জাসদের পাল্টা প্রশ্ন : ১৫ আগস্ট সেলিম মার্কিন দূতাবাসে কী করছিলেন

আগের সংবাদ

কারা এই আইএস-কে? আফগানিস্তানে সক্রিয় নৃশংসতম জঙ্গিগোষ্ঠীর কাবুলে হামলার দায় স্বীকার

পরের সংবাদ

প্রথম মাসে রাজস্ব আহরণ ৩৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা : হিলি স্থলবন্দর

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আফতাবুজ্জামান তাজ, হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : করোনা মহামারিতেও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। ফলে স্বাভাবিক রয়েছে রাজস্ব আদায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি খাতে এক মাসে (জুলাই) রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩২৪ টাকা। যা গত অর্থবছরে জুলাইয়ের চেয়ে প্রায় ১০ কোটি (৯ কোটি ৬৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭৬) টাকা কম।
বন্দর দিয়ে সিংহভাগ রাজস্ব আহরণ হয়েছে গম, বিভিন্ন ধরনের পাথর ও মসলা জাতীয় পণ্য আমদানিতে। তবে সম্প্রতি দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এবং হিলিসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সংক্রমণ রোধে এ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অর্ধেকের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। করোনা মহামারিতে রাজস্ব আহরণের এ সফলতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও বন্দরের ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছর শুরুর জুলাইয়ে হিলি স্থলবন্দর থেকে ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩২৪ টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক এ অর্থবছর রাজস্ব আহরণের কোনো লক্ষ্যমাত্রা এখন পর্যন্ত (খবর সংগ্রহ পর্যন্ত) নির্ধারিত হয়নি। গত ২০২০-২১ অর্থবছর শুরুর জুলাইয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা ৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকার বিপরীতে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে।
বন্দরের আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবসায়ীরা জানান, হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানির জন্য একটিমাত্র প্রধান সড়ক যা অপ্রশস্ত, ভাঙাচুরা ও বিভিন্ন খানা-খন্দে ভরপুর। বন্দরের সড়কের বেহাল দশার ফলে সর্বদা দীর্ঘ সময় ধরে যানজট লেগেই থাকে। অতিরিক্ত যানজটের কারণে স্বাভাবিকভাবে ট্রাক চলাচলের ক্ষেত্রে খুব সমস্যা হয়। সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। এ বন্দরে আছে পর্যাপ্ত জায়গার সংকট। বন্দরের শ্রমিক, ট্রাক চালক ও চালকের সহকারীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত শৌচাগার ব্যবস্থা।
১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জন লোকের বিপরীতে রয়েছে গোসলের জন্য মাত্র একটি হাউস ও ১০টি টয়লেট। পর্যাপ্ত শেডের অভাবে বর্ষা মৌসুমে পণ্য লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তারা জানান, এসব প্রতিবন্ধকতা দূর হলে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে রাজস্ব আদায়।
এ ব্যাপারে হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, করোনাকালীন দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং বন্দরের শ্রমিকদের জীবিকার কথা ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চলমান রয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আমদানি-রপ্তানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পূর্বের তুলনায় অনেকটা কমিয়ে আনা হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে হিলি স্থলবন্দর থেকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অধিক রাজস্ব আহরণ সম্ভব হলেও এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বন্দরটিকে আধুনিকায়ন করা হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার যেমন বাড়বে তেমনি রাজস্ব আহরণে মাত্রা আরো অধিক বেশি সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার কামরুল ইসলাম ভোরের কাগজকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দরের সব কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বন্দর দিয়ে ভুট্টা, খৈল, ভুষি, মরিচ, আদা, রসুন, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা জাতীয় পণ্য, চাল ও বিভিন্ন ধরনের পাথরসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো জানান, করোনার মহামারির কারণে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পূর্বের তুলনায় অনেকটা কম হওয়ার কারণে গত জুলাই মাসে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। আমদানি-রপ্তানি বাড়লেই রাজস্ব আহরণ বাড়বে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়