তথ্যমন্ত্রী : টিআইয়ের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে

আগের সংবাদ

নীরব মহামারি অসংক্রামক রোগ

পরের সংবাদ

এনসিডি নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা : অসংক্রামক রোগে করোনার ২০ গুণ মৃত্যু ঘটে দেশে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনার চেয়ে দেশে ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগে (এনসিডি)। যদিও তালনামূলকভাবে সংক্রামক রোগের প্রতিই গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়। দেশে মোট মৃত্যুর ৭০ শতাংশ ঘটে অসংক্রামক রোগে। এদিকে গুরুত্ব না দিলে ২০৪০ সালে এই হার ৭০ থেকে বেড়ে ৮০ শতাংশে উঠে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম জাতীয় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের বিভিন্ন পর্বে অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা এ আশঙ্কার কথা জানান। ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের শুরু হয় বুধবার। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হবে। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ ৩০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক তথমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন মাহমুদ, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, ইন্টান্যাশনাল সোসাইটি ফর আরবান হেলথ (আইএসইউএইচ) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জো আইভি বাফর্ড, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি টিম লিডার (বাংলাদেশ) সাধনা ভাগওয়াত, অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্ট্রর ডা. মুনির আহমেদ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল রিসার্স সেন্টারের রিসার্স প্রধান অধ্যাপক ডা. রেদওনুর রহমান, আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও আয়োজক কমিটির বৈজ্ঞানিক সেক্রেটারি ডা. আলেয়া নাহিদ। এছাড়াও ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সালান, সিরাজগঞ্জ তিন আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ আজিজ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম সাদি, বিএসএমএমইউর পাবলিক হেলথ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোমেন রাইহান, ব্রিটিশ হাইকমিশনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ডা. শফিকুল ইসলাম, ইরাকের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আলা আলওয়ান, ওজিএসবির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. সামিনা চৌধুরী প্রমুখ।
শাহাদাত হোসাইন মাহমুদ বলেন, শুধু ধূমপানজনিত কারণে দেশে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হচ্ছে সাড়ে তিনশ মানুষের। ক্যান্সার, য²া, হৃদরোগ- এসব অসংক্রামক রোগ প্রত্যেকটির মৃত্যুর হার করোনার মৃত্যুর চেয়ে ৫ গুণ। কিন্তু কেন, যেন আমরা শুধু সংক্রমক রোগের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। বিভিন্ন গবেষণা তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, দেশে এই মুহূর্তে ৮৪ লাখ মানুষ ডায়বেটিসে আক্রান্ত। তাদের ইনসুলেন্সের জন্য বছরে খরচ হচ্ছে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। শুধু ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অনান্য অসংক্রামক রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। করোনার টিকার জন্য এবার সরকারের ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, বাংলাদেশে এনসিডি একটি নতুন ও চলমান বোঝা। দুর্ভাগ্যবশত ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর, এর কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। আমরা আমাদের মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে কাজ করছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় দুটি হাসপাতাল আছে, সেগুলোর উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ হতে কাজ করছে সরকার। আতিকুল ইসলাম বলেন, অসংক্রামক রোগের জন্য আমারই দায়ী। আমার নিজেরাই খেলার মাঠ, খাল দখল করে রেখেছি। মিরপুরে পানি নিষ্কাশনের জন্য ১৭৩ একর জমি আছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এর মধ্যে মাত্র ৩ একর জমি বাদে বাকি ১৭০ একর জমি দখল হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাচ্ছে। সুতরাং কিছু কিছু রোগের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।
হাসানুল হক ইনু বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবাটা মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃতি দেয়া দরকার। সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ৫ থেকে ৭ বছর লাগবে। আগামী বাজেট থেকে যদি আমরা বাড়তি বরাদ্দ শুরু করি, তাহলে ৫ বছরে সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে। অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম সাদি বলেন, আমরা রোগ এবং রোগের চিকিৎসায় গুরুত্ব দেই। কিন্তু রোগের প্রতিরোধের যে বিষয় আছে, আমরা যদি সেই দিকে গুরুত্ব দেই তাহলে অনেক সমস্যার উত্তরণ ঘটাতে পারব। আমরা যদি অসংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে এখনই যুদ্ধের মনোভাব নিয়ে না নামি তাহলে এর ব্যাপকতা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। সামাজিক আন্দোলন ছাড়া এর ব্যাপকতা রোধ করা সম্ভব না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়