পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও আইওএম মিশনপ্রধানের

আগের সংবাদ

পাহাড়ে নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ

পরের সংবাদ

৫০০ কোটি টাকা বিক্রির আশা : জমে উঠেছে রাজশাহীর ঈদ কেনাকাটা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, রাজশাহী : ঈদুল ফিতরের খুব বেশিদিন বাকি নেই। এরই মধ্যে জমে উঠেছে রাজশাহীর ঈদ বাজার। বিশেষ করে থ্রি পিস, শাড়ি ও পাঞ্জাবি বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া লেহেঙ্গা, ফ্লোর টাচ, আলিয়া, নায়রা, সিঙ্গেল কোত্তাসহ বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক সহজেই ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বাজার তত জমে উঠছে। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি পোশাকের দামই বেশ বেড়েছে। ঈদুল ফিতরে নারী ও শিশুদের পোশাক বেশি বিক্রি হয়। সেসব পোশাকের দামও যেন এর মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি। নতুন পোশাকের পসরা সাজানো বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারিতেই এবার তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পোশাক। আর ক্রয়মূল্য বেশি হওয়ার কারণেই তাদের বেশি দামে বিক্রিও করতে হচ্ছে।
সরজমিন দেখা গেছে, রাজশাহীর সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট ও গণকপাড়া এখন বেশ সরগরম। রমজানের প্রথম ১০ দিন পার হওয়ার পর এসব এলাকায় বিপণি বিতানগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করে। বাবা মমিনুল ইসলামের হাত ধরে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিল ছোট্ট শিশু মাসুদা। তার পছন্দ ‘নাইরা কাট’ জামা। বাবা মমিনুল ইসলাম বলেন, দাম অনেক বেশি। গতবারের চেয়ে অন্তত দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি দামে পোশাক বিক্রি হচ্ছে। তবে উৎসবে যত কষ্টই হোক, বাচ্চাদের নতুন পোশাক কিনে দিতেই হবে। একটা ‘নাইরা কাট’ জামা কিনেছি, ১৮০০ টাকা নিয়েছে। এটা অনেক বেশি।
রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটের বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, রোজার প্রথম থেকেই ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে আসতে শুরু করেছেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর সব পোশাকের দামই বেড়েছে। এবার বেশি আলিয়া কাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন। তবে তরুণীদের বেশি আগ্রহ আলিয়া কাট ও নাইরা কাটে। এগুলো মানভেদে ১২০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর সব বিপণিবিতান আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোও ঝলমলে আলোতে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা আশাবাদী এবারের ঈদবাজার নিয়ে। ফড়িং রাজশাহী শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন বলেন, আমরা ঈদকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি। নতুন নকশার বিভিন্ন ফ্যাশনের পণ্য আনা হয়েছে। বিশেষ করে নাইরা কাটিং, সিকুন্সের পাঞ্জাবি, বিভিন্ন নিজস্ব ডিজাইনের থ্রিপিস আনা হয়েছে।
এদিকে বেচা-বিক্রি বাড়তে থাকায় নগরীর শপিং মল থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণি বিতানগুলো সেজেছে নতুন রূপে। ক্রেতাদের টানতে মার্কেটগুলোতে বাহারি রঙের বিভিন্ন ডিজাইনের নায়রা, আলেয়া, সিঙ্গেল কোত্তা, ফ্লো-টার্চসহ ভারতীয় বিভিন্ন ল্যাহেঙ্গার আধিক্য রয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, দেশি-বিদেশি যাই হোক ঈদে চায় পছন্দের পোশাক কিন্তু তা হতে হবে সাধ্যের মধ্যে। শুধু মার্কেট নয়, বিভিন্ন দেশীয় ব্র্যান্ডের আউটলেটেও যাচ্ছেন ক্রেতারা।
রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি মোড়ে আড়ং ফ্যাশনে কেনাকাটা করতে এসেছেন মাসুদা খাতুন। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান বা অন্য পোশাকগুলো সবাই আনতেই পারে। কিন্তু দেশীয় পণ্যগুলো মূলত একটি কোম্পানির এক একটি আলাদা ডিজাইন থাকে। ইউনিক হয়। তাই এখানেই কিনতে এসেছি। ভালোও লাগছে। দামও সামর্থ্যরে মধ্যে। লা-রিভ ফ্যাশানে ক্রেতা ইমন হোসেন বলেন, দেশীয় পণ্য বেশ সুন্দর হয়। এছাড়া পরিধান করেও বেশ স্বাচ্ছন্দ্য লাগে। তাই দেশীয় পণ্যের উপরেই ঝুঁঁকেছি। এবার দেশীয় পণ্যেই ঈদ করব।
ক্রেতা চাহিদা মাথায় রেখে বিদেশি পোশাকের পাশাপাশি দেশীয় আউট লেটগুলোতে শোভা পাচ্ছে, লং কামিজ, আবায়া, নাগিসাস, টারকিস, যা ক্রেতাদের বেশ আকৃষ্ট করছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গ্রামীণ চেক রাজশাহী শাখার ম্যানেজার শামসুল হক বলেন, গ্রামীণ চেক বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে এবার। দেশীয় ডিজাইনের ওপর বেশ কিছু শাড়ি আনা হয়েছে। ব্যবসাও বেশ ভালো হচ্ছে। দর্জি বাড়ি ফ্যাশানের ম্যানেজার ফয়সাল হোসেন বলেন, দেশীয় ফ্যাশন হিসেবে এবার অনেক কিছু এসেছি। আশা করছি বেশ ভালো ব্যবসা হবে। আমাদের যে টার্গেট তা পূরণ করতে পারবো। বেশ সাড়া পাচ্ছি।
প্রতি বছরের মতো এবারো ভিন্ন ভিন্ন নামের পোশাক এসেছে বাজারে। এ বছর আলিয়া কাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন বেশি চলছে। এর মধ্যে ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণে পরিণত হয়েছে নারীদের ‘আলিয়া কাট’ আর ‘নাইরা কাট’ জামা। এছাড়া বাচ্চাদের পোশাক, বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও রয়েছে সমান আকর্ষণ। ১২০০ থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পোশাক। নগরীর সাহেববাজারে অবস্থিত আরডিএ মার্কেটের ক্রেতাগোষ্ঠী প্রধানত মধ্যম আয়ের মানুষ। এবারো এ মার্কেটে বাহারি রঙের পোশাক এসেছে। তবে দাম বেশি বলে অসন্তুষ্টি জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
এবারের ঈদে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার জামা-কাপড় বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। এ ব্যাপারে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দোর আলী ভোরের কাগজকে বলেন, ঈদের কেনাকাট জমে উঠেছে। এবার ৫০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে বলে আশা করছি। এখন গড়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার বেচাকেনা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়