আজকের খেলা

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাস নির্মূল হোক

পরের সংবাদ

বলিউডের তিন খানের ঈদ সমাচার

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বলিউডের তিন খান- শাহরুখ, সালমান ও আমির। ঈদের দিন কীভাবে কাটে এই তিন তারকার। তাদের ছোটবেলার ঈদের স্মৃতি কেমন- সেসব জানাচ্ছে মেলা
শাহরুখের বাড়িতেই হয় ঈদের জামাত
শাহরুখ খানের কাছে ঈদ হলো মিলনের উৎসব। ফলে ঈদের দিনটি কখনোই একা কাটাতে চান না এ তারকা। গত কয়েক বছরে তার রেওয়াজ হলো পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন ঈদের দিন তিনি ফিরে আসেন তার প্রিয়জনদের কাছে। শুধু নিজের পরিবার, আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে নয়, এদিন তার বাড়ি ‘মান্নাত’-এ তিনি আমন্ত্রণ জানান সংবাদমাধ্যমের লোকজনদেরও। এমনকি বাড়ির বাইরে অপেক্ষারত অনুরাগীদেরও নিরাশ করেন না। কিং খানের ঈদের দিন শুরু হয় ঈদের নামাজ পড়ার মধ্য দিয়ে। ঈদের দিন সকালবেলা তার বাড়িতেই হয় ঈদের জামাত, নামাজ পড়াতে আসেন মৌলভি। এরপর মান্নাতের বাইরে অপেক্ষারত ভক্তদের ‘ঈদ মোবারক’ জানান শাহরুখ। এ সময় তার সঙ্গে পরিবারের কেউ কেউ থাকেন। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেন, ‘ছোটবেলায় ঈদের দিনে আমি কিছুতেই কুর্তা-পাজামা পরতে চাইতাম না। মা আমাকে জোর করে পরাতেন। আমিও আমার ছেলেকে জোর করে পাঠানি স্যুট ও আচকান পরাই।’ শাহরুখের স্মৃতিকথা থেকে জানা যায় তার কৈশোরের ঈদ সম্পর্কেও, ‘ঈদের দিনে বাবার স্কুটিতে চেপে মসজিদে যেতাম নামাজ পড়তে। মা হায়দ্রাবাদি খাবার বানাতেন। আর বাবা বানাতেন পাঠানি খাবার। প্রতি ঈদেই মান্নাতে আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলন ও ভূরিভোজ অনুষ্ঠানের। তবে কিং খানের বাড়ির ইফতার মাহফিলে যে ভূরিভোজ হয়, তার নামডাকও কম নয়। সমগ্র বলিউড এ উপলক্ষে জড়ো হয় মান্নাতে। প্রতি বছর সামাজিক মাধ্যমেও সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান শাহরুখ। ঈদের দিন বন্ধু সালমান খানের বাড়ির খাবারের দিকে তাকিয়ে থাকেন শাহরুখ খান। হ্যাঁ, ঘটনা সত্য। এদিন সাধারণত বাড়ির খাবার খান না কিং খান, বরং অপেক্ষা করে থাকেন বন্ধু সালমানের বাড়ির খাবারের জন্য।

সাদামাটা আর অনাড়ম্বরভাবে ঈদ কাটে আমিরের
বলিউডের আরেক খান আমির খানের ঈদ উদযাপন শাহরুখ ও সালমানের চেয়ে একটু আলাদা। খুবই সাদামাটা আর অনাড়ম্বরভাবে ঈদ উদযাপন করেন তিনি। সাধারণত আমিরের ঈদ শুরু হয় তার ‘আম্মির’ (মায়ের) বাড়ি দিয়ে। ছোটখাটো সংবাদ সম্মেলনের পর তিনি সোজা চলে যান আম্মির বাড়িতে। এই বলিউড তারকার সঙ্গে তখন থাকেন সাবেক স্ত্রী-পুত্র কিরণ রাও ও আজাদ। খুদে আজাদকেও সে সময় দেখা যায় বাবার মতো সাদা কুর্তা-পাজামাতে। আর কিরণ এ দিন সাজেন ভারতীয় পোশাকে। ঈদের দিন আমিরের আম্মির বাড়িতে আসেন সব আত্মীয়। এমনকি আমিরের সাবেক পতœী রীনা পুত্র জুনেইদ ও কন্যা ইরাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হয় পারিবারিক এ উদযাপনে। ছোটবেলার ঈদ প্রসঙ্গে আমির বলেন, ‘ঈদের থেকে ছোটবেলায় আমাদের কাছে মূল আকর্ষণ ছিল ঈদি। ঈদি পাওয়ার লোভে আমরা বড়দের বারবার সালাম করতাম।’ ছেলে আজাদকে কী পরিমাণ ঈদের সালামি দেন আমির? প্রশ্নের উত্তরে তার মুখে শোনা গেল, ‘আমি দুই টাকার মতো ঈদি পেতাম। আমার ছেলেকেও দুই টাকাই দিই। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পেলে স্বভাব নষ্ট হবে।’

পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে ঈদ কাটাতে ভালোবাসেন সালমান খান
সালমান খানের কাছে ঈদ মানে হলো তার ছবি মুক্তির দিন। বরাবরই ছবি মুক্তির দিন হিসেবে এ তারকা বেছে নেন পবিত্র এই দিনকে। দাবাং, কিক, এক থা টাইগার, বজরঙ্গি ভাইজান, সুলতান, টিউবলাইট- সালমানের এসব ছবি তো মুক্তি পেয়েছে ঈদের দিনে। শাহরুখের মতো সালমানও এই বিশেষ দিনটি পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কাটাতে ভালোবাসেন। রমজান মাসে সাধারণত অন্য সময়ের চেয়ে একটু আগেভাগে ঘুম থেকে ওঠেন সালমান। এ সময় বান্দ্রায় তার বহুতল ভবনের সামনে সাহায্যের আশায় রোজই দাঁড়িয়ে থাকে কিছু মানুষ। সালমান সাধ্যমতো সাহায্য করেন তাদের। তবে চিকিৎসার জন্য কেউ এলে সাধারণত শূন্য হাতে ফেরান না এ তারকা। তার বাবা লেখক সেলিম খান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অসহায়-দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ঈদের নামাজ পড়ার মাধ্যমে শুরু হয় সালমান খানের ঈদ। তারপর পুরো সময়টা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গেই কাটান। এদিন বলিউডের অনেক তারকাই নিমন্ত্রিত থাকেন সালমানের বাড়িতে। তাই এদিন সবাই অপেক্ষা করেন, সাল্লুর বাড়ির খানদানি বিরিয়ানি খাবে বলে। এটি সালমানের মায়ের নিজস্ব রেসিপি। বলিউডের প্রায় সব তারকাই কোনো না কোনো সময় এই বিরিয়ানির স্বাদ নিয়েছেন। তবে সারাবছর ডায়েটের বিধিনিষেধের ভেতরে থাকলেও ঈদের সময় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে কোনো কিছুকেই পাত্তা দেন না সালমান, নিয়ম ভেঙে খান সবকিছুই। শির-খুরমা তার ভীষণ পছন্দের। তাই মনভরে শির-খুরমা খান এদিন। পরে অবশ্য নানারকম ব্যায়াম ও কসরতের মাধ্যমে ঝড়িয়ে ফেলেন বাড়তি ক্যালরি। শাহরুখ খানের মতো সালমানও প্রতি বছর ঈদে নিয়ম করে তার অনুরাগীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং হাত নেড়ে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। তার বহুতল ভবনের বারান্দায় বাবা, ভাই ও বোনদের সঙ্গে নিয়ে সপরিবার এসে দাঁড়ান। ‘নায়ক’কে একনজর দেখার আকাক্সক্ষায় অগণিত মানুষ সকাল থেকে ভিড় করে থাকে সালমানের বাড়ির সামনে। সারাদিনের ব্যস্ততার পর প্রতি বছর ঈদের সন্ধ্যায় নিয়ম করে আতশবাজি ফোটান সালমান। নিজের কৈশোরের রংবেরঙের ঈদ-স্মৃতি শোনা যায় সালমানের মুখে, ‘বিশেষ এই দিনে আমরা পরিবারের সবাই এক হতাম। বাড়ির আঙিনায় ব্যবস্থা করা হতো খাবার-দাবারের। প্রচুর খাওয়া-দাওয়া হতো। আমরা ছোটরা ব্যস্ত থাকতাম ক্রিকেট, ফুটবল খেলায়। আর বড়রা নিজেদের মধ্যে আড্ডা দিতেন। এদিন আমাদের বাড়িতে প্রচুর মানুষ আমন্ত্রিত থাকতেন। কেবল মুসলিম নয়, হিন্দু, কোলি, পার্সি, ক্যাথলিকসহ বিভিন্ন স¤প্রদায়ের মানুষ ঈদের দিনে আসতেন আমাদের বাড়িতে। মনে হতো আমরা সবাই একই পরিবারের। বাড়ির বাইরেও বহু মানুষকে খাবার দেয়া হতো।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়