অশ্রুডানায় সূর্য খোঁজার পালা

আগের সংবাদ

শূন্য অর্থনীতি থেকে উন্নয়নের রোল মডেল

পরের সংবাদ

কক্সবাজারে বন্যায় গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার থেকে : বন্যায় ও জোয়ারের পানিতে কক্সবাজারের অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৬ জুলাই থেকে কক্সবাজারে টানা বর্ষণে ভেঙে পড়ে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ। জেলা দুর্যোগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস অন্তত ২০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানালেও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ। এতে অন্তত ৫১টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, চকরিয়ার বদরখালী ইউনিয়নের প্রধান সড়ক ছাড়া প্রায় সব অভ্যন্তরীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাতায়াতে চরম বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। চকরিয়ার শাহারলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহসিন বাবলু জানিয়েছেন, মাতামুহুরী নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে সদ্য সংস্কার হওয়া অধিকাংশ রাস্তা। এসব রাস্তা এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতি কেমন হয়েছে তা চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, বিগত ৫ বছরে ঝিলংজা ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কের অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছিল। বন্যার পানি ও বাঁকখালী নদীর ভাঙনে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য বসতভিটা ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর তীর ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চরম মূল্য দিতে হবে অধিবাসীদের।
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ও মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন জোয়ারের পানিতে অভ্যন্তরীণ সড়ক এখন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। কামরুল হাসান জানান, ধলঘাটার সাপমারার ডেইল সুতুরিয়া রাস্তা ও সুতরিয়া মুহুরি ঘোনা রাস্তার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছিল। তা এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মিত না হলে রাস্তা সংস্কার করে কোনো কাজ হবে না। মুহূর্তেই জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাবে।
কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সিকদার জানিয়েছেন, কোটি টাকা ব্যয় করে রাস্তা নির্মাণ করলে তা জোয়ারের পানিতে মুহূর্তেই নষ্ট হয়ে যায়। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় হয়ে প্রতি বছর। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে এলাকায় কোনো কাজ করার প্রয়োজন নাই। মানুষ ত্রাণ চায় না, স্থায়ী বেড়িবাঁধ চায়।
জানা যায়, চকরিয়া পৌরসভার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, হারবাং, লক্ষ্যারচর, ফাঁসিয়াখালী, বমুবিল ছড়ি, চিরিঙ্গা, ডুলাহাজারা ও খুটাখালী, বিএম চর, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, বদরখালী, কোনাখালী ও বরইতলী, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া, হোয়ানক, শাপলাপুর, ছোট মহেশখালী, কুতুবদিয়া উপজেলার লেইমশীখালী, আলী আকবর ডেইল, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার, মুক্তারকুল, খরুলিয়া, চাঁন্দেরপাড়া, মুহুরীপাড়া, এসএমপাড়া, পিএমখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া, ঘাটকুলিয়াপাড়া, পাতলি, মুহসিনিয়াপাড়া, ধাওনখালী, খুরুশস্কুল ইউনিয়ন, ভারুয়াখালীর, ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী, ইসলামপুর, ঈদগাঁও, জালালাবাদ, রামুর ফতেখারকুল, রাজারকুল, মিঠাছড়ি, চাকমারকুল, জোয়ারিয়ানালা, কাউয়ারখোপ, রশিদনগর, পেকুয়ার একাধিক ইউনিয়ন, উখিয়ার পালংখালী, রাজাপালং, টেকনাফের হ্নীলা, শাহপরীর দ্বীপ, হোয়াইক্যংসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে সড়কের ক্ষতচিহ্ন দৃশ্যমান রয়েছে।
কক্সবাজার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান বলেন, সড়কের ক্ষতি নিরূপণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বন্যার পানি নামার পর বিভিন্ন এলাকায় সড়কের ক্ষয়ক্ষতি আরো দৃশ্যমান হবে। যেসব সড়ক যোগাযোগের অনুপযোগী হয়েছে সেসব সড়ক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়