৯৯৯-এ কলে ৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার

আগের সংবাদ

রবীন্দ্রনাথ ও বাঁশির চিত্রকল্প

পরের সংবাদ

আজ চুয়াডাঙ্গায় স্থানীয় শহীদ দিবস

প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আওয়াল হোসেন, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে : চুয়াডাঙ্গা জেলায় স্থানীয় শহীদ দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার মধ্যবর্তী রতনপুর গ্রামের মাঠে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে ৮ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন, ৭ জন প্রাণে বেঁচে যান। নিহতরা হলেন- হাসান জামান, আবুল কাশেম, রবিউল ইসলাম, কিয়ামুদ্দিন, আফাজউদ্দিন, আলাউল ইসলাম খোকন, রওশন আলম, খালেদ সাইফুদ্দিন ও আহম্মেদ তারেক। নিহত ৮ জনের মরদেহ দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে কিতাব হালদারের জমিতে মাটিচাপা দেয় হানাদার বাহিনী।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৯৮ সালে ৮ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে আট কবর নামে এ স্থানটি পরিচিতি লাভ করে। আট কবর স্মৃতিস্তম্ভে প্রতি বছর জাতীয় পতাকা এবং মুক্তিযোদ্ধা সংদের কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিল করা হয়ে থাকে।
রতনপুরের ওই যুদ্ধে বেঁচে যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়াদ্দার ছেলুনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত হয়ে প্রতি বছর নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট বাগোয়ান গ্রামের রাজাকার কুবাদ আলী ও তার সহযোগীরা ভারতের ভাতগাছী ও ব্রহ্মনগর সীমান্তে অবস্থানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মিথ্যা সংবাদ দেয় যে পাকিস্তান বাহিনী রতনপুর ও বাগোয়ান গ্রামে মাঠের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এ খবর পেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়াদ্দার ছেলুনের নেতৃত্বে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বিকাল ৩টার দিকে রওনা দেন বাগোয়ান ও রতনপুর মাঠের দিকে। এদিকে সেখানে আগে থেকে নাটুদহ ক্যাম্পের হানাদার বাহিনী ইউ আকৃতিতে আবস্থান নিয়ে ওঁৎ পেতেছিল। এরপর ওই ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা রতনপুর ও বাগোয়ান মাঠে পৌঁছলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওঁৎ পেতে থাকা পাকিস্তান বাহিনী তিন দিক থেকে তাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ শুরু করে। মুক্তিবাহিনীও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির একপর্যায়ে মুক্তিবাহিনীর গোলাবারুদ শেষ হয়ে যায়। এর মধ্যে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা পিছু হটে বেঁচে গেলেও ওই যুদ্ধে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধ শেষে হানাদার বাহিনী ৮ মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ গরুর গাড়িতে করে নাটুদহের জগন্নাথপুর গ্রামের কাছে নিয়ে মাঠে একটি গর্ত করে মাটিচাপা দেয়। স্থানীয় লোকজন নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জানাজা করতে চাইলে হানাদার বাহিনী দেয়নি। সেই থেকে স্থানটি আট কবর নামে পরিচিতি পায়।
স্বাধীনতার ২৭ বছর পর ১৯৯৮ সালে ৬৬ শতক জমির ওপর তৎকালীন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে দেন। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলাইমান হক জোয়াদ্দার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে একটি জাদুঘর নির্মাণ করে দেন। বর্তমানে এই ৮ কবর এলাকা ৩৩ প্রজাতির ১১২টি গাছ আচ্ছাদিত করে রেখেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়