ওবায়দুল কাদের : ২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি শুরু শিগগিরই

আগের সংবাদ

মহামারিতে মেগা প্রকল্পে স্থবিরতা

পরের সংবাদ

মান বাঁচাল পাকিস্তান

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে মান বাঁচাল সফরকারী পাকিস্তান। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে এক উইকেটে হেরেছিল পাকিস্তান। শেষ ম্যাচে হারলে বা ড্র করলে সিরিজ হারের লজ্জায় পড়তে হতো বাবর আজমদের। মঙ্গলবার ম্যাচ জয়ের মাধ্যমে সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের পঞ্চম স্থানে থাকা দলটি।
কিংস্টনে হওয়া এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ফাওয়াদ আলমের ১২৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভালো সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। পাকিস্তানের ৩০২ রানের ইনিংসে অধিনায়ক বাবর আজমের অবদান ৭৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে গুটিয়ে দেয়ার দিনে বাকি অবদান পাক বোলারদের। শাহিন শাহ আফ্রিদির ক্যারিয়ার সেরা ৫১ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট তোলার দিনে প্রথম ইনিংস শেষে ১৫২ রানের লিড পায় সফরকারীরা।
এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৭৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে বাবর আজমের দল। ততক্ষণে স্কোর বোর্ডে ৩২৯ রানের টার্গেট দাঁড়ায় ক্যারিবীয়দের সামনে। তবে সেখানেও স্বাগতিকদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রথম ইনিংসে আগুনঝরা বোলিং করা শাহীন শাহ আফ্রিদি। বলা যায় তার বোলিং দক্ষতায় ক্যারিবীয়রা ২১৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। অবশ্য তার সঙ্গে বোলিং ডিপার্টমেন্টে অবদান রাখেন পেসার হাসান আলী ও স্পিনার নোমান আলী। নোমার আলীর তিন উইকেট আর হাসান আলীর দুই উইকেটের নেয়ার দিনে ১০৯ রানের জয় পায় পাকিস্তান। দুই ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
প্রথম টেস্ট অল্পের জন্য পাকিস্তান জিততে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে আর ভুল করেনি বাবরের দল। সিরিজ সমতায় ফিরতে শেষ ম্যাচে সব মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছিল তারা। কিন্তু তাদের জয়ের সম্ভাবনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল বৃষ্টি, ভেজা আউট ফিল্ড। শেষ পর্যন্ত সফরকারীদের ইতিবাচক ও মরিয়া মনোভাবের সামনে কোনো কিছু আর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। দ্বিতীয় টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০৯ রানে হারিয়ে সিরিজ ১-১ ড্র করেছে পাকিস্তান।
এর আগে ঘরের মাঠে স্বাগতিকরা পাকিস্তানের বিপক্ষে দুবার টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেছিল। মঙ্গলবারের ম্যাচ নিয়ে টানা তিনবার দলটির বিপক্ষে সিরিজ জয় থেকে বঞ্চিত হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে ২০০৫ পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ক্যারিবীয়রা। কিন্তু শেষ ম্যাচে হেরে তাদের সে স্বপ্ন ভেঙে যায়। এরপর ২০১১ সালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে সিরিজ জয় থেকে বঞ্চিত হয়। এর ১০ বছর পর ২০২১ সালেও একই ঘটনা ঘটল। এবার কিংস্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে এক উইকেটের নাটকীয় জয়ে এগিয়ে গেলেও একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের কাছে নাকাল হয়েছে ক্যারিবীয়রা। সর্বশেষ তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল প্রায় ২১ বছর আগে, ২০০০ সালে নিজেদের মাটিতেই। এর ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০১ সালের পর কোনো টেস্ট সিরিজ না জেতার আক্ষেপটা আরো বাড়ল ক্যারিবীয়দের।
এদিকে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় টেস্টের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়ে বুধবার র‌্যাঙ্কিংয়ের সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রকাশ করেছে আইসিসি। বোলার র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করেছেন শাহিন আফ্রিদি, নোমান আলী ও জেডস সিলস। আর ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করেছেন তিন পাক ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ আলম, বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংসের পারফরম্যান্সে ৩৪ ধাপ এগিয়ে ফাওয়াদ এখন ২১ নম্বরে। পাকিস্তানের এ ব্যাটসম্যানের আগের সেরা ছিল ৪৭তম স্থান। এরপর বল হাতে ক্যারিবিয়ানদের স্রেফ উড়িয়ে দেন বাঁহাতি পেসার আফ্রিদি। প্রথম ইনিংসে ৫১ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট, যা তার ক্যারিয়ার সেরা। দ্বিতীয় ইনিংসে তার প্রাপ্তি আরো ৪টি। ম্যাচে এই প্রথম পান তিনি ১০ উইকেটের স্বাদ। দুর্দান্ত বোলিংয়ে আলো ছড়িয়ে বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০ ধাপ এগিয়ে প্রথমবার ঢুকেছেন সেরা দশে। ম্যাচসেরা হওয়া এ পেসার এখন আছেন আটে। সিরিজে ১৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হওয়া আফ্রিদির আগের সেরা ছিল ১৮তম স্থান।
বোলারদের তালিকায় উন্নতি হয়েছে নোমান আলির। দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট নিয়ে বাঁহাতি এই স্পিনার উঠে এসেছেন ৪৮ থেকে ৪৪তম স্থানে। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেয়া জেডেন সিলস এগিয়েছেন ৪ ধাপ। আফ্রিদির পর সিরিজে সবচেয়ে বেশি ১১ উইকেট এই পেসারের। টেস্ট বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ পাঁচে আসেনি কোনো পরিবর্তন। যথারীতি আছেন প্যাট কামিন্স, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, টিম সাউদি, জশ হেজেলউড ও নিল ওয়্যাগনার। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ফাওয়াদ ছাড়াও র?্যাঙ্কিংয়ে উপরে উঠে এসেছেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৭৫ ও ৩৩ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক এক ধাপ এগিয়ে আছেন সাতে। আর কিপার-ব্যাটসম্যান রিজওয়ান ফিরেছেন সেরা বিশে। শীর্ষ অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার উন্নতি করেছেন ব্যাটসম্যানদের র?্যাঙ্কিংয়ে। ২৬ ও ৪৭ রান করে তিনি ৬ ধাপ এগিয়ে আছেন ৩৭তম স্থানে। এই তালিকায় আগের মতোই শীর্ষ পাঁচ আছেন কেন উইলিয়ামসন, জো রুট, স্টিভেন স্মিথ, মার্না লাবুশেন ও বিরাট কোহলি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়