ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

আগের সংবাদ

অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লী : ঈদে দেড় হাজার কোটি টাকা বেচাকেনার লক্ষ্যমাত্রা

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলতাফ হোসেন মিন্টু, কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি : আসন্ন রোজার ঈদকে সামনে রেখে পাইকারি ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লী হিসেবে পরিচিত পূর্ব আগানগর ও পশ্চিম আগানগর এলাকার বিভিন্ন মার্কেটে। জমে উঠেছে বেচাবিক্রিও। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারাও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন ভিড় ২৫ রমজানের পরও থাকবে। এবার এ পল্লীর বিক্রি দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, এখানে জিন্স প্যান্ট, গ্যাবাডিন প্যান্ট, পাঞ্জাবি, শার্ট, গেঞ্জি, ফতুয়া, থ্রি পিস, বোরকা, বাচ্চাদের পোশাকসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোশাক। তবে জিন্স ও গ্যাবাডিন প্যান্টের জন্য সুপরিচিত কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লী। প্রতিটির প্যান্টের দাম ২০০ থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার তৈরি জিন্স প্যান্টের চাহিদা বেশি।
কেরানীগঞ্জের তৈরি জিন্স প্যান্ট ও পোশাক রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন বিপণি বিতান ও ফুটপাতগুলোতেও শোভা পায়। পূর্ব আগানগরের আলম মার্কেট, জিলা পরিষদ মার্কেট, চর কালীগঞ্জ মার্কেট, নুরু মার্কেট, পশ্চিম আগানগরের তানাকা মার্কেট, চাকলাদার মার্কেট, হান্নান মার্কেট, মিশু মার্কেট, সাদেক মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের পোশাকের চাহিদার ৭০ শতাংশই কেরানীগঞ্জ থেকে সরবরাহ করা হয়। এখানকার তৈরি পোশাকের মান ভালো ও দাম কম থাকায় প্রতিনিয়ত চাহিদাও বাড়ছে।
সারাবছরই ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এখানে পোশাক কিনতে আসে। তবে শবেবরাতের সময় থেকে ক্রেতাদের চাপ কয়েকগুন বেড়ে যায়। গত শনিবার দোহার থেকে পাইকারি পোশাক কিনতে আসেন মাহমুদ হাসান। দোহারে একটি মার্কেটে তার পোশাকের দোকান রয়েছে। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, কম বাজেটে ভালোমানের পাইকারি পোশাক কিনতে কেরানীগঞ্জই ভরসা। এখানকার পোশাকের গুনগতমান ভালো, দামও কম।
তবে কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লীতে ঠিক কতোগুলো দোকান ও কারখানা আছে তার নির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই দোকান মালিক ও গার্মেন্টস সমবায় সমিতির নিকট। শোরুম আর কারখানা সংখ্যা কত সেই বিষয়েও কোনো তথ্য নেই সমিতির কাছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে প্রায় ৫ হাজার দোকান ও কারখানা ও শোরুম রয়েছে। অনেকে বলেন, এখানে দোকান, কারখানা ও শোরুমের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজারের কাছাকাছি। শোরুম ও কারখানা মিলিয়ে প্রায় আড়াই লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান তারা।
জেলা পরিষদ মার্কেটের বিসমিল্লাহ গার্মেন্টেসের মালিক কবির জানান, মোটামুটি বেচাকেনা আছে এ বছর। শবেবরাতের আগে থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছে। মফস্বলের পাইকাররাই বেশি আসছে। তানাকা মার্কেটের ব্যবসায়ী হাজী শওকত মোল্লা জানান, আমাদের ঈদের বেচাকেনা শবেবরাতের পর থেকেই শুরু হয়। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনা। খুচরা বাজারে বিক্রি ভালো হলে আমাদের পাইকারি বাজারেও বেচাকেনা ভালো হয়। গত বছরের চেয়ে এ বছর বেচাকেনা ভালো।
পশ্চিম আগানগর দোকান মালিক ও গার্মেন্টস সমবায় সমিতির সহসভাপতি আব্দুস সালাম জানান, বাজেট ও দামের মধ্যে ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায়। দেশজুড়ে এখানকার পোশাকের চাহিদা রয়েছে। গতবারের তুলনায় এবারের বেচাবিক্রি ভালো। আশা করি এবারের ‘সিজন’ ভালো যাবে। তিনি আরো বলেন, এখানে পাইকারদের নিরাপত্তাসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পূর্ব আগানগর দোকান মালিক ও গার্মেন্টস সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক মুসলিম ঢালী জানান, কেরানীগঞ্জের পোশাক পল্লীতে সুই থেকে শুরু করে প্যাকেট করার পলি সবই পাওয়া যায় হাতের নাগালে। তাই পোশাক তৈরির খরচ ও কম হয়। সেই সঙ্গে চীন ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা পোশাক ও এখানে বিক্রি করা হয়। ফলে এখানে তৈরি পোশাকের বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে। প্রায় তিন হাজারের বেশি শোরুম রয়েছে প্রতিটা ‘শোরুমে’ প্রতিদিন গড়ে দুই লাখ টাকা বেচাকেনা হলেও এবারের ঈদে বিক্রি প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়