প্রণোদনা ঋণের জন্য ঘুষ লাগে ২৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর

আগের সংবাদ

অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে : করোনার প্রকোপ কমার পর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও বিষণ্নতার বড় আঘাত আসছে

পরের সংবাদ

খোলাবাড়ী-দেওয়ানগঞ্জ প্রধান সড়ক ব্রহ্মপুত্রে বিলীন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়েছে খোলাবাড়ী ও দেওয়ানগঞ্জ প্রধান সড়ক। এতে চরম বিপাকে পড়েছে বাহাদুরাবাদ নৌথানাসহ ১০ হাজার মানুষ। ভাঙনের হুমকির মধ্যে রয়েছে ১০টি গ্রাম।
জানা গেছে, সড়কটি গত তিন বছর ধরে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙনের হুমকির মুখে ছিল। সময় অনুযায়ী ভাঙনের পদক্ষেপ না নেয়ায় দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী ৫ মিটার পাকা সড়ক নদে বিলীন হয়ে উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছে বাহাদুরাবাদ নৌথানা পুলিশসহ হাজার হাজার পথচারী। দীর্ঘদিন ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃশেষ হয়েছে চিকাজানী খোলাবাড়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মসজিদ-মাদ্রাসা, বাজারসহ ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডের পরিবার। চলতি বছর বর্ষার শুরুতেই ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়িয়া ঢলে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, দশানি, জিঞ্জিরাম নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার চুকাইবাড়ী, চিকাজানী, বাহাদুরাবাদ, হাতিভাঙ্গা, চর আম খাওয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকা ও সড়ক ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। যমুনা বিপদসীমার ১৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও পৌর শহরের নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
ইউপি সদস্য আ. মালেক জানান, বাহাদুরাবাদ নৌথানা, খোলাবাড়ী, মোন্নে বাজার, ফারাজিপাড়া, কাজলাপাড়া, মণ্ডলবাজার, গুচ্ছগ্রাম, বাহাদুরাবাদসহ ১০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি গত দুই বছর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত থাকলেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
মণ্ডলবাজারের স্থানীয়রা জানান, ২০২০ সালে সড়কটি প্রথম ভাঙন শুরু হয়। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রথমে নদীভাঙন শুরু হলে স্থানীয়ভাবে কিছু বালুর বস্তা এবং বাঁশ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
এ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়কটি ভাঙনের কবলে পড়ে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সড়কের এক পাশ দিয়ে যতটুকু মাটি রয়েছে, সেখান দিয়ে পায়ে হেঁটে বহু কষ্টে চলাচল করছেন লোকজন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, চরম অবহেলায় থাকা সড়কটি রক্ষার কোনো ব্যবস্থা কেউ গ্রহণ করেননি। সেজন্য এ জনপদের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটি এখন বিচ্ছিন্ন। চিকাজানী ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজউদ্দিন আহাম্মেদ জানান, অনেক চেষ্টা করেও সড়কটি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন থেকে রক্ষা করা যাইনি। এলজিইডি আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রশি টানাটানিতেই সড়কটির বেহাল অবস্থা। সড়কটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোলায়মান হোসেন জানান, দুই বছর ধরে সড়কটি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। গত বছর ব্যক্তিগতভাবে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে স্থানীয়দের দিয়ে বাঁশ ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে এ বছর হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রসিদ জানান, ভাঙনের কবলে পড়ে সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই সড়কটি মেরামত করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, নদীভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আপদকালীন বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে নদীর তীর সংরক্ষণে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিয়ে নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়