভুলে কবিতার মুখোমুখি দাঁড়াতে শিখিয়েছেন কবি হেলাল হাফিজ। কিংবদন্তি এই কবির সুস্থ, দীর্ঘ জীবন কামনা করি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়