গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : ভারতের সবচেয়ে নিম্নমানের প্রোডাক্ট আওয়ামী লীগ

আগের সংবাদ

বহুমাত্রিক কৌশল আ.লীগের

পরের সংবাদ

পতিত জমিতে সবজি চাষ করে লাখপতি কৃষক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, তাহিরপুর থেকে ফিরে : হাওর বেষ্টিত ভাটির জনপদ হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের গইরাবাজ গ্রামের জালাল উদ্দিন গইরাবাজ কিত্তায় (ছোট হাওর) পতিত জমিতে সবজি চাষ করে লাখপতি হয়েছেন।
সবজি চাষে জালালের এমন সাফল্য দেখে গইরাবাজ এবং পার্শ্ববর্তী আরো কয়েকটি গ্রামের মানুষ এখন সবজি চাষ করে সাবলম্বী হয়েছেন। তারা হলেন- একই গ্রামের আলাল উদ্দিন, লিটু মিয়া, রফিক মিয়া, শহিদ মিয়া, লাল মিয়া, হাদির ইসলাম ও হযরত আলী।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়- জালাল উদ্দিনের নিজস্ব তেমন কোনো জমি না থাকায় অন্যের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে ৪৫ শতক জমিতে শশা, ১৫ শতক জমিতে কাঁচামরিচ, ১৫ শতক জমিতে শিম ও ১৫ শতক জমিতে চিচিঙ্গা চাষ করেন। এ কাজে তিনি আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে টাকা নিয়েছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে মহাজনী ঋণ। তাছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকেও কোনো রকম সাহায্য-সহযোগিতা পাননি তিনি। জালাল উদ্দিনের সফলতা দেখে অপর সবজি চাষি রফিক মিয়া জানান- জালাল গত দুই বছর ধরে সবজি চাষ করে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছে। তা দেখে আমি ও আমাদের গ্রামের অনেক কৃষকই এখন ধান চাষ করা বাদ দিয়ে সবজি চাষ শুরু করেছি। এতে অনেক লাভবান হচ্ছি।
অপর সবজি চাষি হযরত আলী বলেন- ১২ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করলে সেচ, বীজ, সার, কিটনাশক, শ্রমিকের মজুরিসহ প্রায় লাখ টাকার মতো খরচ হয়। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে এবং ফসল ভালো হয় তাহলে ১২ বিঘা জমি থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ মণ ধান পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। এখন জালালের সবজি চাষে সাফল্য দেখে আমি ও আমাদের গ্রামের প্রায় ৮-১০ জন গত দুই বছর ধরে সবজি চাষ করে প্রতি বছরই লাখ টাকার উপরে আয় করছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জালাল উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন- ৪৫ শতক জমিতে শশা চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১৫ শতক জমিতে কাঁচামরিচ চাষ করতে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ১৫ শতক জমিতে শিম চাষ করতে খরচ হয়েছে- ৩০ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন ৫৫ হাজার টাকা, ১৫ শতক জমিতে চিচিঙ্গা চাষ করতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া আরো ১৫ শতক জমিতে কাঁচা মরিচ রয়েছে। এগুলো আষাঢ় মাসে বিক্রি হবে এবং লাভ হবে এখনের সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন।
তিনি বলেন- এসব জমিতে আগে ধান চাষ করতাম। এখন আর ধান চাষ করি না। ধান চাষ করে প্রতি বিঘায় বড় জোড় ৩-৫ হাজার টাকা লাভ হয়। আর যদি বৈরী আবহাওয়া, বন্যা অথবা পাহাড়ি ঢল নামে তাহলে তো কোনো কথাই নেই। সারাবছরের কষ্টের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়।
জালার উদ্দিন আরো বলেন- আত্মীয়-স্বজনের ধার-দেনা, মহাজনী ঋণ, জমির মালিকের বর্গার টাকা, সার, বীজ ও কিটনাশকসহ সবকিছু বাদ দিয়েও আমার লাখ টাকার উপরে আয় হবে। তবে কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা পেলে এবং সরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারলে আরো বেশি লাভবান হতাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়