ডিএনসিসি মেয়র আতিক : ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন করতে পারছি না

আগের সংবাদ

বেহাল রেলের মেগা প্রকল্প : খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে কেউ জানে না

পরের সংবাদ

পুঁজিবাজারে নতুন ইতিহাস

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবারও দেশের পুঁজিবাজারে উল্লম্ফন হয়েছে। এতে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে পুঁজিবাজারে। মাইলফলকে পৌঁছেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্য সূচক। প্রথমবারের মতো ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে গেছে। মূল্যসূচকের এই মাইলফলক স্পর্শের দিনে শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ব্যাংক কোম্পানিগুলো। ফলে বিমা ও বস্ত্র খাতের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পরও প্রধান মূল্যসূচক অর্ধশত পয়েন্ট বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মধ্য দিয়ে। এতে প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। যার মাধ্যমে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি ৫ হাজার ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রথমবারের মতো ৬ হাজার ৫০০ পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করে। লেনদেন শুরু হতেই নতুন মাইলফলকে পৌঁছে যাওয়া ডিএসইর প্রধান সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সময়ের সঙ্গে আরো বাড়ে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৩৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এটি এ যাবতকালের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচকের সর্বোচ্চ অবস্থান। অপরদিকে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান মূল্যসূচকের এই মাইলফলক স্পর্শের দিনে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বাকি একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, স¤প্রতি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট আর দেখা যায়নি। অবশ্য একসময় পুঁজিবাজারের প্রাণ হিসেবে বিবেচিত হওয়া ব্যাংকের এমন দাপট হরহামেশাই দেখা যেত। তবে ২০১০ সালের ধসের পর ধীরে ধীরে রাজত্ব হারায় ব্যাংক। এদিকে ব্যাংকের দাপট দেখানোর দিনেও বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে ধস নেমেছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছে বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। কারসাজির মাধ্যমে কিছু বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম ৪-৫ গুণ বাড়ানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বাড়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরেই। অধিক মুনাফার আশায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সেই অস্বাভাবিক দামে শেয়ার কেনেন। এরপর দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মধ্যে পড়েন অনেকে। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে আবার বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এ সময়ও কিছু বিনিয়োগকারী আবার বিমা কোম্পানির শেয়ার কেনেন। অধিক মুনাফার আশায় এ দফাতেও বিমার শেয়ার কেনা বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। গতকাল ধস নামার মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস ধসের মধ্যে থাকল বিমা খাত। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে ব্যাপক দরপতন দেখা যায়। এই খাতের তালিকাভুক্ত ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ১০টির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ৪১টির।
চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গত সোমবার (ব্যাংক বন্ধ থাকায় রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল) মাত্র সাতটি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে ৪৩টির। আর গতকাল মঙ্গলবার ১১টি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ৩৯টির। বাকি একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিমা কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি অধিকাংশ বস্ত্র কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। তালিকাভুক্ত ৫৮ বস্ত্র কোম্পানির মধ্যে ১৫টির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪০টির দাম কমেছে। আর তিনটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকালও বিমা ও বস্ত্র খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমায় ডিএসইতে সব খাত মিলে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে প্রায় তার সমানসংখ্যক প্রতিষ্ঠান দরপতন হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭০টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের সঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ১৮৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। বড় অঙ্কের এই লেনদেনের দিনে টাকার পরিমাণে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১০৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের ৮২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাইফ পাওয়ার টেক।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৫৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮০ কোটি ১১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়