জাসদের পাল্টা প্রশ্ন : ১৫ আগস্ট সেলিম মার্কিন দূতাবাসে কী করছিলেন

আগের সংবাদ

কারা এই আইএস-কে? আফগানিস্তানে সক্রিয় নৃশংসতম জঙ্গিগোষ্ঠীর কাবুলে হামলার দায় স্বীকার

পরের সংবাদ

পারমতিার জগৎ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

: অর্থ-বিত্তের লোভ আমার কোন দিনই ছিলো না; তেমন মোহ থাকলে আমার ডাক্তার হবার বিলম্ব ছিলো না খুব একটা; একটু ধৈর্য ধরতে পারলেই অন্য কোন কলেজে ট্রান্সফার নিয়ে ডাক্তারি পাশ করতে পারতাম। বিয়ের পর আমরা যখন ঢাকায় শিফট করলাম, মাসুম তখনো আমায় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বলেছিলো, কিন্তু আমার আগ্রহ ছিলো না একদম। নতুন একটা সরকারি চাকরি পেয়ে গেলো মাসুম, যে চাকরিতে সুযোগ ছিলো অনৈতিক উপায়ে বিপুল বিত্তের মালিক হবার। যখন আমি টের পেলাম মাসুমের টাকার নেশা ধরে গেছে; তখন আমি ওকে বলেছিলাম, এতো বেশি টাকার তো প্রয়োজন নেই আমাদের! যে টাকা তুমি বেতন পাও, আমরা তাই দিয়ে সংসার চালিয়ে নিতে পারবো; কিন্তু কে শোনে কার কথা! ও টাকার পেছনে ছুটলো পাগলের মতো। ইতোমধ্যে দু’বছরের মধ্যে আমি দু’টি ছেলে সন্তানের মা হলাম। বড় ছেলের বয়স যখন দেড় বছর, তখন আমার ছোট ছেলের বয়স তিন মাস।
: কী বলছো! তোমার ছেলে একজনই না?
: হ্যাঁ। যখন আমার ছোট ছেলের বয়স চার মাস, তখন আমার জীবনে ঘটলো একটা বড় বিপর্যয়। দুই ছেলেই তখন আমার বুকের দুধ খায়। মাসুম এ সময় দুর্নীতি এবং অর্থ কেলেংকারী অপরাধে জড়িয়ে গেলো এবং পুলিশ তাকে বন্দী করে নিলো। বিষয়টি নিয়ে সে সময় পত্র-পত্রিকা এবং টেলিভিশন ফলাও করে প্রচার করলো। নিম্ন আদালতে ওর সাত বছরের কারাদণ্ড হয়ে গেলো। আমি তখন দু’টি দুধের শিশু নিয়ে বিপর্যস্ত! এমন সময়ও আত্মীয়-স্বজন রাগ-অভিমান ভুলে আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। শুধু মেজ’পা গোপনে আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখতো। মেজ’পার বিয়ে হয়েছে বারো বছর, কিন্তু কোন সন্তানের মা হতে পারেনি। আমি যখন মাসুমের মামলায় আপিল করা নিয়ে ধর্ণা দিয়ে ঘুরে ফিরছি বিভিন্ন দুয়ারে, ওকে মুক্ত করতে জেরবার করছি জীবন। এমন দুঃসময়ে মেজ’পা একদিন আমার কাছে প্রস্তাব দিলো, “তুই তো একসাথে দু’টি ছেলেকে যতœ দিতে পারছিস না! ওদের কি মারতে চাস? তুই একা কতো দিক সমলাবি? যদি তুই কিছু মনে না করিস, আমি বলি কী ছোট বাবুটাকে আমায় দিয়ে দে।” প্রচণ্ড ধাক্কা খেলাম আমি। বললাম, “কী বলিস মেজ’পা! ও আমার বুকের দুধ খায়!” মেজ’পা দমলো না, আমায় নানাদিক বোঝালো, ওর নিজের কষ্টটাও শেয়ার করলো। আমারও মনে হলো, অসুবিধা কী, আমারই তো বোন, একটা বাচ্চা পেলে ওর কষ্টটাও দূর হবে আমিও কিছুটা রিলিজ পাবো। অতটা গভীরতায় আমি ভাবতে পারি না, রাজি হয়ে গেলাম; মেজ’পা বললো, “তাড়া করছিস কেনো! মাসুমের সাথে কথা না বলে বাবুকে আমায় দিয়ে দিলে ও মাইন্ড করতে পারে। তুই বরং ওর সাথে কথা বল, ও রাজি হলে আমি বাবুকে নিয়ে যাবো। তাছাড়া তোর কাছ থেকে বাবু নিলে তোর দুলাভাই তোদের ক্ষমাও করে দিতে পারে।”
: তুমি তোমার ছোট ছেলেকে তার হাতে তুলে দিলে?
: হুম। মাসুমের সাথে কথা বলে দিয়ে দিলাম আমার ছেলেকে মেজ’পার হাতে। পরে অবশ্য ওর গর্ভে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হলো; কিন্তু আমার ছেলেকে ও কখনো অবহেলা করেনি। আমার তখন ভালোই লাগতো, ভাবতাম, আমি নিজেও হয়তো এতটা যতœ দিতে পারতাম না। এক অর্থে ছেলেকে কাছে থেকে দেখার জন্যই আমি ঢাকা থেকে শিফট করেছিলাম। মনে মনে আমি চাইতাম আমাকেও আমার ছেলে মা বলে ডাকুক। কিন্তু মেজ’পা ওকে আমায় আন্টি ডাকতে শেখালো।
: সেটা কি তোমার কষ্টের কারণ এখন?
: এতদিন কষ্ট ছিলো না। এখন ওরা বড় হয়েছে। ছোট ছেলে এখন সুইজারল্যান্ডে থাকে। দেশে আসে দশ-পনেরো দিনের জন্য; কিন্তু ওকে এখন আমার কাছে আসতে দিতে চায় না মেজ’পা।
: ছেলে কি জানে ওর জন্মের ইতিহাস?
: হয়তো জেনে থাকবে। আমি কখনো ওকে কিছু বলিনি, কিন্তু ওর আচরণে বুঝতে পারি, হয়তো ও কারো কাছে জেনে থাকবে সব। মেজ’পাকে ফাঁকি দিয়ে ও আমার কাছে এসে বসে থাকে, কখনো আমার কোলে মাথা রেখে আদর পেতে চায়। আমার মেয়ের জন্ম তো মাসুম মামলা থেকে মুক্তি পাবারও দু’বছর পরে। ওকে তো আমরা কখনো বলিনি এসব কথা; কিন্তু সত্য কি চাপা থাকে? হয়তো মেয়েটাও কারো কাছে জেনেছে অনুচ্চারিত সত্য। সে এখন তার বিচ্ছিন্ন ভাইয়ের ভালোবাসা পেতে চায়।
: মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর মাসুম কি ওর চাকরিটা ফিরে পেলো?
: না। চাকরি হারিয়ে ও ব্যবসা শুরু করলো। ব্যবসায় অর্থযোগও হলো প্রচুর। টাকার অভাব থাকলো না, কিন্তু কারাদণ্ডের গøানি মুছে যাচ্ছিলো না। আত্মীয়স্বজনের সাথে সম্পর্ক করতে আমাদের কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে অনেক। এখন আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, সব সম্পর্কই অর্থের মানদণ্ডে নির্ধারিত হয়। ছেলে-মেয়ে এখন ঢাকায়, ব্যবসার প্রয়োজনেও মাসুমকে ছুটতে হয়; কিন্তু আমি ক্রমশ একা হয়ে গেছি; আমার একমাত্র আশ্রয় এই মোবাইল সেট। তাও ভালো চালাতে পারি না।
পারমিতা নিজের শরীর আমার গায়ে এলিয়ে দিয়ে যেনো আশ্রয় খোঁজে, আমার কাছে যেনো নির্ভরতা পেতে চায়। আমিও মমতায় জড়িয়ে ধরি ওকে। এক সময় পারমিতা তৃষ্ণার্ত চোখে তাকায় আমার চোখে। ওর ঠোঁটে তখন হাজার বছরের তৃষ্ণা জেগে ওঠে, আমার বুকেও তৃষ্ণা জাগে, ইচ্ছে হয় ওর কম্পিত ঠোঁটে ঠোঁট রেখে সহ¯্র বছরের নিঃসঙ্গ পথ চলার ক্লান্তি দূর করে নিই। হঠাৎ নিজেকে সামলে নিয়ে বলি, “আমার জরুরি কাজ আছে একটা। মাত্র দশ মিনিটের কাজ, কিন্তু যেতেই হবে আমাকে।” পারমিতার দু’চোখে আমি হাহাকারের আকুতি দেখতে পাই। তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে এগিয়ে যাই দরজার দিকে। দরজার সিটকিনি খুলতে পারি না। পারমিতা উঠে এসে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে থাকে। মৃদু-কম্পিতস্বরে বলে, “জরুরি কাজটা মোবাইলে সেরে নেয়া যায় না?” ঘুরে দাঁড়িয়ে বুকে জড়িয়ে ধরি ওকে। ঠোঁটে চুম্বন করতেই আমার পৃথিবী তোলপাড় হয়, আর ওর গায়ে যেনো কম্পন দিয়ে জ্বর ওঠে। শীতের নিষ্পত্র ডালে যেমন বসন্তে অঙ্কুরিত হয় নতুন পাতা, তেমনি জেগে উঠি দু’জন বিদায়ী বসন্তে আবার।

\১৩\

বেশ ক’দিন খুব ব্যস্ততায় কাটছিলো। পশ্চিমবঙ্গ থেকে পঞ্চাশোর্ধ কবিবন্ধু আসছেন ময়মনসিংহে, আমার আমন্ত্রণে। বিশাল আয়োজন, বিপুল কর্মযজ্ঞ। অর্থ জোগাড় নিয়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছি। এছাড়াও আছে আয়োজনের নানা দিক, সংকলন প্রকাশনা; সাজসজ্জায় উৎসবের আবহ তৈরি; তার পাশাপাশি আছে বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা বিধান। জেলা পুলিশ সুপারকে পত্র দিলাম। জেলা প্রশাসক নতুন এসেছেন, আমার সাথে পরিচয় নেই, তবু তাঁর সাথে দেখা করলাম। তাঁর হাতে দু’টি চিঠি তুলে দিলাম। তিনি চিঠি হাতে নিয়ে না পড়েই বললেন, “এসব কী?” একবার ভাবলাম বলি, “চিঠি পড়ুন, বুঝতে অসুবিধা হলে প্রশ্ন করুন উত্তর দিচ্ছি।” মুখে বললাম, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে পঞ্চাশোর্ধ কবি আপনার জেলা সদরে আসছেন সাহিত্যের একটা অনুষ্ঠানে। একটা চিঠি, বিষয়টি অবহিতকরণ, অন্যটি আর্থিক সহযোগিতাসহ আবাসন-নিরাপত্তা সবকিছুতে সহযোগিতার আবেদন।” জেলা প্রশাসক গম্ভীর হলেন, “দেখুন কবি, নিরাপত্তার বিষয়ে এসপি সাহেবকে একটা চিঠি দিন, আমি তাঁর সাথে কথা বলছি, অন্যসব বিষয়ে আমি কী করতে পারি বলুন? আমি অসহায়।” ডিসি সাহেবের শীতল বাক্যে আমার কিছুটা অভিমান হলো, অভিমান উচ্চারণ করে বললাম, “আপনার কাছে আরও একটা সহযোগিতা চাই আমি, যার কথা পত্রে লেখা নেই।” কিছুটা বিস্মিত চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন, “সেটা কী?” বললাম, “তেমন কিছু না; আমি চাই, আপনি আমাকে সহযোগিতা না করুন দয়া করে অসহযোগিতা করবেন না।” এবার ডিসি সাহেব সামান্য অপ্রস্তুত হলেন যেনো, বললেন, “না-না আমার দিক থেকে অসহযোগিতার প্রশ্নই আসে না। আপনি কাজ চালিয়ে নিন। কিন্তু এতোজন বিদেশি মেহমান আসবেন, তাঁদের থাকতে দিবেন কোথায়?” আমি আর কথা বাড়াতে চাইলাম না, বললাম, “দেখি স্যার, ব্যবস্থা তো কিছু করতেই হবে। আপনার যেহেতু সহযোগিতা করার সুযোগ নেই, আমার তো কিছু একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। যাঁরা আসবেন সবাই আমার বন্ধু, নিশ্চয়ই ওরা সবকিছু মানিয়ে নেবেন বন্ধুত্বের দিকে তাকিয়ে। আজ আসি।” উঠে দাঁড়ালাম এবং বললাম, “আর একটা কথা স্যার, যাঁরা আসবেন, সবাই বিদেশি অতিথি। আপনি আমাদের জেলার প্রশাসনিক প্রধান, আমার ইচ্ছা আপনি একবেলা অতিথিদের সাথে খাদ্য গ্রহণ করেন, তাতে ওঁরা এবং আমরা সবাই সম্মানিত বোধ করবো। পৌরসভার মেয়র, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় সাংসদকেও অনুরোধ করেছি সুবিধাজনক সময়ে অতিথিদের সাথে অন্তত একবেলা খেতে। সবাই কথা দিয়েছেন; আপনি যদি সম্মতি দেন খুশি হবো।” ডিসি সাহেব হাত বাড়িয়ে করমর্দন করলেন, “নিশ্চয়ই, আমি আপনাকে জানাবো। আপনার নাস্বারটা সিএ সাহেবকে দিয়ে যান।” আমি বেরিয়ে এলাম। মেজাজটা একটু বিগড়ে গেল। সকাল সকাল এমন একটা শীতল ব্যবহার আমি প্রত্যাশা করিনি। কামরা থেকে বেরিয়ে আমার এক সচিব কবিবন্ধুকে ফোন দিয়ে বললাম আয়োজনের কথা, তাকে আমন্ত্রণ জানালাম, এটাও বললাম যেনো ডিসি সাহেবকে বলে দেন আমায় অসহযোগিতা না করতে। তিনি বললেন, “আমি থাকবো দোস্ত তোমার অনুষ্ঠানে। ডিসি সাহেবকেও বলে দেবো।” বিগড়ে যাওয়া মেজাজের মধ্যে বেজে উঠলো পারমিতার ফোন।
: হ্যালো, বলো?
: কোথায় আছো তুমি? খুব কি ব্যস্ত?
: হুম, বলো?
: আজ সন্ধ্যায় তোমার একবার আসতেই হবে! তোমার জন্য দারুন একটা সারপ্রাইজ আছে!
: এখন আমি খুব ঝামেলায় আছি, মাথার ঠিক নেই। মনে হয় না আজ সারপ্রাইজ দেখতে পারবো।
: আরে না না, একটু সময় বের করে তোমায় আসতেই হবে! না এলে পরে কিন্তু তুমিই পস্তাবে!
: আচ্ছা ঠিক আছে দেখছি।
: দেখছি না, অবশ্যই এসো।
কথা শেষ করে নেমে আসছিলাম সিঁড়ি দিয়ে। দৌড়ে এসে পথ আগলে দাঁড়ালো ডিসি সাহেবের আর্দালি। হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, “স্যার, আপনাকে ডিসিস্যার সালাম জানিয়েছেন, একটু কথা বলবেন।” কী আর করা, ফিরে গেলাম ডিসি সাহেবের রুমে। এবার গিয়ে দেখলাম ডিসি সাহেবের আচরণ সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। আমায় বসিয়ে চা খাওয়ালেন, এনডিসি সাহেবকে ডাকিয়ে আনলেন, কীভাবে আমায় সহযোগিতা করা যায় তার বিস্তারিত আলোচনা করলেন। বুঝলাম সচিব সাহেব টেলিফোন করে কিছু একটা বলেছেন আমার সম্পর্কে। আমি বিনয়ের সাথে তাঁর সব সহযোগিতার প্রস্তাবই ফিরিয়ে দিলাম। শেষ পর্যন্ত যেদিন সচিব আসবেন সেদিন দুপুরের খাবারের দায়িত্বটা তাঁকে দিতে বাধ্য হলাম। কবিদের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ দিলেন তিনি; পাশাপাশি যে কোন সমস্যায় আমি যেনো তাঁকে স্মরণ করি তারও অনুরোধ করলেন। আমি জানি, মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ মূলত সচিব স্যারের জন্য, কিন্তু এ সত্যটা উচ্চারণ শোভন হবে না বিবেচনা করে চুপ থাকলাম। একজন সচিবের একটা ফোনে আমার বিগড়ে যাওয়া দিনটা যেনো আবার নতুন করে শুরু হলো।
সবদিক গুছিয়ে সন্ধ্যায় পারমিতার বাসায় পৌঁছলাম। পারমিতা হাসতে হাসতে দরজা খুলে দিয়ে ভেতরে ডাকলো। হাসতে হাসতেই প্রশ্ন করলো, “দেখো তো এই নারীকে চিনতে পারো কি-না?” দেখলাম একপাশের সোফা ভরাট করে বসে আছেন একজন স্বাস্থ্যবতী মহিলা। অবশ্য তাকে স্বাস্থ্যবতী বলাটা যৌক্তিক নয়, বরং বলা উচিত স্থুলাঙ্গীনি নারী। চোখে চিকন সোনালি ফ্রেমের চশমা। গম্ভীর মুখ, আমি চিনতে পারলাম না; এবার আমার দিকে তাকিয়ে মহিলা হাসলেন। এমনিতে তাকে আমার পক্ষে চেনাটা অসম্ভবই ছিলো, কিন্তু তার হাসিটাতেই ধরা পড়ে গেলেন মহিলা। আমি সহজ ভঙ্গিতে সোফায় বসে বললাম, “দেখো পারমিতা, আমাকে কেউ সম্মান না করলে, আমি কিছু মনে করি না; কিন্তু কেউ অবমূল্যায়ন করলে আমার সেটা ভালো লাগে না মোটেই!” আমার কথায় মনে হলো ঘরের দুই নারী কিছুটা অপ্রস্তুত হলো; পারমিতা বললো, “অবমূল্যায়ন! মানে কী? কে তোমায় অবমূল্যায়ন করলো?” আমি হাসলাম, “তুমি এবং তোমরা দু’জন! কী করে ভাবলে অমন একজন ঘনিষ্ঠ মানুষের মিষ্টি হাসিটি দেখার পরও তাকে আমি চিনতে পারবো না! তবে হ্যাঁ, পাহাড় দুহিতা নিজেই সময়ের ব্যাবধানে হয়ে উঠেছে সবুজ পাহাড়!” তিনজনই হাসলাম। পারমিতা বললো, “যাক, তবু তুমি চিনে ফেলতে পারলে। আমি কিন্তু চিনতেই পারিনি! বিশ্বাস করা যায় এ-ই আমাদের পারভিন?” পারভিন মনে হলো উঠতে চাইলো; আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, “তোমার উঠতে হবে না! আমিই তোমার কাছে আসছি।” আমি উঠে গিয়ে ওর পাশের সোফায় বসতে চাইলাম, পারভিন বললো, “না-না, আমাকে উঠতেই হবে।” ওর উঠে দাঁড়ানো সহজ নয়, আমিই ওকে হাত ধরে দাঁড় করালাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়