গণপরিবহন চালু, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা : লঞ্চ, বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি হটিয়ে খুলল সবই

পরের সংবাদ

টেলিটকের উন্নয়নসহ দশ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : লোকসানের বৃত্তে আটকে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের নেটওয়ার্কের আধুনিকায়নে ২ হাজার ২০৪ কোটি টাকার প্রকল্পসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন প্রকল্পের অনুমোদন করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা এসব প্রকল্প অনুমোদন দেন। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ থেকে এক হাজার ১৮৮ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান পরিকল্পামন্ত্রী এম এ মান্নান। এসময় আরো উপস্থিত পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমসহ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১৭ বছরে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সেলফোন অপারেটর টেলিটক এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান গুনেছে। আর গত চার বছরেই টেলিটক লোকসান করেছে ৯৯৩ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুধু দুই অর্থবছরেই প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে ১১ কোটি ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৪৬ কোটি টাকা মুনাফা করে টেলিটক।
লোকসানে থাকার পরেও টেলিটকের নতুন প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, একটা প্রসঙ্গ আসছে- প্রায়ই টেলিটকে লোকসান হয়। তারপরও দেয়া হচ্ছে কেন? কল্যাণমুখী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্টেটের দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের নীতি প্রণীত হয়। ব্যক্তি খাতকে আমরা সহায়তা করব, সুযোগ দেব। কিন্তু সরকার একদম সব কিছু ছেড়ে দেবে না। টেলিটকে এবার যেটা নেয়া হয়েছে সেটা একটু বেশি। এবার যখন প্রজেক্টটা আসল, থার্ড পার্টি দিয়ে এটাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। টেলিটকে লোকসানের কারণটা হলো- বাকি সব কয়টার রেট কিন্তু ডাবল তবে টেলিটকে কম। সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারকে মাথায় রেখে অনেক লোকসানি প্রতিষ্ঠানও আমাদের চালিয়ে যেতে হয়।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির উদ্যোগ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ নিলেও বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ। যা বাস্তবায়নে প্রায় পুরো অর্থই জোগান দেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। মাত্র ৬০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা দেবে টেলিটক। চলতি বছরে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর বাস্তবায়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো- জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প (রংপুর জোন)’ বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। বাগেরহাট-রামপাল-মংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি জুলাই ২০২০ সাল থেকে জুন ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-ব্রিজিং (অতিরিক্ত অর্থায়ন, এলজিইডি অংশ)’ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ‘ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মার্চ ২০২৬ সালে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ‘পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প ৩য় পর্যায়’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)। কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় বেড়ে হচ্ছে ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি সংশোধন হলে দুই বছর মেয়াদ বেড়ে হবে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। শেখ হাসিনা সোলার পার্ক, জামালপুরে মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন করবে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়