পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও আইওএম মিশনপ্রধানের

আগের সংবাদ

পাহাড়ে নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ

পরের সংবাদ

ডেমরায় বিলাসবহুল ১৪ বাসে আগুন নিয়ে রহস্য : নাশকতা কিনা খতিয়ে দেখছে র‌্যাব

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়ার ধার্মিকপাড়া এলাকায় গ্যারেজে থাকা লন্ডন এক্সপ্রেসের বিলাসবহুল ১৪টি এসি বাসে (ভলভো কোচ) অগ্নিকাণ্ড নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা- তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে ঈদের আগে একই কোম্পানির বিলাসবহুল এতগুলো বাসে আগুন লাগা, ঘটনার সময় গ্যারেজে দায়িত্বরত প্রহরী না থাকা, গ্যারেজের পেছনের দিকে আগুন লাগা, এত বড় ক্ষতির পরও মালিকপক্ষের কোনো অভিযোগ না করার বিষয়গুলো নানারকম ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটি নাশকতা কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি এর পেছনে কারো সংশ্লিষ্টতা থাকে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সবাই যখন তারাবির নামাজে ব্যস্ত, তখন প্রায় অন্ধকার ওই গ্যারেজে জ্বলে ওঠে আগুন। এক বা একাধিক বাসে আগুন দেখে থমকে দাঁড়ায় পথচারীরা। কিন্তু সে সময় গ্যারেজে ছিল না কোনো নিরাপত্তা রক্ষী বা কর্মী। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো হলেও পুড়ে যায় গ্যারেজের সবগুলো বাস। ফায়ার সার্ভিস ঢাকা দক্ষিণের উপসহকারী পরিচালক এ.কে.এম শামসুজ্জোহা জানান, আগুন লাগে গ্যারেজের পেছন দিক থেকে। বাতাসের কারণে এক গাড়ি থেকে আরেক গাড়িতে দ্রুত আগুন ছড়ায়।
অগ্নিকাণ্ডের পরই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় র‌্যাব ও পুলিশ। বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইমসিন ইউনিট। ঘটনাস্থলে যাওয়া র‌্যাব-১০র পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন মাহমুদ জানান, পুরো গ্যারেজের দায়িত্বে ছিলেন দুইজন নিরাপত্তা প্রহরী। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের সময় তারা গ্যারেজে ছিলেন না। এটি নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এত বড় অগ্নিকাণ্ডের পরও লন্ডন এক্সপ্রেসের মালিকপক্ষ বা নিরাপত্তা প্রহরীদের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ডিএমপির ডেমরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মধুসূদন দাস ভোরের কাগজকে বলেন, এটি নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা সেটি আমরা নিশ্চিত নই। নাশকতা হলে সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে। প্রাথমিকভাবে এটিকে নাশকতা বলে মনে হয়নি। আমরা মালিক কে ডেকে কথা বলেছি।
এ ঘটনার পেছনে কারো ষড়যন্ত্র বা অন্য কোনো উদ্দেশ ছিল কিনা জানার চেষ্টা করেছি। মালিক পক্ষ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ দেয়নি। মালিক পক্ষের নুরুল নামে একজন আমাদের কাছে এসেছিলেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তাদের কোনো অভিযোগ নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাশকতার কোনো প্রমাণ পেলে তারা অভিযোগ দায়ের করবেন।
এদিকে আগুনের ঘটনাটি নাশকতা কিনা তা খতিয়ে দেখছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গত সোমবার রাতে যে বাসগুলো পুড়েছে, সে বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তারপরও আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা নাকি নাশকতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খন্দকার আল মঈন বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে, তারা কোনো সন্দেহ করলে সেটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। এটা নাশকতা কিনা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।
তদন্ত কমিটি গঠন : লন্ডন এক্সপ্রেসের ১৪টি বাস পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনকে। বাকি দুজনের নাম জানানো হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়