ঢাবি ছাত্র রহিম হত্যা মামলা : চব্বিশ বছর পর সাত জনের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

ঈদযাত্রায় এবার স্বস্তির আশা

পরের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু : বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের স্থপতি

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা লেখক নিরঞ্জন মজুমদারের ‘বঙ্গবন্ধু ও রক্তাক্ত বাংলা’ শীর্ষক নিবন্ধের কয়েকটি লাইন দিয়ে প্রবন্ধটি শুরু করতে চাই। তিনি লিখেছেন, ‘দেশে দেশে নেতা অনেকেই জন্মান। কেউ ইতিহাসের একটি পঙ্ক্তি, কেউ একটি পাতা, কেউ বা এক অধ্যায়। কিন্তু কেউ আবার সমগ্র ইতিহাস। শেখ মুজিব এই সমগ্র ইতিহাস। সারা বাংলার ইতিহাস। বাংলার ইতিহাসের পলিমাটিতে তাঁর জন্ম। ধ্বংস, বিভীষিকা, বিরাট বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে সেই পলিমাটিকে সাড়ে সাত কোটি মানুষের চেতনায় শক্ত ও জমাট করে একটি ভূখণ্ডকে শুধু তাদের মানসে নয়, অস্তিত্বের বাস্তবতায় সত্য করে তোলা এক মহা ঐতিহাসিক দায়িত্ব। মুজিব মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে মৃত্যুঞ্জয় নেতার মতো এই ঐতিহাসিক ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতিহাসের সন্তান ইতিহাসকে পুনর্নির্মাণ করেছেন। এখানেই তার নেতৃত্বের ঐতিহাসিকতা।’
পৃথিবীর একটি অন্যতম স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আবির্ভাব হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বাঙালির অস্তিত্ব, ঠিকানা এবং আবেগের অপর নাম স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা হচ্ছে রক্তঝরা এক মহাকাব্যিক ইতিহাস। এ মহাকাব্যের মহানায়ক হচ্ছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ তথা পাকিস্তান আন্দোলনের মূল ভিত্তি ছিল মুসলিম লীগ উত্থাপিত সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্ব। ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সামাজিক রীতিনীতি ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমানরা এক জাতিভুক্ত- এ ধারণাটি কাজ করেছিল দ্বিজাতিতত্ত্বের উদ্যোক্তাদের মধ্যে। পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়। নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের একটি অংশ হিসেবে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক যাত্রা শুরুর অব্যবহিত পরই বলতে গেলে স্বাধীনতার পটভূমি রচিত হয়। বাঙালিরা সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সকল প্রকার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে। পশ্চিম পাকিস্তানে গড়ে ওঠে শিল্পকারখানা এবং সম্পদের পাহাড়, আর বাংলাদেশকে তার কাঁচামালের জোগানদাতা বানানো হয়। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। এর প্রেক্ষাপটে রচিত হয় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের প্রথম কারাবন্দিদের মধ্যে একজন ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়ার জন্য পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে বিনাবিচারে বঙ্গবন্ধুকে এক নাগাড়ে দুই বছরের অধিক সময় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।
পরবর্তী সময়ে পূর্ব বাংলার ’৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে বাঙালি এক অভাবনীয় ধস নামানো বিজয় অর্জন করে। ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন এবং এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি ঘোষণা করেন। কারণ ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় ১৭ দিন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণ অরক্ষিত ছিল। ফলে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবি; যা দেশ ভাগের সময় থেকেই উচ্চারিত হচ্ছিল, তা পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর আরো জোরদার হয়। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত এ ছয় দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। এভাবেই তিনি অচিরেই ‘ক্যারিশমেটিক লিডার’ এ পরিণত হন। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। এভাবে তথাকথিত ষড়যন্ত্র মামলাটি পূর্ববাংলার জনগণের মনে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের পরিবর্তে সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শক্তির হাত থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের বীজ বপন করে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের তীব্র আন্দোলনের চাপের মুখে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে সব রাজবন্দির মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করে গড়িমসি করে। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ইয়াহিয়া খান জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহ্বান করে গোপনে বাঙালি হত্যার নীল নকশা তৈরি করেছিলেন। ১ মার্চ ঘোষণার মাধ্যমে ৩ মার্চ জাতীয় সংসদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়। এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাসহ সারা বাংলায় বিদ্রোহের আগুন জ¦লে ওঠে। ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ সেøাগানে সমগ্র ঢাকা শহর মুখরিত হয়। সহসা ঢাকা হয়ে ওঠে মিছিলের নগরী। ১ মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিতাদেশ হওয়ার পর মূলত পূর্ব বাংলার শাসন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলতে থাকে। এমতাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ কার্যকরী পরিষদের জরুরি বৈঠকে ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে সাড়া দেয়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু বাঙালির আশা আকাক্সক্ষার প্রতীক হিসেবে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ৭ কোটি বাঙালির বেঁচে থাকার স্বপ্ন চির কাক্সিক্ষত স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা প্রদান করলেন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। বাঙালি জাতিকে মুক্তির আহ্বান জানিয়ে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল, তোমাদের যা কিছু আছে তাই দিয়ে শত্রæর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা আছে সবকিছু- আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।… সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।… রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দিব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।… এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ বঙ্গবন্ধু যখন এ কালজয়ী ভাষণ প্রদান করেন তখন তিনি প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রেসিডেন্ট নন। কিন্তু তখন থেকেই তাঁর নির্দেশে পূর্ব বাংলার সবকিছু পরিচালিত হয়। একটি জাতির মুক্তি, একটি জাতির জন্ম, একটি জাতির প্রতিষ্ঠা, একটি জাতির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ সব কিছুতেই তিনি ছিলেন অবিচ্ছেদ্য।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে অভিযান পরিচালনা করে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা শুরু করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের দ্বারা গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঘোষণাটি ছিল, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণ, তোমরা যে যেখানেই আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সৈন্যবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’ বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা বাংলাদেশের সর্বত্র ওয়্যারলেস, টেলিফোন ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রেরিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বাংলায় একটি বার্তা পাঠান। বার্তাটি হচ্ছে, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে, আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রæদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোনো আপস নাই। জয় আমাদের হবেই। পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রæকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক প্রিয় লোকদের কাছে এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন। জয় বাংলা।’ বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে পূর্ব বাংলার আপামর জনসাধারণ সর্বশক্তি দিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে চূড়ান্ত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর সুদক্ষ নেতৃত্বের বদৌলতে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। বঙ্গবন্ধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, যিনি তাঁর বিচক্ষণতা, সাহস, ত্যাগ, মেধা আর অনন্যসাধারণ রাজনৈতিক নেতৃত্বে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরাচার আর শোষণে-বৈষম্যের বিরুদ্ধে অবহেলিত বাঙালি জাতিকে দুর্বার অধিকার সচেতন করে তুলেছিলেন। তাঁর আপসহীন নেতৃত্বে বাঙালির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছিল, এ আন্দোলনকে বেগবান করেছিল, অপ্রতিরোধ্য করেছিল; যা শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম দিয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে এতসব দুর্লভ গুণের সমাবেশ ঘটেছিল বলেই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। বঙ্গবন্ধু একজন আকাশছোঁয়া স্বপ্নচারী, একজন রাজনৈতিক কবি, একজন অবিসংবাদিত নেতা। তিনি ছিলেন বাংলার হৃৎস্পন্দন। বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁর সমগ্র জীবনের কর্মের মধ্যেই ছড়িয়ে আছে এই অমর, অবিনশ্বর চেতনা। তিন যুগের অধিক সময়জুড়ে প্রবাহিত এই মহান মানুষটির বিপুল কর্মময় রাজনৈতিক জীবনে যে আচরণ চর্চিত হয়েছিল, তার মধ্যে ছড়িয়ে আছে হিরন্ময় দ্যুতি এবং মানবিক সব আচরণ বৈশিষ্ট্য। যা সত্যিই দুর্লভ। বঙ্গবন্ধুর চেতনা অমর, অবিনশ্বর; এর মৃত্যু নেই। বস্তুত বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নবনির্মাণ, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবোধ ও জাতীয়তাবাদ, বাঙালির নিজস্ব জাতি-রাষ্ট্র এবং আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অদ্বিতীয় ও সর্বব্যাপ্ত। বাঙালি জাতির রাজনৈতিক আদর্শ, অর্থনৈতিক মুক্তি, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার ঋদ্ধি- প্রতিটি ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন আজ আমাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ও প্রেরণা জোগাচ্ছে। চিরদিনই তিনি থাকবেন বাঙালি জাতির সকল কীর্তির ও প্রেরণার মর্মস্থলে। ইতিহাসের চাহিদা অনুযায়ী যে ব্যক্তি জনগণকে জাগিয়ে তুলতে পারেন এবং জাগ্রত জনগণের গণবাণীকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে পারেন- তিনিই হয়ে ওঠেন ইতিহাসের মহানায়ক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইতিহাসের মহানায়ক। পৃথিবীর বুকে যতদিন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকবে, বাংলা ভাষার অস্তিত্ব থাকবে, পদ্মা, মেঘনা, গৌরি, যমুনা, বহমান থাকবে; ততদিন এ দেশের মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব ও চিরঅমøান হয়ে থাকবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়