গলায় খাবার আটকে মৃত্যু প্রতিবন্ধীর

আগের সংবাদ

নতুন সিনেমায় অপি করিম

পরের সংবাদ

মানুষকে সহায়তা করেই আনন্দ পান আজাদ

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিভাষ দত্ত, ফরিদপুর থেকে : জুলাই থেকে দেশে শুরু হচ্ছে কঠোর লকডাউন। যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এতে বিপত্তিতে পড়বে দৈনিক খেটে খাওয়া মানুষ। কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়বে তারা।
এদের কথা মাথায় রেখে খাদ্য সহায়তা নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ফরিদপুরের এক যুবক আলীম আল-রাজি আজাদ। খুঁজে খুঁজে দৈনিক খেটে খাওয়া বয়স্ক লোকদের তিনি খাদ্য সহায়তা করছেন।
এর মধ্যে রয়েছেন রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা। তাদের উপার্জন সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যাবে। এদের প্রত্যেকের পরিবারে রয়েছে বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানরা। এদের এক সপ্তাহের খাবার চাল, ডাল, আটা, পেঁয়াজ, আলু, লবণ সহায়তা দিচ্ছেন আলীম আল-রাজি।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল সোমবার সকালে একটি অটো করে ৪-৫ জন কর্মীকে নিয়ে তিনি শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে ঘুরে এই সহায়তা প্রদান করছেন। কাউকে আবার ফোন নম্বরও দিচ্ছেন যদি পরবর্তীতে সহায়তা লাগে এ জন্য। গতকাল ৩৫ জন দুস্থ লোককে এই সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিদিনই এই সহায়তা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।
ফরিদপুর শহরতলী সাদীপুরের রিকশাচালক শহরে এসেছিলেন রিকশা চালাতে। কিন্তু লকডাউনে তার কোনো আয়ই হয়নি। বাড়িতে ৫ জন সদস্য।
আয় না হলে তাদের মুখে খাবার তুলে দেবেন কীভাবে। হঠাৎই আলীম আল-রাজির ডাক পেয়ে তার কাছে যান।
আলীম তাকে একটি বাজারের ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, কাকা কিছু খাবার দিলাম, আজ বাড়ি চলে যান। খাবার পেয়ে তিনি জানান, গত সাত দিন ফরিদপুরে লকডাউন ছিল। আজ থেকেও দেশব্যাপী রিকশা-গাড়ি বন্ধ, খাবার পেয়ে তার অনেক উপকার হলো। বাড়ির সবার মুখে তিনি আজ খাবার দিতে পারবেন।
জানতে চাইলে আলীম আল-রাজি বলেন, সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অবহেলিত মানুষগুলোর জন্য একটু ভালো কাজ করে যেতে চাই। আমি নিজে এবং সবার সহযোগিতা নিয়ে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। লকডাউনে এই খাদ্য সহায়তা চলমান থাকবে। তিনি আবেদন করেন যেন সমাজের বিত্তশালীরা এই করোনাকালে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়, সহায়তা করে।
শুধু লকডাউনেই নয়, তিনি প্রতিনিয়ত ফরিদপুর শহরের ফুটপাতে পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন অসহায়দের হাতে প্রতিনিয়ত উন্নতমানের প্যাকেট খাবার তুলে দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে এই প্যাকেট খাবার ৩৪০তম দিন অতিবাহিত হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় কুরআন শরিফ প্রদান, জায়নামাজ বিতরণ, প্রতি ঈদে পথে পড়ে থাকা দুস্থ, অসহায়, শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীন, উপার্জনহীন, নিম্নআয়ের মানুষদের ঈদের উপহার নতুন পোশাক প্রদান, ফরিদপুর বৃদ্ধাশ্রমে থাকা সব বাবা-মায়ের জন্য বিভিন্ন রকম ফল ও পোশাক প্রদান, প্রতিমাসেই একজনকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান, টিউবয়েল স্থাপন, দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও শিক্ষাসামগ্রী প্রদান করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়