চাঁদাবাজির মামলা ৪ দিনের রিমান্ডে দর্জি মনির

আগের সংবাদ

বন্যার পদধ্বনি : পদক্ষেপ এখনই নিতে হবে

পরের সংবাদ

টিআইবি : তথ্য প্রকাশে উদ্বেগজনক অবস্থানে এনজিও

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সরকারের তুলনায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওগুলো কম তথ্য দিচ্ছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নাগরিকদের কাছে স্বপ্রণোদিত হয়ে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রায় ৯৫ শতাংশ এনজিওর অবস্থান উদ্বেগজনক। গতকাল বৃহস্পতিবার অনলাইন প্লাটফর্মে প্রকাশিত ‘তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ চর্চার মূল্যায়ন’ বিষয়ক গবেষণাপত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ এন্ড পলিসির পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ শোয়ায়েব, গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক শাহজাদা এম আকরাম, সিনিয়র ফেলো রিসার্চ এন্ড পলিসি গবেষক জুলিয়েট রোজেটি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ১৫৩টি সরকারি ও ৩৯টি এনজিওর ওয়েবসাইটের ওপর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নাগরিকদের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে এ সংক্রান্ত ১১টি সুপারিশ করেছে টিআইবি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গবেষণায় নমুনায়িত প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে ৭৬ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ২৪ শতাংশ এনজিও। সরকারি ও আইনের আওতাভুক্ত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ (৩১ শতাংশ), মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান (৩১ শতাংশ), সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান (১৮.৪ শতাংশ) এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান (সংস্থা, ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশন, পাবলিক কোম্পানি ইত্যাদি) (১৯.৬ শতাংশ)। অন্যদিকে এনজিওর মধ্যে ৪৪ শতাংশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এবং ৬৬ শতাংশ জাতীয় পর্যায়ের।
এনজিওদের কাজের ধরন অনুযায়ী নমুনায়িত এনজিওর মধ্যে ২২.২ শতাংশ এনজিও শুধু সেবা কার্যক্রম, ১৫.৬ শতাংশ এনজিও শুধু অধিপরামর্শ কার্যক্রম এবং ৬২.২ শতাংশ এনজিও এই উভয় ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সার্বিকভাবে নমুনায়িত প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে ৯২.৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট রয়েছে, ৭.২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের কোনো ওয়েবসাইট পাওয়া যায়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ৩.২ শতাংশ এবং এনজিওদের ২০ শতাংশের কোনো ওয়েবসাইট পাওয়া যায়নি। টিআইবির গবেষণা অনুযায়ী, সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তথ্য দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই তিনটি মন্ত্রণালয়ের স্কোর সবচেয়ে বেশি। আর সবচেয়ে কম তথ্য দেয় আন্তঃবাহিনী নির্বাচন পর্ষদ, ক্ষুদ্র, মাইক্রো ও কুটির শিল্প ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বোর্ড, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ও ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স ফর হেলথ।
আর এনজিওগুলো মধ্যে সবচেয়ে কম তথ্য দেয় কাতার চ্যারিটি, হেলভেটাস ইন্টারন্যাশনাল, সলিডারিটিস ইন্টারন্যাশনাল, প্রিপ ট্রাস্ট, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল। আর সবচেয়ে বেশি তথ্য দেয় কোস্টাল এসোসিয়েশন ফর স্যোশাল ট্রান্সফরমেশন। তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সরকারি ১২৮টি মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের পরই এনজিওটির স্থান। এর আগে কোনো এনজিও নেই। অথচ গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্র্যাকের মতো এনজিওর কোনো তথ্য নেই গবেষণাপত্রে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নে যেমন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের ভূমিকা ছিল, তেমনি এটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের কাজটিও সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের। আইনটি প্রণয়নের ১১ বছর পর এসে তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ আগের তুলনায় বাড়লেও সার্বিকভাবে এবং মোটা দাগে তা সন্তোষজনক নয়। স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের বিষয়টি আইনগত গুরুত্ব পেলেও তার চর্চা ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের চর্চা বাড়াতে ১১ দফা সুপারিশ করেছে টিআইবি।
সুপারিশসমূহের মধ্যে রয়েছে- প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ ও প্রচার নির্দেশিকা প্রণয়ন করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং নির্দেশিকার কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে তদারকি বাড়ানো। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া, সেবা ও সেবা প্রদানকারীর তথ্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষমতা ও দায়িত্ব ইত্যাদি হালনাগাদ তথ্য বিধি অনুযায়ী গুরুত্ব সহকারে প্রকাশে আরো উদ্যোগী হওয়া। তথ্য অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত আবেদনকৃত তথ্যের ধরন বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তথ্যের ঘাটতি চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশের ব্যবস্থা করা।
প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত তথ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কিত অভিযোগ দায়েরের জন্য ওয়েবপেজে সুনির্দিষ্ট স্থান রাখা এবং অনলাইনের মাধ্যমে কার্যকর নিষ্পত্তি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়