ডায়েট ভুলে জমিয়ে খান নুসরাত

আগের সংবাদ

অভিযানে কোণঠাসা কেএনএফ

পরের সংবাদ

অনলাইনে ঈদ বাণিজ্য ছাড়াবে ২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শাহারিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ। অনলাইনে নিয়মিত কেনাকাটা করেন তিনি। এবারের ঈদেও অনলাইন স্টোর পিকাবু থেকে অপ্পোর একটি স্মার্টফোন কিনেছেন। বিদ্যুৎ জানান, আমি নিয়মিত অনলাইনে কেনাকাটা করি। ডেলিভারি সিস্টেম এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। প্রতারিত হওয়ার প্রবণতাও কমেছে।
মূলত গ্রাহকদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতার এ জায়গা তৈরি হওয়ার কারণেই প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটাও বেড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, এবারের ঈদুল ফিতর সামনে রেখে গত বছরের ঈদের তুলনায় প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কেনাকাটা বেড়েছে। খাতসংশ্লিষ্টদের ধারণা, এবার ঈদে অনলাইন কেনাকাটা ছাড়াবে ২ হাজার কোটি টাকা।
দেশের শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিষ্ঠানটির কেনাকাটা বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) তাসফিন আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমাদের অর্ডারের প্রবৃদ্ধি ভালো। প্রত্যাশার চেয়েও এবার বেশি অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ বেশি অর্ডার পেয়েছি। মানুষ মাত্র বোনাস ও বেতন পাওয়া শুরু করেছে। আগামী দুয়েকদিনে অর্ডার আরো বাড়বে। ধারণা করছি, এ বছর গত বছরের চেয়ে ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি অর্ডার পাব আমরা।
ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিক্রির ই-কর্মাস প্ল্যাটফর্ম পিকাবুর সহউদ্যোক্তা ও সিইও মরিন তালুকদার বলেন, ঈদে জামা কাপড় বা অন্যান্য পণ্যের বিক্রি যেভাবে বাড়ে, ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বিক্রি সেভাবে বাড়ে না। তারপরও ঈদ উপলক্ষে মোবাইল ফোনের চাহিদা বাড়ে। প্রতিটি কোম্পানিই ঈদে নতুন নতুন মোবাইল বাজারে নিয়ে আসে। ফলে প্রায় সব ঈদেই আমাদের বিক্রির পরিমাণ কিছুটা বাড়ে। এবার গত বছরের ঈদের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। ক্রেতারা ঈদ উপলক্ষে এখন নানা ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য কিনছেন।
মরিন তালুকদার আরো বলেন, আমরা প্রায় সাত বছর ধরে ব্যবসা করছি। এখন ঢাকার ভেতরে আমরা তিন ঘণ্টাতেও পণ্য ডেলিভারি দিতে পারি। চট্টগ্রাম সিটির ভেতরে অর্ডার করার পরদিনই পণ্য পৌঁছে দিতে পারি। কয়েক বছর আগেও তা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আর গ্রাহকরা এখন জেনেবুঝে পণ্য কেনেন। ই-কমার্সের প্রতি গ্রাহকদের আগ্রহও বাড়ছে।
দেশের শীর্ষ কসমেটিক্স পণ্য বিক্রির ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সাজগোজের সিইও নাজমুল শেখ বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বিক্রি মাত্র ৫ শতাংশের মতো বেড়েছে। নানা কারণেই এবার বিক্রি কম। বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়া ও পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এবার কসমেটিক্স বা বিলাসবহুল পণ্যের বিক্রি কিছুটা কম। তবে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে আমাদের বিক্রি আরো ভালো ছিল।
শীর্ষ এই তিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেই ধারণা পাওয়া গেছে, অনলাইন কেনাকাটা এবার আরো বেড়েছে। বর্তমানে দেশের প্রায় সব ব্র্যান্ডই অনলাইনে তাদের পণ্য কেনাবেচা করছে। পোশাক ও জুতার ব্র্যান্ড ছাড়াও ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ওয়েবসাইট থেকেও গ্রাহকরা এখন বিভিন্ন পণ্য কিনছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে।
এদিকে ই-কমার্স খাতে ইভ্যালি কেলেঙ্কারি ও করোনা মহামারির পর অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ছে গেছে। একসময় আজকের ডিল ও বাগডুম ই-কমার্স খাতের যথেষ্ট জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ছিল। দুটি প্রতিষ্ঠানই এখন বন্ধ। ২০২০ সালে বাগডুম তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ওরিয়ন গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ই-কমার্স সাইটটি বিক্রি করে দিয়েছে। প্রায় বন্ধ হয়ে আছে আজকের ডিলও।
এ ব্যাপারে আজকের ডিলের সিইও ফাহিম মাশরুর বলেন, গত দুই থেকে তিন বছর ধরে আমাদের ই-কমার্স সাইটের অবস্থা পড়তির দিকে। আমাদের ফোকাস আর এখন এ খাতে নেই। বিনিয়োগ অন্য দিকে সরিয়ে নিচ্ছি। বেশির ভাগ ই-কমার্সের অবস্থাই এখন খারাপ। আমদানি খরচ বেড়েছে, পণ্যের দাম বেড়েছে, ই-কমার্সে আস্থা কমেছে, সব মিলিয়ে খাতটি এখনো ভালো হয়ে ওঠেনি। ইভ্যালির ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশের ই-কমার্স খাত।
শুধু ই-কমার্স সাইটও নয়, এফ-কমার্স তথা ফেসবুক প্ল্যাটফর্মও অনলাইন কেনাকাটার জন্য একসময় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এমন অনেক ফেসবুক পেজের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। আবার গত এক বা দুই বছরে গড়ে ওঠা নতুন অনেক ফেসবুক পেজও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক তাসফিন আলম বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিক্রি বেড়েছে। ই-কমার্স সাইটগুলোতে এ বছর রমজানের প্রতিদিন ছয় থেকে সাত লাখ অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে। গড়ে প্রতিটি অর্ডারের মূল্য এক হাজার ২০০ টাকা। সে হিসাবে রমজানের ৩০ দিনে ই-কমার্স খাতে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি বেচাবিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়