সাবের হোসেন চৌধুরী : বনের জমি দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও ছাড় নয়, বন কর্মকর্তার খুনিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

আগের সংবাদ

সর্বাত্মক অভিযানে যৌথবাহিনী

পরের সংবাদ

ঈদকে ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে : সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লী

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খন্দকার মোহাম্মাদ আলী, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদ। তাই শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলোতে। বিভিন্ন নকশার শাড়ি-লুঙ্গি তৈরি করছেন তারা। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার কাপড়ের চাহিদা কম। এছাড়া রং, সুতা ও বিভিন্ন কাঁচামালের দাম বাড়ায় শাড়ি-লুঙ্গি তৈরির খরচ বেড়েছে।
জেলার তাঁত পল্লীতে পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করেন নারী শ্রমিকরা। তারা নলি ভরা, সুতা প্রস্তুত করা, মাড় দেয়াসহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন। এ অঞ্চলের উৎপাদিত শাড়ি ও লুঙ্গি দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হয় ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ঢাকার বিভিন্ন বুটিক হাউস এসব শাড়ি-লুঙ্গি রপ্তানি করছে বলে জানান তাঁত মালিকরা।
এ ব্যাপারে উপজেলার বেলকুচি গ্রামের তাঁত মালিক রহমত আলী ভোরের কাগজকে বলেন, গত বছর ব্যবসা মোটামুটি ভালো হয়েছে। এবারো চাহিদা রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনাই কম। শ্রমিকরা দিন রাত পরিশ্রম করছেন। তারা বাহারী রঙ্গের শাড়ি-লুঙ্গি তৈরি করছেন। রং ও সুতাসহ কাঁচামালের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এজন্য খুব একটা লাভবান হতে পারছি না।
রং-সুতার দাম বেশি হওয়ায় কাপড়ের বাজারে প্রভাব পড়েছে বলে জানান বেলকুচি উপজেলার তামাই এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম। তিনি বলেন, অবস্থা ভালো না। ঋণ করে ব্যবসা করতে হয়। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। বেচাকেনা তুলনামূলক কম। শ্রমিক ও সংকট রয়েছে। কামকাজের অবস্থা ঈদের আগে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। একই কথা জানান কামারখন্দ উপজেলার হায়দারপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, এবার কাপড়ের চাহিদা কম।
বেলকুচি উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের শ্রমিক ইউসুফ আলী বলেন, আমরা যেভাবে কাজ করি সেভাবে আমাদের বেতন নাই। ছয় দিন কাজ করলে ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা মজুরি পাওয়া যায়। তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। মজুরি কম হওয়ায় শ্রমিকরা আসে না। আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই।
সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প অনেক পুরনো বলে জানান বেলকুচি হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বৈদ্যনাথ রায়। তিনি বলেন, আমরা ভালো শাড়ি তৈরি করি। প্রধানমন্ত্রীও আমাদের বেলকুচির তাঁতের শাড়ি পরেন। আমরা চাচ্ছি এ শাড়ির ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য। এ জন্য সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা কামনা করি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদিউজ্জামান মণ্ডল ভোরের কাগজকে বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলায় সাড়ে তিন লাখের ওপরে তাঁত রয়েছে।
এসব তাঁতে যে কাপড় উৎপাদন হয়। ঈদকে কেন্দ্র করে ৩ হাজার কোটি টাকা কাপড় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা সেই অনুপাতে কম সাড়া পাচ্ছি। শাড়ি-লুঙ্গি বিক্রির যে রমরমা ভাব সেটা নেই। রং, সুতাসহ বিভিন্ন কাঁচামালের দাম বাড়ায় কাপড়ের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। গত বছরের তুলনাই এবার চাহিদা একটু কম। রয়েছে শ্রমিক সংকট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়