চাঁদাবাজির মামলা ৪ দিনের রিমান্ডে দর্জি মনির

আগের সংবাদ

বন্যার পদধ্বনি : পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে

পরের সংবাদ

মালিক সমিতির দ্ব›েদ্ব ৮ মাস ধরে বাস চলাচল বন্ধ

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোর রুটে ৮ মাস সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রুট জটিলতা নিয়ে দ্ব›দ্ব চুয়াডাঙ্গা ও কালীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির মধ্যে। দুটি সংগঠনের নেতারা সমস্যা সমাধানে একাধিকবার আলোচনার টেবিলে বসে সংকট নিরসনে ব্যর্থ হয়ে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোর ও খুলনা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এই রুটে চলাচলকারীরা চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন। মালিক সমিতির দুটি সংগঠনের নেতারা সরাসরি বাস চলাচল বন্ধে একে অপরকে দুষছেন। যাত্রীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করলেও নিজেদের দাবি পূরণে অনড় অবস্থানে রয়েছেন তারা।
২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোর রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতি তাদের যাত্রীবাহী বাস জেলার শেষ সীমান্ত জীবননগর উপজেলার হাসাদহ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখেন। এছাড়া কালীগঞ্জ মালিক সমিতি তাদের জেলার শুরু হওয়া সীমানা থেকে যশোর পর্যন্ত বাস চালু রেখেছেন। এ কারণে এই রুটে চলাচলকারীদের দুই জেলার শেষ সীমানা হাসাদাহে গাড়ি পরিবর্তন করতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
জীবননগরে ভোগান্তির শিকার মোটর পার্টস ব্যবসায়ী ওয়াহেদুল ইসলাম খোকন বলেন, দক্ষিণবঙ্গে মোটর পার্টস ব্যবসায়ীদের একমাত্র মোকাম যশোর। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, দর্শনা, দামুড়হুদা ও জীবননগর এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী যশোর থেকে মালামাল কিনে থাকেন। এছাড়া এ অঞ্চলের অন্য ব্যবসায়ীরা যশোর-খুলনা রুটে চলাচল করেন। কিন্তু দীর্ঘ ৮ মাস ধরে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মালামাল পরিবহন ও যাতায়াত কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। ২ ঘণ্টার রাস্তায় গাড়ি থেকে নামা-ওঠায় সময় লাগছে বেশি। সেই সঙ্গে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যশোর ও কালীগঞ্জ মালিক সমিতির যাত্রীবাহী বাস চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গা রুটে ২৬টি রোটেশন টিপে তাদের বাস চলাচল করে। চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতি ওই রুটে কালীগঞ্জ মালিক সমিতির গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়ে তাদের গাড়ি চলাচল শুরু করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই মালিক সমিতির মধ্যে দ্ব›দ্ব তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে চুয়াডাঙ্গা ও কালীগঞ্জ মালিক সমিতি সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে তাদের নিজ জেলার মধ্যে চলাচল সীমিত রাখে। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলার পর জীবননগর উপজেলার রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী নেতাদের হস্তক্ষেপে দুটি সংগঠনের নেতারা আলোচনার টেবিলে বসেন। কালীগঞ্জ মালিক সমিতি তাদের আলমডাঙ্গা রুটের ২৬ টিপ দাবি করলে শেষ ১৬টি টিপ দেয়ার প্রতিশ্রæতি দেয় চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতি। কিন্তু সময় পার হলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর আবারো সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় কালীগঞ্জ বাস মালিক সমিতি। জীবননগর ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক এম আর বাবু জানান, চুয়াডাঙ্গা ও কালীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির দ্ব›েদ্ব সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বেশি ক্ষতি হচ্ছেন জীবননগরের ব্যবসায়ীরা। এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ী কালীগঞ্জ ও যশোরকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য করে থাকেন। এছাড়া চিকিৎসার জন্য রোগীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। সমস্যা নিরসন করে দ্রুত সরাসরি বাস চলাচল স্বাভাবিক করা দরকার।
কালীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি হাজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গা পর্যন্ত আমাদের ২৬টি টিপ বন্ধ করে দেয়ায় দ্ব›দ্ব সৃষ্টি হয়।
আমাদের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতি সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করে ওই রুটে ১৬ টিপ দেয়ার প্রতিশ্রæতি দেয় চুয়াডাঙ্গা মালিক সমিতি। কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছর পার হলেও তারা তাদের কথা রাখেনি। জীবননগর পৌর মেয়র দুটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনার মাধ্যমে নিরসনের চেষ্টা করছেন। তবে আমি সব সময় জনদুর্ভোগ বন্ধে সরাসরি বাস চলাচলের পক্ষে সহযোগিতা করব।
চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে মঈনুদ্দিন মুুক্তা জানান, সবাই সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে সমস্যা নিরসন সম্ভব। কালীগঞ্জ মালিক সমিতি আলমডাঙ্গা রুটে যে ২৬ টিপের যে কথা বলেছে সেটা অনেক আগের ঘটনা। সে সময় তারা লোকাল টিপে বাস চালাত। পরবর্তী সময়ে ওই রুটে মেইল বাস সার্ভিস করা হয়। সে কারণে সবার সুবিধামতো তাদের ১৬ টিপ দেয়া হয়। কিন্তু তারা তাদের দাবিতে অনড়।
বিষয়টি জীবননগর পৌর মেয়র আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় দুজন সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ আসনে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে জীবননগর পৌর মেয়র সময় দিলে আলোচনার মাধ্যমে নিরসনের চেষ্টা করা হবে।
জীবননগর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম জানান, এলাকার মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে উভয়পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার তিনজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরাসরি বাস চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়