খুলনায় মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর : সম্প্রীতি পরিষদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিবাদ

আগের সংবাদ

হার্ড ইমিউনিটি কতটা সম্ভব : নতুন নতুন ধরন নিয়ে শঙ্কা >> টিকার সুফল কিছুটা হলেও মিলবে : আশা বিশেষজ্ঞদের

পরের সংবাদ

আফগানিস্তানে হচ্ছেটা কী!

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : যে তালেবানকে ২০০১ সালে যুদ্ধের মাধ্যমে আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ বছর ধরে যুদ্ধ চলেছে, সেই তালেবানের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্র আবার সন্ধি করেছে। তার জেরে আফগান ভূখণ্ড থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের জীবন গেছে, লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। সন্ধিচুক্তিতে তালেবানরা বলেছিল, তারা দেশটিকে এমন কোনো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর ঘাঁটি হতে দেবে না, যারা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।
কিন্তু চুক্তির পরপরই অতিদ্রুত তারা সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে বিভিন্ন এলাকার দখল নিতে শুরু করেছে। তারা আরো বলেছিল, তারা একটি জাতীয় শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে। কিন্তু অনেকের আশঙ্কা, শান্তি দূরে থাক, দেশটি বরং এখন চরম গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কেন শুরু হয়েছিল যুদ্ধটা? ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে আল কায়েদা যে হামলা চালায়, যাতে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হন, তার জেরে আফগানিস্তানে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ওসামা বিন লাদেন তখন আফগানিস্তানে তালেবান আশ্রয়ে ছিলেন। আফগানিস্তানে এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেয় ন্যাটো সেনারা। তালেবানের পতনের পর ২০০৪ সালে সেখানে নতুন আফগান সরকার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু তালেবানের সহিংস হামলা অব্যাহত থাকে।
২০০৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ব্যাপকভাবে বাড়ানোর কৌশল অনুমোদন করেন। ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরের এক বাড়িতে মার্কিন কমান্ডো বাহিনীর হামলায় নিহত হন ওসামা বিন লাদেন। ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের মৃত্যু ঘটে। গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, পাকিস্তানে করাচির এক হাসপাতালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মোল্লা ওমর মারা যান। ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর কাবুলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ন্যাটো শক্তি আফগানিস্তানে তাদের সরাসরি লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘোষণা করে। ২০১৫ সালে শুরু হয় তালেবান পুনরুত্থান। একের পর এক আত্মঘাতী হামলা, গাড়ি বোমা হামলা এবং অন্যান্য হামলা চালাতে শুরু করে তারা। কাবুলে পার্লামেন্ট ভবনে এবং কুন্দুজ শহরে হামলা চালায়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরাও। ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবানরা আফগানিস্তানে ‘শান্তি ফিরিয়ে আনতে’ চুক্তি করে। শর্ত হয়, তালেবানরা চুক্তি মেনে চললে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো পরবর্তী ১৪ মাসের মধ্যে সব সৈন্য ফিরিয়ে নেবে। নাইন ইলেভেনের হামলার ঠিক বিশ বছর পর ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সব সৈন্য আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে নেয়ার কথা। তবে এমন জোরাল ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, আনুষ্ঠানিক শেষ সময়সীমার বেশ আগেই সে দেশ থেকে সব বিদেশি সৈন্য ফিরিয়ে নেয়া হবে।
এরপর কী ঘটতে পারে? তালেবানরা কি আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসবে? বাইডেন বলেছেন, তার বিশ্বাস জঙ্গিরা কাবুলের সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাবে না। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দারা বলছেন, বিদেশি সৈন্য চলে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই কাবুলের সরকার পতন হবে। বিবিসি বলছে, এখনই দেশটির দুই তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে তালেবানরা। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, তালেবান এবং আল কায়েদাকে আলাদা করা যায় না। কারণ আল কায়েদার যোদ্ধারা তালেবানের মধ্যে ঢুকে পড়েছে এবং তাদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে। এরপর আছে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদলের আঞ্চলিক শাখা, যাদের সঙ্গে তালেবানের দ্ব›দ্ব রয়েছে। আইএসের এ শাখাটি মার্কিন হামলায় প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়লেও ধারণা করা হচ্ছে, বিদেশি সেনারা চলে যাওয়ার পর এরা নতুন করে সংগঠিত হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়