মির্জাপুরে ডাকাতের হামলায় ট্রাকচালক নিহত

আগের সংবাদ

রোহিঙ্গা থেকে বাংলাদেশি : ত্রিশ হাজার টাকায় নাগরিকত্ব!

পরের সংবাদ

পাঠক ফোরামের তিন দশক পূর্তি উৎসব : অন্তরালের কিছু কথকতা…

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১৯৯৩ সালের মে মাস। রোপিত হলো ‘পাঠক ফোরাম’ নামক একটি চারা গাছের। যা নির্মল বন্ধুতাপিয়াসী কিছু পাঠক-লেখকের প্ল্যাটফর্ম। পরস্পরকে বন্ধুতার নির্মল বন্ধনে জড়িয়ে নিয়ে পথ চলেছে ভালোবাসা, মানবিকতা, বিশ্বস্ততা, সহমর্মিতাকে সাথী করে। সরাসরি না দেখে, না চিনেও শুধু কালো কালো হরফে ছাপা অক্ষরকে সাথী করে ভোরের কাগজের একটি পাতাকে প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে লকলক করে বেড়ে ওঠা ‘পাঠক ফোরাম’ নামক চারা গাছটি আজ মহিরুহে পরিণত হয়েছে। অসীম বন্ধুতা, নিশ্চিত নির্ভরতা নিয়ে হৃদয় থেকে হৃদয়ে ছুঁয়ে থাকা নির্মল, আলোকিত অমলিন বন্ধুত্ব এখন তিন দশকের মাইলফলক ছুঁয়েছে। এই মহাক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আয়োজন করা হলো পাঠক ফোরামের তিন দশক পূর্তি উৎসব। আমরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠলাম। সামস সাগর ভাই, দন্ত্যস সফিক, বোরহান ও সরফরাজকে নিয়ে মুকুল ভাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন কর্মযজ্ঞে। আমি, পলি চেষ্টা করলাম তাদের সারথি হতে।
শুরু হলো প্রস্তুতি। প্রস্তুতির একটা অপরিহার্য অংশ ছিল আমাদের তিন দশক পূর্তির মিলনমেলার খবরটি পাফোসদের জানানো। ফেসবুকে পোস্ট দিতেই পেয়ে গেলাম হারিয়ে যাওয়া অনেক পাফোস এবং ভোরের কাগজের এক সময়কার পাঠকদের। অনেকেই খোঁজখবর নিল, রেজিস্ট্রেশন করল এবং এলো মিলনমেলায়ও। এক ফাঁকে তাদেরই একজন আহসান বলল- ‘অনেক অনেক ধন্যবাদ দোস্ত তোকে। আমাকে আবার আগের ঠিকানায় ফেরত আনার জন্য।’
আনজুম রুহী আপু যখন ইনবক্সে বলেন, ‘আপু, আপনি থাকবেন তো? আপনি থাকলে আমিও যাব।’ এরপর তিন দশক পূর্তি উৎসবে এসে বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং ফিরে গিয়ে বলেন, ‘তোমাদের কথা খুব মনে পড়ছে, মনে হচ্ছে বোনের সঙ্গে দেখা করে ফিরছি।’
মাইনুল ভাই, মরিযাদ হারুন, কাজল, জলি জলন, সীমা সিদ্দিকী, শাম্মী, রুবায়েৎ প্রমুখকে যখন বলি, ‘আমরা সবাই চল্লিশোর্ধ্ব। কে কবে চলে যাই…। আবার কোনো প্রোগ্রাম পর্যন্ত নাও তো থাকতে পারি। চলে এসো মিলনমেলায়।’ সবাই কেমন যেন থমকে যায়, নস্টালজিক হয়। কেউ কেউ রেজিস্ট্রেশনও করে ফেলে প্রোগ্রামে আসা প্রায় অসম্ভব জেনেও। আবার কেউ কেউ জীবনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে ছটফট করতে করতে বিষণ্নতায় ডুবে যায় না আসতে পারার বেদনায়।
৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪। ভালোবাসাময় অবিস্মরণীয় একটি দিন হয়ে স্মৃতির মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিল ভোরের কাগজ পাঠক ফোরামের তিন দশক পূর্তি উৎসবটি। দন্ত্যস স\িফক, বোরহান, সরফরাজ আর মুকুল ভাইয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা পেলাম আনন্দমুখর দিনটি। তিন দশক ধরে পাঠক ফোরামের আবাসভূমিতে জন্ম নেয়া পাফো বন্ধুদের কলকাকলীতে মুখরিত হলো সোশ্যাল গার্ডেন, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, কাকরাইল, ঢাকা।
ছোটখাটো দুই-একটা অসঙ্গতি বাদ দিলে অসাধারণ একটা দিন উপহার পেয়েছে সেদিন পাফোসরা। আবার একজনের চোখে যা অসঙ্গতি, অন্যজনের চোখে তা পারফেক্ট। যেমন- সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের শেষের দিকের মঞ্চ কাঁপানো ধামাকা গান আমাকে তেমন আপ্লুত করতে পারেনি। যেমন করেছিল প্রথম দিককার গানগুলো। অথচ আমার ১০ বছরের ছেলেই বলে বসল, তার ভালো লেগেছে। বাসায় ফিরে নানুকে জানিয়েছে, ‘আম্মুর পছন্দ হয়নি শেষের দিকের গান! কিন্তু আমার খুবই ভালো লেগেছে। গানের সঙ্গে নেচেছিও।’
অতএব কোনো ভুল বা অসঙ্গতি না খুঁজে আমরা এই মিলনমেলার আনন্দ সুধাই আকণ্ঠ পান করি।
অনেক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা, অদেখা মুখগুলোর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ। বন্ধুতা, পাফো এবং ভোরের কাগজের স্মৃতিকাতরতা, গান, হৈ-হল্লা, খাওয়া-দাওয়া, র‌্যাফেল ড্র এবং আড্ডায় জীবনের অন্যতম একটি স্মরণীয় দিন হয়ে স্মৃতির মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছে ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪। সবশেষে ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম তিন দশক পূর্তি উৎসবের আয়োজক, অংশগ্রহণকারী, দূরে থাকা শুভাকাক্সক্ষী এবং সামনে-পেছনে যারা ছিলেন- সবাইকে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা।
নাজলীন সুলতানা নীলা : ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়