একাই কোকোর কবর জিয়ারত করলেন রিজভী

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিবেশ তৈরি করে পাকিস্তান ও আমেরিকা

পরের সংবাদ

সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : কালাইয়ে ঝামেলা এড়াতে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা। সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হলেও চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, করোনার কারণে সতর্কাবস্থায় চলাফেরাসহ প্রতিকূল পরিবেশ, খোলা বাজারে দাম বেশি ও সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনেক ঝামেলা হওয়ায় লটারিতে নির্বাচিত কৃষকরা স্থানীয় বাজার ও চাতালে ধান বিক্রি করছেন। ফলে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলতি বোরো মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে সমগ্র উপজেলার ২৪ হাজার ৩৪৩ কৃষকের মধ্যে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত ১ হাজার ৬৬ জন প্রান্তিক, মাঝারি ও বৃহৎ প্রত্যেক কৃষকের কাছ থেকে ১-৩ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যেই তা শেষ করার নির্দেশনা ছিল কিন্তু ইতোমধ্যেই তা আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে শর্ত শিথিল করে নির্বাচিত কৃষক ছাড়াও শুধু যে কোনো কার্ডধারি কৃষকদের নিকট থেকে ধান সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ১৩২ টন বোরো ধান এবং ৩ হাজার ৬০৯ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার ও করোনা পরিস্থিতির কারণে কৃষকরা ধান শুকাতে না পারায় ও বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনেক ঝামেলা হওয়ায় লটারিতে নির্বাচিত কৃষকদের অনেকেই স্থানীয় বাজার ও চাতাল মালিকদের কাছে ধান বিক্রি করেছেন। এর প্রভাবে গুদামে ধান সংগ্রহের গতি নেই বললেই চলে। তাই ১২ আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত কালাই খাদ্যগুদামে ধান ক্রয় করা হয়েছে ২০৫ টন আর মোলামগাড়ীহাট খাদ্যগুদামে ক্রয় করা হয়েছে ৩৪৮ টন। এদিকে একই সময় পর্যন্ত কালাই খাদ্যগুদামে চাল ক্রয় করা হয়েছে ৩ হাজার ১৫ দশমিক ১১ টন আর মোলামগাড়ীহাট খাদ্যগুদামে ক্রয় করা হয়েছে ৩৮৯ দশমিক ২৮ টন।
ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানান, সরকার ২৭ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ ধান ক্রয় করছেন ১ হাজার ৮০ টাকায়। খাদ্যগুদামে ওই ধান দিতে গেলে ধানের মান, আর্দ্রতা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় আবার অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়- এ ধরনের নানাবিধ ঝামেলার জন্য কৃষকরা সহজেই চিকন বা মোটা সব জাতের ধানই স্থানীয় বাজার ও চাতালে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে- আর্দ্রতাসহ মোটা ১ হাজার থেকে ১০৫০ টাকায় এবং চিকন ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জানান, সরকার ৪০ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ চাল ১ হাজার ৬০০ টাকায় ক্রয় করছেন। কিন্তু বাজারে চালের দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও দেশের দুর্যোগ মুহূর্তে সরকারের পাশে থাকার জন্য আমরা মিল-মালিকরা চুক্তি মোতাবেক খাদ্যগুদামে চাল দিয়েছি। আর যেটুকু বাকি আছে পরিবেশ অনুকূল হওয়ামাত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চুক্তি মোতাবেক কাক্সিক্ষত চাল দিবে অত্র উপজেলা চালকল মালিকরা। ধানের দাম বাইরে ভালো পাওয়ায় কৃষকরা সরাসরি চাতালে বা হাটবাজারে বিক্রি করছেন, তাই খাদ্যগুদামের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভবনা অনেক কম।
কালাই ও মোলামগাড়ীহাট খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক আলমগীর ও দেবায়ন বাগচী জানান, কৃষকরা ধান বিক্রি করতে না আসায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ উপজেলার চালকল মালিকরা আন্তরিক তাই চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শাহানশাহ্ হোসেন জানান, এ সময় কৃষকরা যেভাবে ধান দেয়ার কথা সেভাবে তারা আসছেন না। তাই ধান সংগ্রহে হয়তো একটু সমস্যা হতে পারে কিন্তু এখনো অনেক সময় রয়েছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাল সংগ্রহের পাশাপাশি ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়