গলায় খাবার আটকে মৃত্যু প্রতিবন্ধীর

আগের সংবাদ

নতুন সিনেমায় অপি করিম

পরের সংবাদ

গলায় কিডনি বিক্রির প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে ঘুরছেন লেখক

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : মহামারি করোনার সংকটময় পরিস্থিতিতে অন্যদের মতো মুক্তিযুদ্ধের গল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক ও চিত্রশিল্পী সাইফুল্লাহ নবীনের উপার্জনের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। হিমশিম খাচ্ছেন সংসার চালাতে। হয়ে পড়েছেন ঋণগ্রস্ত। শেষ পর্যন্ত এখন দিশাহারা হয়ে নিজের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খ্যাতিমান এই লেখক।
গত রবিবার বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে কিডনি বিক্রির প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন সাইফুল্লাহ নবীন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘করোনা! দুই বছরের কাছাকাছি, অসহায় মানুষ, অসহায় আমি। কাজ নেই, কর্ম নেই। ৩ লাখ টাকা ঋণী। ঋণ পরিশোধ করতে কিডনি বিক্রি, রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ’।
সাইফুল্লাহ নবীনের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার চরহোগলা গ্রামে। তিনি গল্প লেখার পাশাপাশি ঢাকায় বাংলা একাডেমির একুশের বইমেলায় বর্ণমালা শিল্প ও স্টল সাজসজ্জার কাজ করতেন। তার প্রকাশিত ৪৯টি বই বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ১০টি, শিশুতোষ গল্পের বই ২১টি, উপন্যাস ১৪টি এবং শিশুদের ছবি আঁকার বই রয়েছে চারটি।
লেখক সাইফুল্লাহ নবীন জানান, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে উপার্জনের সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বই বিক্রি শূন্যের কোটায়। বই লেখার সম্মানীর টাকাও দিচ্ছেন না প্রকাশকরা। সাইনবোর্ড বা ছবি আঁকার কাজও নেই। প্রায় দুই বছর ধরে এমন অবস্থা চলছে। আর্থিক সংকটের কারণে জমি বন্ধক রেখে এবং আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ধারদেনা করে এত দিন সংসার চলেছে। কিন্তু এখন তিনি নিরুপায়। দুই বছর ধরে সংসারে শুধু অভাব-অনটন।
তিনি বলেন, এত দিন সব সময় হাসি মুখে থাকতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু আর পারলাম না। মনোবল ভেঙে যাচ্ছিল। এখন তো কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছি না। একে তো ছেলেমেয়ের দুবেলা খাবার জোটানো নিয়ে চিন্তা, সঙ্গে পাওনাদারদের টাকার দুশ্চিন্তা যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দিশাহারা হয়েই তিনি শেষ পর্যন্ত একটি কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, লেখক সাইফুল্লাহ নবীনের একার উপার্জনে পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে পড়ালেখা করেন। বড় ছেলে বিএসসিতে, একমাত্র মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে এবং ছোট ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়