একাই কোকোর কবর জিয়ারত করলেন রিজভী

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিবেশ তৈরি করে পাকিস্তান ও আমেরিকা

পরের সংবাদ

আমতলীতে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে সফলতা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : আমতলীতে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের সৌখিন কৃষক মো. রুহুল আমিন বিশ্বাস। নিচে মাছের ঘের আর তার উপরে মাচায় ঝুলছে হলুদ রংয়ের মধুমালা তরমুজ। এ যেন প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য। উপরে হলুদ ও ভিতরে লাল রংয়ের সুস্বাদু এ তরমুজের রয়েছে প্রচুর চাহিদা। চাষি রুহুল আমিন শখের বসে চাষ করলেও শুরুতেই সফলতা পেয়েছেন। প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে মানুষ মধুমালা তরমুজ ক্ষেত দেখতে এবং ক্রয় করতে আসছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমতলী পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা সৌখিন কৃষক রুহুল আমিন বিশ্বাস চাকরির পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য ও সবজি চাষ করে আসছেন। এতে বেশ সফলতা পেয়েছেন তিনি। তার সফলতাকে আরো প্রসারিত করতে উদ্যোগ নেন বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে। উপজেলার কৃষি অফিসের পরামর্শে মধুমালা তরমুজ চাষ করেন। চলতি বছর জুন মাসের শুরুতে ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০০ মাধায় (জার) তরমুজের বীজ রোপণ করেন। মাছের ঘেরে মাচা তৈরি করে এ তরমুজ চাষ করা হয়। শুরুতেই পরিচর্যা অদম্য পরিশ্রমের ফলে বীজ থেকে তা চারায় রূপান্তিত হওয়ার দুই মাসের মাথায় গাছে ফলন ধরেছে। খুশিতে আত্মহারা সৌখিন চাষি রুহুল আমিন। বিরামহীন বর্ষণে তার অদম্য শ্রমে কিছুটা ব্যঘাত ঘটালেও তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। বর্তমানে তার গাছের তরমুজগুলো বড় হচ্ছে। থোকায় থোকায় মাচায় হলদে রংয়ের ভেতরে টকটকে লাল সুস্বাদু তরমুজ ঝুলছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য।
এরই মধ্যে কৃষক রুহুল আমিন বিশ্বাস তার ক্ষেতে উৎপাদিত ৫০টি তরমুজ বিক্রি করছেন। একেকটি তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। কিন্তু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ক্রেতাদের কাছে তরমুজ বিক্রি করতে পারছেন না। ইতোমধ্যে তিনি ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। গাছে এখনো আরো অনেক তরমুজ রয়েছে। পরীক্ষামূলক হলেও শুরুতেই তিনি চমক সৃষ্টি করেছেন। তিনি আশা করছেন গাছে এখনো যে পরিমাণ তরমুজ আছে তা বিক্রি করে আরো ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
প্রতিদিন স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসে সৌখিন কৃষক মো. রুহুল আমিন বিশ্বাসের অসময়ে উৎপাদিত মধুমালা তরমুজ ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন।
সরেজমিন তরমুজ ক্ষেত দেখতে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় সরোয়ার হোসেন এবং পার্শ্ববর্তী চাকামইয়া ইউনিয়ন থেকে আসা কৃষক আ. হালিম হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি জানান, অসময়ের তরমুজ হয়েছে সেটা দেখতে এবং স্বাদ কেমন তা কিনে খেতে এখানে এসেছি। তারা আরো বলেন, মাচার উপরে গাছে থোকায় থোকায় হলুদ রংয়ের তরমুজ ঝুলে আছে। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে এ যেন প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য। তরমুজ কিনতে চেয়েও তা কিনতে পারিনি।
সৌখিন কৃষক মো. রুহুল আমিন বিশ্বাস বলেন, যখন বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই মাছ ও সবজি চাষ করে আসছি। চাকরি হওয়ার পরও ফাঁকে ফাঁকে মাছ ও সবজি চাষ করছি। নতুন কিছু চাষের উৎসাহ মাথায় নিয়ে এ বছর জুন মাসে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে গ্রীষ্মকালীন মধুমালা তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেই। পরীক্ষামূলক হলেও বেশ সফলতা পেয়েছি। শখের বসত হলেও অসময়ের তরমুজ চাষে বেশ লাভবান হব। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্রেতাদের দিতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সি এম রেজাউল করিম বলেন, মধুমালা তরমুজ একটি বর্ষাকালীন ফল। কম খরচে এ ফল চাষে অধিক লাভবান হওয়া যায়। সৌখিন চাষি রুহুল আমিন বিশ্বাস উপজেলার মধ্যে এই প্রথম মধুমালা তরমুজ চাষ করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেক কৃষক এখন মধুমালা তরমুজ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়