গলায় খাবার আটকে মৃত্যু প্রতিবন্ধীর

আগের সংবাদ

নতুন সিনেমায় অপি করিম

পরের সংবাদ

চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের বিদায়

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : উয়েফা ইউরোর রাউন্ড ষোলোর ম্যাচে স্পেনের এস্তাদিও লা কারতুজায় বেলজিয়ামের বিপক্ষে ১-০ গোলের ব্যবধানে হেরে রাউন্ড ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। ইউরো থেকে পর্তুগালের বিদায়ের মাধ্যমে কিংবদন্তি রোনালদোরও পুনরায় ইউরোপের রাজা হওয়ার সুযোগ শেষ হয়ে গেছে। কারণ পরবর্তী ইউরো হবে ২০২৪ সালে। ওই সময় পর্যন্ত তার জাতীয় দলে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বেলজিয়ামের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলেও হেরে বিদায় নেয়ার আক্ষেপে পুড়ছে পর্তুগালের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের ৪২ মিনিটের সময় থোগান হ্যাজার্ড হাই ভোল্টেজ এই ম্যাচটির একমাত্র গোলটি করেন।
বেলজিয়ামের বিপক্ষে হারায় পর্তুগালের আক্ষেপের আরেকটি বড় কারণ আছে। আর সেটি হলো তারা ১৯৮৯ সালের পর প্রথমবারের মতো রেড ডেভিলদের বিপক্ষে হেরেছে। এই সময়ের মধ্যে দুই দল মোট পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে। যেখানে পর্তুগাল জয় তুলে নিয়েছিল তিনিটি ম্যাচে। আর বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের অবশ্য এবারের ইউরো মিশনটি ছিল নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে। বেলজিয়ামের বিপক্ষে রাউন্ড ষোলো ম্যাচসহ তারা মোট চারটি ম্যাচ খেলেছে। আর এই চারটি ম্যাচের মধ্যে জয় পেয়েছে মাত্র একটি ম্যাচে। হেরেছে দুটি ম্যাচে। বাকি একটি ম্যাচে ড্র করেছে তারা। ১৯৮৪ সালে ইউরোতে প্রথমবারের মতো খেলে পর্তুগিজরা। আর এই ২০২০ সালের ইউরোতে সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স করেছে তারা। গতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া পর্তুগাল গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই ড্র করেছিল। এরপর নকআউট পর্বে এসে তারা হয়ে যায় দুর্বার। ফলে শেষ পর্যন্ত শিরোপা জয় করে তবেই বাড়ি ফেরে তারা। কিন্তু এবার আর এমন কিছু করতে পারল না রোনালদোরা।
পর্তুগালকে গতকাল হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়ার মাধ্যমে নিজেদেরই একটি পুরনো রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছে বেলজিয়াম। আর সেটি হলো বড় কোনো প্রতিযোগিতায় টানা পাঁচটি ম্যাচ জয়। শুধু তাই নয় রাশিয়া বিশ্বকাপ ও এবারের ইউরোসহ মোট ১১টি ম্যাচ খেলে ১০টিতেই জয় তুলে নিয়েছে বিশ্বের নম্বর ওয়ান দল।
গতকালের ম্যাচটিতে অবশ্য বেলজিয়ামের চেয়ে বেশি আধিপত্য বিস্তার করেছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দলই। কিন্তু রেড ডেভিলদের সীমানায় একের পর এক আক্রমণ করে জালের দেখা পায়নি ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যরা। সেই তুলনায় আধিপত্যে পিছিয়ে থাকলেও সফল এডেন হ্যাজার্ড বাহিনী। পর্তুগালের জালে একটিমাত্র অন টার্গেট শট নিয়েই সেটিকে গোলে পরিণত করেছে তারা। ৪২তম মিনিটে সেই গোলের নায়ক থরগান হ্যাজার্ড। থমাস মুনিয়েরের কাছ থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত এটিই ছিল একমাত্র গোল।
এর আগে রাউন্ড ষোলোর ম্যাচে খেলতে নামে নেদারল্যান্ডস ও চেক রিপাবলিক। চেকদের বিপক্ষে এই ম্যাচটিতে ২-০ গোলের ব্যবধানে হেরে বিদায় নিয়েছে ডাচরা। এর মাধ্যমে একটি লজ্জার রেকর্ডের মালিক হতে হলো নেদারল্যান্ডসকে। আর সেটি হলো গ্রুপ পর্বে সবগুলো ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে প্রথম দল হিসেবে রাউন্ড ষোলোর নির্ধারিত সময়ে গোল হজম করে বিদায় নেয়া।
ম্যাচটির প্রথমার্ধে গোল তুলে নিতে পারেনি দুই দলের কেউ। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে গোল তুলে নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ১০ মিনিট সময় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন নেদারল্যান্ডসের ডি লিট। এতে করে বিপাকে পরে যায় ডাচরা। নেদারল্যান্ডসের একজন খেলোয়াড় কমে যাওয়া ও ডি লিটের মতো খেলোয়াড়ের মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে চেক রিপাবলিক সুযোগ পেয়ে যায়। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ৬৮ মিনিটের সময় থমাস হোলস গোল করে চেকদের এগিয়ে নেন। এরপর ৮০ মিনিটের সময় প্যাট্রিক শিক দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করলে ওই সময়ই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় ডাচদের।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অবশ্য বরবারই ভালো খেলে তাকে চেক রিপাবলিক। ডাচদের বিপক্ষে খেলা শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই জয় তুলে নিয়েছে চেকরা। আর এই পাঁচ জয়ের দুটি এসেছে ইউরোতে। চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে রাউন্ড ষোলোর ম্যাচটিতে হেরে ২০১২ সালের পর বড় কোনো প্রতিযোগিতায় হারের স্বাদ পেয়েছে নেদারল্যান্ডস। ২০১২ সালে গ্রুপ পর্বে পর্তুগালের বিপক্ষে হারার পর আর বড় কোনো প্রতিযোগিতায় হারের স্বাদ পায়নি তারা। ২০১২ সাল থেকে এই ২০২১ সাল পর্যন্ত বড় প্রতিযোগিতায় (বিশ্বকাপ ও ইউরো) মোট ১০টি ম্যাচে তারা অপরাজিত ছিল।
এদিকে পর্তুগাল ইউরো থেকে বিদায় নেয়ার কারণে রোনালদোর সর্বোচ্চ গোলের মালিক হওয়ার অপেক্ষাও বাড়ল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে পর্তুগালের জার্সি গায়ে তিনি ১০৯টি গোল করে ইরানের আলী দাঈয়ের সঙ্গে এখন যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হিসেবে আছেন। ইউরোতে আর একটি গোল করতে বিশ্বরেকর্ড হয়ে যেত তার। কিন্তু সেটি আর হলো না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়