সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

তামাবিলে অটোমেশন চালুর প্রতিবাদ : ১২ দিন বন্ধ আমদানি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফারুক আহমদ, সিলেট ব্যুরো : সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার চালুর প্রতিবাদে ১২ দিন ধরে আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সফটওয়্যারভিত্তিক এ কার্যক্রম সময়সাপেক্ষ হওয়ায় পুরনো পদ্ধতিতে ওজন মেপে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার চালুর দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।
তাদের দাবি, দুই দেশের স্থলবন্দরে অটোমেশন পদ্ধতি চালু না হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ওপারে ভারতের ডাউকিতে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পণ্য পরিমাপ করে এ দেশে এনে অটোমেশনে পরিমাপের পর নানা বিড়ম্বনায় পড়ার কথাও জানান ব্যবসায়ীরা।
হঠাৎ করে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তামাবিল স্থলবন্দরের ওপারে হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। গত শুক্রবার থেকে ওই ট্রাকগুলো সীমান্তের ওপারের ডাউকি এলাকায় আটকে আছে। স্থানীয় চুনাপাথর আমদানিকারকদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ না পাওয়ায় এসব ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না। এতে প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন তামাবিল বন্দর দিয়ে ৮০০-৯০০টি পাথর বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করে দেশে। দুই দেশের কাস্টসমের প্রক্রিয়া শেষ করার পর ভারত থেকে এসে এসব পাথর খালাস করা হতো তামাবিল স্থলবন্দরের নিজস্ব জায়গায়। এরপর ওখান থেকে ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে নিয়ে ভেঙে ওই পাথর বিক্রি করেন। তারা বলছেন, অটোমেশিন ব্যবহার শুরু হলে প্রতিদিন ১০০-১৫০টি ট্রাক ঢুকতে পারবে দেশে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ব্যবসায়ীরাই।
তামাবিল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ীরা জানান, গত ৭ জানুয়ারি থেকে তামাবিল স্থলবন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার বসানো হয়। এ পদ্ধতির ফলে ভারত থেকে তামাবিল স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসা পণ্যবাহী যানবাহনগুলো নিবন্ধন করতে হয়। একই সঙ্গে যানবাহনের ওজনও পরিমাপ করা হয়।
এ পদ্ধতিতে আমাদানি করা হলে স্থলবন্দরে পৌঁছার পরপরই খুদে বার্তার মাধ্যমে পণ্যবাহীর গাড়িসংক্রান্ত তথ্য আমদানিকারকের কাছে চলে যায়। আগে সীমান্তের দুই পাশেই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে পণ্যবাহী যানবাহনের মাপজোক করা হতো। পরে তামাবিল স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পর ওজন মাপার স্কেল স্থাপন করা হয়।
তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের যগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন লিপু ভোরের কাগজকে জানান, তামাবিল স্থলবন্দরে এতদিন ‘ওয়েটব্রিজ’ দিয়ে পণ্য পরিমাপ করা হতো। হঠাৎ করে ‘অটোমেশন সিস্টেম’ চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সীমান্তের ওপারে ভারতের ডাউকি স্থলবন্দরে এখনো ‘অটোমেশন’ চালু হয়নি। ডাউকি স্থলবন্দরে ফিতা দিয়ে ট্রাক পরিমাপ করে পণ্যের ওজন নির্ধারণ করে চালান দেয়া হয়।
কিন্তু এপারে ‘অটোমেশন সিস্টেমে’ পরিমাপের পর পণ্যের ওজন বেশি দেখায়। এতে ব্যবসায়ীদের একদিকে বাড়তি রাজস্ব দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংকিং জটিলতায়ও পড়তে হচ্ছে।
কিন্তু উভয় দেশের স্থলবন্দরে ‘অটোমেশন’ চালু থাকলে তাদের এই সমস্যায় পড়তে হতো না।
তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সহসভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, ভারত ডাউকি স্থলবন্দরে অটোমেশনের কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে। ডাউকিতে কাজ শেষ হওয়ার পর তামাবিলে অটোমেশন চালুর জন্য নৌ পরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ সংক্রান্ত একটি আধাসরকারিপত্রও দিয়েছিলেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। কিন্তু কারো কোনো কথা না শুনে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ৭ জানুয়ারি থেকে তামাবিলে অটোমেশন চালু করেছে। ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতির চিন্তা করে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ রেখেছেন। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে এক হাজারের বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে আসে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায় হতো ৫০ লাখ টাকার মতো। কিন্তু আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এ বিষয়ে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ পদ্ধতি বন্ধের দাবিতে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে সফটওয়্যার পদ্ধতি বন্ধ করা হবে কিনা, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, স্থলবন্দর ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে অটোমেশন চালু হয়েছে। এতে সেবার মান আরো বেড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়