৯৯৯-এ কলে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথ ও বাঁশির চিত্রকল্প

পরের সংবাদ

‘জিনের বাদশা’ চক্র : এক নারীর কাছ থেকেই হাতিয়েছে ২২ লাখ টাকা

প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জিনের বাদশা পরিচয়ে সমস্যা সমাধানের নামে প্রতারণা করাই ছিল তাদের মূল কাজ। তাদের টার্গেট মূলত সমাজের সহজ-সরল মানুষ। চক্রটি এ পর্যন্ত কোটি টাকার মতো অর্থ আত্মসাৎ করেছে। চট্টগ্রামের এক নারীর কাছ থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে ২২ লাখ টাকা। প্রচারণার জন্য আইপি টিভি জয়যাত্রাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও কেবল নেটওয়ার্কের লোকাল চ্যানেলেও বিজ্ঞাপন দিত চক্রটি।
প্রতারণার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। গতকাল বুধবার রাজধানী মালিবাগের সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তা ধর বলেন, চট্টগ্রামের একজন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বিদেশ থাকেন। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।
এই রোগ থেকে মুক্তির আশায় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন দেখে জিনের বাদশাকে ফোন করলে ওই ভুক্তভোগী নারীকে বলা হয়, তার সমস্যার সমাধান করা হবে। তবে ৯৯৯ টাকা দিতে হবে গরিব মানুষকে খাওয়ানোর জন্য। এভাবে আস্থা অর্জন করে ধাপে ধাপে জিনের বাদশার সঙ্গে কথা বলে দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তির আশ্বাস পেয়ে প্রায় ২২ লাখ টাকা খোয়ান এ নারী। এরপর ওই নারী প্রতারণা বুঝতে পেরে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় মামলা করেন।
আর তা তদন্ত করতে গিয়ে কথিত জিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণাকারী মো. আল আমিন, মো. রাসেল ও মো. সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়। মো. আল আমিন এ চক্রের হোতা। গত মঙ্গলবার ভোলা জেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই কাজে তার আরো দুই সহযোগী মো. রাসেল ও মো. সোহাগের বিষয়ে জানা যায়। পরে রাজধানীর ডেমরায় এলাকায় গতকাল ভোরে অভিযান চালিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ কেবল নেটওয়ার্কের লোকাল চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর, বিবাহের বাধা দূর, অবাধ্যকে বাধ্য, চাকরিতে প্রমোশনসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চটকদার বিজ্ঞাপন দিত তারা।
মানুষ যোগাযোগ করলে আস্থা অর্জন করতে মেয়েলি কণ্ঠ কথা বলত। নিরীহ সরলমনা মানুষরা বিশ্বাস করে তাদের ফাঁদে পা দিলেই শুরু হতো প্রতারণা।
মুক্তাধর বলেন, চট্টগ্রামের ওই ভুক্তভোগী নারীকে বলা হয়েছিল তার বাসার নিচে আড়াই কেজি স্বর্ণ লুকায়িত আছে, সেটা পাহারায় অজগর সাপ রয়েছে। ওই স্বর্ণ আনতে পারলে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান করে দিতে হবে। পরে তাকে বলা হয়, সাপকে খাওয়ানোর জন্য আড়াই মণ দুধ ও ১০ কেজি আতর লাগবে। ওই নারীর কাছ থেকে এভাবেই চক্রটি ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগীকে বলা হয় স্বামী-সন্তান বা অভিভাবককে এসব কথা জানাবে না। এমনটি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জিনের বাদশা সেজে প্রতারণা করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়