ডিএসইর ডিজিটাল সাবমিশন প্ল্যাটফর্ম চালু

আগের সংবাদ

লোভের আগুনে কত স্বপ্ন পুড়বে?

পরের সংবাদ

সত্যজিতের ছোটগল্পে জন্মশতবার্ষিকীর শ্রদ্ধার্ঘ্য

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সর্বকালের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নেটফ্লিক্স দুনিয়ায় সদ্য মুক্তি পেয়েছে একটি ট্রিবিউট নির্মাণ ‘রে’। চারটি ভিন্ন গল্পের অনুপ্রেরণায় নির্মিত এই অ্যান্থোলজি ওয়েব সিরিজে নামের পাশাপাশি অফিসিয়াল পোস্টারে চার পর্বের প্রধান চরিত্রগুলোর সঙ্গে প্রচ্ছন্নভাবে দেখা গিয়েছে চুরুট ধরানো সত্যজিৎ রায়ের সেই চিরায়ত রূপটি। প্রেম, লালসা, বিশ্বাসঘাতকতা এবং সত্যের চারটি গল্প দিয়ে নির্মাণের মুন্সিয়ানায় দারুণভাবে সাজানো হয়েছে এ ওয়েব সিরিজ

ফরগেট মি নট
শুনতে সিনেমাটিক শোনালেও ফরগেট মি নট মূলত একটি ফুলের নাম! সত্যজিৎ রায় রচিত বিপিন চৌধুরীর স্মৃতিভ্রম ছোটগল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে এ পর্বটি। এর নির্মাতা কলকাতার সিনেমায় বাণিজ্য-শিল্পের মিশেল দিয়ে বিপ্লব ঘটানো সৃজিত মুখার্জি। গল্পে দেখানো সফল ব্যবসায়ী ইপ্সিত নায়ারকে যাকে সবাই তার স্মরণশক্তি ও বুদ্ধিমত্তার জন্য মানব কম্পিউটার বলে জানে। কিন্তু পূর্বে ঘটে যাওয়া মাত্র একটি ঘটনা ভুলে যাওয়ার রহস্যময় পরিস্থিতিতে তার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে, অতঃপর সফলতার সিঁড়ি থেকে ধাপে ধাপে নেমে অবশেষে পাগলা গারদে আশয়, এমনই এক গল্প বর্ণিত হয়েছে পর্বটিতে। এ পর্বের মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা আলী ফজল। অনবদ্য এই সাইকোলজিকাল থ্রিলারটির শেষ হয় বিশ্বাসঘাতকতার গল্প উদঘাটনের মাধ্যমে।

বহুরূপীয়া
দ্বিতীয় পর্ব বহুরূপীয়ার (বহুরূপী) প্রধান চরিত্রের নাম ইন্দ্রাশীষ। জীবনের জাঁতাকলে পিষ্ট একাকী যুবক ইন্দ্রাশীষ হঠাৎই তার প্রয়াত দাদির কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করে প্রসথেটিকস ব্যবহার করে চেহারা পরিবর্তন করার দারুণ এক বই, সঙ্গে বিপুল অর্থসম্পদ। এরপরই সে সিদ্ধান্ত নেয় এ জীবন থেকে পালিয়ে সে বহুরূপী এক জীবন বেছে নেবে। কে কে মেনন অভিনীত এ চলচ্চিত্রটিরও পরিচালক সৃজিত মুখার্জি।

হাঙ্গামা হ্যায় কিউ বারপা
সময়কালের অন্যতম সেরা গজল গায়ক গুলাম আলী এর একটি জনপ্রিয় গজল হাঙ্গামা হ্যায় কিউ বারপা। ব্রিটিশ রাজের সামাজিক প্রেক্ষাপটে মদ্যপানের কোন এক পরিস্থিতিতে গানটি রচিত হয়েছে। পর্বটির প্রধান চরিত্র মুসাফির আলিও হালের জনপ্রিয় গজল গায়ক, কোনো এক সফরে তার দেখা হয়ে যায় প্রাক্তন কুস্তিগির এবং বর্তমানের ক্রিড়া সাংবাদিক আসলাম বেগের সঙ্গে। তাদের নানা আলাপে ক্রমশ বের হয়ে আসে তারা দুজন পূর্বপরিচিত এবং তাদের প্রথম পরিচয় পর্বের অভিজ্ঞতাটা একদমই সুখকর ছিলনা। আসলাম বেগের চরিত্রে মনোজ বাজপেয়ী ছিলেন বরাবরের মতোই অনবদ্য। সত্যজিৎ রায়ের লেখা বারীন ভৌমিকের ব্যারাম গল্প অবলম্বনে এই পর্বটি নির্মাণ করেছেন অভিষেক চৌবে। এ নির্মাতা ইতোপূর্বে বানিয়েছেন ইশকিয়া, দেড় ইশকিয়া, উড়তা পাঞ্জাব এর মতো চলচ্চিত্র। সিনেমাটিতে ট্রেনের কামরায় বসে মুসাফির ও আসলাম এর লম্বা কথোপকথনের দৃশ্য দর্শককে উত্তম কুমারের নায়ক সিনেমার কথা মনে করিয়ে দেয়।

স্পটলাইট
সত্যজিৎ রায়ের একই নামের ছোটগল্প থেকে নির্মিত এই পর্বটির পরিচালক ভাসান বালা। ছবিটিতে বিক্রম অরোরা নামের মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছে অনীল কাপুর পুত্র হর্ষবর্ধন কাপুরকে। সফল অভিনেতা বিক্রম এর দেখা হয় দিদি নামের একজনের সঙ্গে, এরপরই পালটে যেতে থাকে তার জীবনের প্রেক্ষাপট। কাহিনীর পরতে পরতে গুপী গাইন বাঘা বাইনসহ ছিল সত্যজিৎ রায়ের প্রতি ট্রিবিউট!
উল্লেখ্য, চারটি নির্মাণই হুবহু সত্যজিৎ রায়ের গল্প থেকে নির্মিত নয়, এখানে পরিচালকরা তাদের মেটা ন্যারেটিভকে জুড়ে দিয়ে নির্মাণ করেছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্যাপারটিকে সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায় খুব ভালোভাবে যে নেননি সেটা নানা সাক্ষাৎকারে ইতোমধ্যে ফুটে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়াগুলো নির্মাণটিতে সত্যজিৎ রায়ের গল্পের চুম্বক অংশকে তেমনভাবে খুঁজে পাননি। তবে সত্যজিৎ রায়ের অমর গল্পগুলো থেকেও নির্মাণগুলো যে নতুন যুগের দর্শকের ভাবনার খোরাক জোগাবে এতে কোনোই সন্দেহ নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়