চাঁদাবাজির মামলা ৪ দিনের রিমান্ডে দর্জি মনির

আগের সংবাদ

বন্যার পদধ্বনি : পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে

পরের সংবাদ

৮১-তে পা দিলেন ড. অনুপম সেন : সিক্ত হলেন নাগরিক সমাজ ও শিক্ষার্থীদের ফুলেল ভালোবাসায়

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক ও তার শিক্ষার্থীদের ফুলেল ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী-শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. অনুপম সেন। ১৯৪০ সালের এই দিনে চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া প্রতিথযশা এই সমাজবিজ্ঞানী গতকাল ৮০ বছর পূর্ণ করে একাশিতে পা দিলেন। এই বয়সেও তিনি অত্যন্ত সফলভাবে শিক্ষাদান করছেন, সামাজিক নানা অসঙ্গতিতে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। রাজপথে নেমে আসেন তরুণদের মতো। উদ্দীপ্ত করেন অনুপ্রাণিত করেন সমাজের অন্যসব নাগরিকদের। শিক্ষা-সংস্কৃতি-রাজনীতি-অর্থনীতি এমনকি সর্বশেষ বিজ্ঞানবিষয়ক কোনো গবেষণার অনেক বিষয়েই তার সমান আগ্রহ ও পাণ্ডিত্য এ সমাজকে ঋদ্ধ করছে। তিনি এখনো জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে এ সমাজকে প্রতিনিয়ত আলোকিত করছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে শেখাচ্ছেন।
করোনার জন্য অনেকেই হয়তো ব্যক্তিগতভাবে তার বাসায় গিয়ে তাকে শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানাতে পারেননি। কিন্তু তারপরও কেউ কেউ তার বাসা বা প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ¯েœহধন্য হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনেক শিক্ষার্থী, শুভানুধ্যায়ী এই গুণী শিক্ষককে নানাভাবে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ড. সেনের অসংখ্য ছাত্র দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশাসনসহ সমাজের নানাস্তরে ছড়িয়ে আছেন। তেমনই একজন প্রফেসর ড. ওবায়দুল করিম দুলাল। যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর ড. সেন এর ¤েœহধন্য ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে তিনিও একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি তিনিও অবসরে গেছেন। সেই ওবায়দুল করিম দুলাল তার ফেসবুকে লিখেছেন, ’ কেউ বেঁচে থাকে নামে, কেউ কাজে। যারা কাজ দিয়ে নাম সমুজ্জ্বল করেন, প্রফেসর ড. অনুপম সেন তাদেরই একজন।
একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সমাজবিজ্ঞানী গত বেশ কয়েক বছর ধরে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। গতকাল তার জন্মদিন উপলক্ষে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা ও কেক কেটে তার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর এ কে এম তফজল হক, প্রকৌশল ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তৌফিক সাঈদ, রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শেখ মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার মনির প্রমুখ।

ড. সেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য। কিন্তু তাই বলে তিনি কিন্তু অন্যদের মতো অন্ধভাবে সরকারের সব নীতি-কর্মকাণ্ডের সমর্থন করেননি বা করেন না। সম্প্রতি চট্টগ্রামের সিআরবিতে প্রাণ-প্রকৃতি-জীববৈচিত্র্য-মুক্তিযুদ্ধ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিচিহ্ন বিপন্ন করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। বরং তিনি রাজপথে নেমে এসেছেন এই ইস্যুতে। সিআরবি রক্ষায় যে নাগরিক সমাজের যে কমিটি হয়েছে তার চেয়ারম্যানও তিনি। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রকৃত তথ্য গোপন করে এখানে হাসপাতাল নির্মাণের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত প্রকৃতি সচেতন ব্যক্তি। তিনি নিশ্চয় এ বিষয়টি জানলে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন’।

উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে অনেক বছর দায়িত্ব পালন করছি। যদিও আমি জন্মদিন পালন করি না, কিন্তু প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি আমার জন্মদিন পালন করায় আমি আনন্দিত ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার জন্মদিনে আপনাদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত। তিনি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অপরিসীম প্রচেষ্টায় এই ইউনিভার্সিটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশের বাইরেও সুনাম অর্জন করেছে। আমার বিশ্বাস, একদিন এই ইউনিভার্সিটির সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি তার শিক্ষক ও পুরনো বন্ধুদের স্মরণ করে বলেন, ১৯৬৫ সাল থেকে শিক্ষকতায় নিয়োজিত আছি। পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমান বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি। বর্তমানে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বস্তুত আমি যে এখনো শিক্ষকতায় নিয়োজিত আছি, এটা আমার জীবনের পরম পাওয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়